বগুড়ার শিবগঞ্জে সাইদুল ইসলাম (৫২) নামে এক গরু ব্যবসায়ীকে মাথায় আঘাত ও গলায় রশির ফাঁস দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার মোকামতলা ইউনিয়নের মাঝপাড়া গ্রামে শ্বশুরবাড়ির পাশে কলাবাগান থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনার পর থেকে তার স্ত্রী পলাতক রয়েছে।
স্বজনদের ধারণা, জমি নিয়ে বিরোধে শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে হত্যা করেছে। গ্রামবাসী শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভায়রাকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে।
নিহত সাইদুল ইসলাম বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলা ইউনিয়নের চকপাড়ার উত্তরপাড়ার তবিবর রহমানের ছেলে। তিনি গরু ব্যবসা, ভাটা শ্রমিকসহ বিভিন্ন পেশার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
নিহতের ছোট ভাই স্বাধীন মিয়া জানান, প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর সাইদুল ইসলাম দুবছর আগে পার্শ্ববর্তী মাঝপাড়া গ্রামের মোতালেবের মেয়ে নিপা আক্তারকে বিয়ে করেন। বিয়ের ছয় মাস পর শ্বশুর একটি জমি বিক্রি করতে চাইলে সাইদুর সেটি কিনতে চান। তিনি জমির টাকাও পরিশোধ করেন। কিন্তু শ্বশুর মোতালেব আজ পর্যন্ত জমির দলিল করে দেননি।
এ নিয়ে শ্বশুরের সঙ্গে সাইদুরের মনোমালিন্য শুরু হয়। স্ত্রী নিপার সঙ্গেও সাইদুরের মাঝে মাঝে ঝগড়া হতো। বৃহস্পতিবার ওই জমির দলিল করে দেওয়ার কথা ছিল। এ ছাড়া নিপা খোরপোষ ও মোহরানার টাকা দাবি করে গত ১৩ আগস্ট লিগ্যাল এইডে অভিযোগ দেন।
অপর ভাই শাহিন মিয়া বলেন, বড় ভাই সাইদুর বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে কাউকে না জানিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। ফিরতে দেরি হওয়ায় মোবাইল ফোনে কয়েকবার কল দেওয়া হলেও তিনি ধরেননি। বৃহস্পতিবার সকালে মাঝপাড়া গ্রামে শ্বশুরবাড়ির পাশে কলাবাগানে ভাইয়ের লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়।
তাদের ধারণা, ওই জমি নিয়ে বিরোধে শ্বশুরবাড়ির লোকজন ডেকে নিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে ও মাথায় আঘাতে সাইদুরকে হত্যা করেছে। ঘটনার পর স্ত্রী নিপা আক্তার আত্মগোপন করেন।
এদিকে গ্রামবাসী হত্যায় জড়িত সন্দেহে শ্বশুর মোতালেব, শাশুড়ি তরুণা বেগম ও ভায়রা সুলতান মাহমুদকে আটক করে পুলিশে দেয়।
মোকামতলা পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে ইনচার্জ ইন্সপেক্টর আশিক মাহমুদ জানান, লাশ বগুড়া শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। আটক তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।