২৬ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ১১:৪১:০৮ অপরাহ্ন


মহামারি প্রতিরোধে বৈশ্বিক সহযোগিতা কাঠামো গড়ুন
অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-০৯-২০২৩
মহামারি প্রতিরোধে বৈশ্বিক সহযোগিতা কাঠামো গড়ুন সংগৃহিত ছবি


বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে পাঁচটি প্রস্তাব তুলে ধরে মহামারি প্রতিরোধের অংশ হিসেবে একটি বৈশ্বিক সহযোগিতা কাঠামো গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গতকাল বুধবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সম্মেলনকক্ষে মহামারি প্রতিরোধ, প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়া (পিপিপিআর) বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি এ আহ্বান জানান।

এর আগে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আয়োজিত ভোজসভায় যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মহামারি প্রতিরোধে পাঁচটি অগ্রাধিকার বৈঠকে তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী।

 

পাঁচটির মধ্যে তিনটি অগ্রাধিকার হলো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার জন্য রেয়াতযোগ্য আন্তর্জাতিক অর্থায়ন, মহামারি নজরদারি, প্রতিরোধ, প্রস্তুতি ও বিজ্ঞানভিত্তিক পদ্ধতিতে মোকাবেলার জন্য সম্পদ ও দক্ষতা একত্র করা; সবার জন্য ভ্যাকসিনসহ মানসম্পন্ন, সাশ্রয়ী ও কার্যকর মহামারি পণ্যগুলোর ন্যায়সংগত ও অবাধ প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা। অন্য দুটি অগ্রাধিকার হলো—প্রযুক্তির প্রাপ্যতা ও বাস্তব জ্ঞানের মাধ্যমে মহামারি পণ্যগুলোর উৎপাদন বৈচিত্রকরণ এবং ডাব্লিউএইচওর নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যে প্রাপ্যতা ও সুবিধা ভাগ করে নেওয়ার জন্য একটি আন্তর্জাতিক সহযোগিতা কাঠামো তৈরি করা।

 

ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) থিমেটিক দূত সায়মা ওয়াজেদের উপস্থিতিতে সভায় শেখ হাসিনা ‘বাংলাদেশ কভিড-১৯-এর প্রভাবের বাইরে ছিল না’ উল্লেখ করে বলেন, ‘তবু আমরা কভিড-১৯ পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে একটি বৈশ্বিক সূচকে পঞ্চম স্থানে রয়েছি। শুরু থেকেই আমাদের জীবন বাঁচানো এবং জীবিকা রক্ষার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে হয়েছিল।

 

আর্থিক ব্যবস্থার পুনর্গঠন চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থা পুনর্গঠনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনের ফাঁকে একটি উচ্চ পর্যায়ের গোলটেবিল বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেন। ‘টুওয়ার্ডস এ ফেয়ার ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যানশিয়াল আর্কিটেকচার’ শীর্ষক এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে স্পেন ও ইউরোপীয় কাউন্সিল। 

প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাপী ক্রেডিট রেটিং সিস্টেম পর্যালোচনা করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, এটি বর্তমানে অনেক নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের জন্য তহবিলের সুবিধা সীমিত করেছে।

 

তিনি বলেন, ‘আমরা জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে একমত যে বৈশ্বিক ক্রেডিট রেটিং সিস্টেম অবশ্যই পর্যালোচনা করা উচিত। বর্তমান রেটিং সিস্টেম অনেক নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের জন্য তহবিলের সুবিধাকে আরো সীমাবদ্ধ করে দিয়েছে।’

 

শেখ হাসিনা বলেন, তাদের ভোটাধিকার, কোটা ও বহুপক্ষীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এমডিবিএস) এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানে (আইএফআইএস) প্রতিনিধিত্বের সীমা তাদের দর-কষাকষির ক্ষমতাকেও ক্ষুণ্ন করে।

তিনি বলেন, ‘আমরা প্রায়ই আন্তর্জাতিক পাবলিক ফিন্যান্সগুলোকে ব্যয়বহুল ও নাগালের বাইরে দেখতে পাই। ঋণের ঝামেলা এড়াতে আমরা উচ্চ সুদের ঋণ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করি।

 

বাংলাদেশ কখনোই তার ঋণ পরিশোধে খেলাপি হয়নি এবং আমরা সেই রেকর্ড বজায় রাখার আশা করি।’

 

এ লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী পাঁচ দফা প্রস্তাব পেশ করেন। অনুষ্ঠানে ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) থিমেটিক অ্যাম্বাসাডর সায়মা ওয়াজেদ ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনও উপস্থিত ছিলেন।

জো বাইডেনের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিউ ইয়র্কে আসা রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সম্মানে মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অব আর্ট-এ ভোজসভার আয়োজন করেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ভোজসভায় যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, ভোজসভায় প্রধানমন্ত্রীর কন্যা ও ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) থিমেটিক অ্যাম্বাসাডর সায়মা ওয়াজেদও উপস্থিত ছিলেন। ভোজসভায় প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।