বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে উজান থেকে নেমে আসা ঢলে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিভিন্ন স্থানে নদী তীরে ভাঙন দেখা দিয়েছে। স্পারের গোড়ায় প্রায় ৩০ মিটার ধসে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
কামালপুর ইউনিয়নের ইছামারা এলাকায় ভয়াবহ ভাঙনে মুহূর্তের মধ্যে ৮০টি বসতবাড়ির জায়গা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ও মালামাল নদীতে ভেসে গেছে। উপজেলা প্রশাসন মাইকিং করে জনগণকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে বলে। এছাড়া ভেসে যাওয়া ঘরবাড়ি ও মালামাল উদ্ধার করা হচ্ছে।
ভাঙনের খবর পেয়ে সারিয়াকান্দি উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম মন্টু, ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সবুজ কুমার বসাক ও অন্যান্য কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
এছাড়া বুধবার রাতে উপজেলার হাটশেরপুর ইউনিয়নের হাসনাপাড়া ২নং স্পারের গোড়ায় প্রায় ৩০ মিটার ধসে নদীতে বিলীন হয়ে যায়। এতে ওই এলাকায় বসবাসকারীদের মাঝে আতঙ্কা দেখা দেয়। অনেকে রাতে ঘুমাতে পারেননি। স্পার ধসে গেলে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হবে। হাজারও মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়বে।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড ঠিকাদারের মাধ্যমে জরুরিভিত্তিতে রাতভর ও বৃহস্পতিবার দিনে সেখানে বালিভর্তি জিওব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা করে। এলাকার লোকজনও স্বেচ্ছাশ্রমে বালিভর্তি জিওব্যাগ ফেলার কাজে সহায়তা করেন। এতে স্পারটি রক্ষা পায়।
জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী স্পার পরিদর্শন করেছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির ও আবদুল মালেক জানান, হাসনাপাড়া স্পারটি বর্তমানে ঝুঁকিমুক্ত আছে। ইছামারা ভয়াবহ নদী ভাঙ্গন রোধে কাজ করা হচ্ছে।
অপরদিকে উজান থেকে আসা ঢলে পানি বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় সারিয়াকান্দির চরাঞ্চলের বোহাইল, কাজলা, কর্ণিবাড়ি ও চালুয়াবাড়ি চরে নিচু এলাকায় পানি ঢুকেছে। এছাড়া হাটশেরপুর, সদর, কুতুবপুর, চন্দনবাইশা, কামালপুর ইউনিয়নের ১২২ চরের বাড়িঘরে পানি উঠেছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি হওয়ায় ১৫ হেক্টর জমির গাইঞ্জা ধান, দুই হেক্টর বীজতলা ও এক হেক্টর সবজিখেত পানিতে তলিয়ে গেছে।
বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক জানান, পানি বৃদ্ধির ফলে যমুনা নদীর কামালপুর ও ইছামারা এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন ঠেকাতে তিন কিলোমিটার এলাকায় ঠিকাদারের মাধ্যমে বালুভর্তি জিওব্যাগ ডাম্পিং করা হচ্ছে। তিনি বলেন, কোনো কোনো এলাকায় স্বল্পমেয়াদি বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। তবে এতে জনগণের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।