জুমার দিনের একটি বিশেষত্ব হলো এই দিনে এমন কিছু মুহূর্ত রয়েছে, যখন আল্লাহর কাছে যে কোনো দোয়া কবুল হয়। সহিহ বুখারিতে বর্ণিত একটি হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন,
فِيهِ سَاعَةٌ لا يُوَافِقُهَا عَبْدٌ مُسْلِمٌ وَهُوَ يُصَلِّى يَسْأَلُ اللهَ شَيْئًا إِلا أَعْطَاهُ إِيَّاهُ
জুমার দিন এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে, কোনো মুসলিম বান্দা যদি এ সময় নামাজে দাঁড়িয়ে আল্লাহ্র কাছে কিছু চায়, তা হলে তিনি তাকে অবশ্যই তা দান করেন। (সহিহ বুখারি: ৯৩৫)
এ বিশেষ মুহূর্তটি কখন এ নিয়ে আলেমদের দুটি মত পাওয়া যায়:
১. অনেকের মতে, জুমার দিন দোয়া কবুলের সময় হলো, জুমার নামাজের সময় ইমামের বের হওয়া অর্থাৎ খুতবা শুরু করা থেকে নামাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত। এই মতের পক্ষে দলিল সহিহ মুসলিমের একটি বর্ণনা, আবু বুরদা ইবনে আবু মূসা আশআরী (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমাকে আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার পিতাকে জুমার দিনের বিশেষ মুহূর্তটি সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে কোনো হাদিস বর্ণনা করতে শুনেছ? আমি বললাম, হ্যাঁ, আমি তাঁকে বলতে শুনেছি যে, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন, সেই বিশেষ মুহূর্ত হলো ইমামের বসা থেকে সালাত শেষ করার মধ্যবর্তী সময়টুকু। (সহিহ মুসলিম: ১৮৪৮)
২. হজরত আবু হোরায়রা (রা.) আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.), ইমাম আহমদসহ (রহ.) বেশিরভাগ সাহাবি ও আলেমের মত হলো জুমার দিন দোয়া কবুলের বিশেষ সময় আসরের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত। দলিল রাসুল (সা.) থেকে বর্ণিত এই হাদিস,
اثْنَتَا عَشْرَةَ سَاعَةً لاَ يُوجَدُ فِيهَا عَبْدٌ مُسْلِمٌ يَسْأَلُ اللَّهَ شَيْئًا إِلاَّ آتَاهُ إِيَّاهُ فَالْتَمِسُوهَا آخِرَ سَاعَةٍ بَعْدَ الْعَصْرِ
জুমার দিনে এমন বারোটি মুহূর্ত রয়েছে, এমন কোনো মুসলিম বান্দা পাওয়া যাবে না, যে ওই মূহূর্তগুলোতে আল্লাহর কাছে কোনো কিছু চাইবে, কিন্তু তাকে তা দেওয়া হবে না। অতএব তোমরা ওই মূহূর্তগুলোকে আসরের পর শেষ সময়ে অনুসন্ধান করো। (সুনান আন নাসাঈ: ১৩৯২) এ ছাড়া আরও কিছু হাদিস ও আসার আছে এর পক্ষে।
ইবনু আবদিল বার (রহ.) বলেন, কেউ যদি উল্লিখিত দুটি সময়েই আল্লাহর কাছে দ্বীন ও দুনিয়ার কল্যাণের জন্য দোয়া করে, তাহলে সে আশাহত হবে না।
এরপরও যেহেতু ওই সময় সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে আমরা কিছু জানি না, তাই আমাদের উচিত জুমার সারাদিনই আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করতে থাকা। বিশেষ করে জুমার সময় ও আসরের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত সময়টুকুতে আল্লাহর কাছে দোয়া করা। যেহেতু এই দুটি সময়ের কথা কিছু হাদিসে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।