ইসলামে মদ, ক্ষতিকর বা নাপাক যে কোনো পানীয় হারাম। নবিজি সা. তার জীবনে কখনও মদ স্পর্শ করেননি। নবিজি ঠাণ্ডা ও স্বচ্ছ পানি পছন্দ করতেন। এ ছাড়া তার পছন্দের পানীয় ছিল মধু ও দুধ। দুধকে তিনি শ্রেষ্ঠ পানীয় ও খাবার বলতেন। আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, একদিন রাসুলের (সা.) সাথে আমি ও খালিদ ইবন ওয়ালিদ মায়মুনার (রা.) ঘরে গেলাম। তিনি আমাদের জন্য একটি দুধ ভর্তি পাত্র নিয়ে এলেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) দুধ পান করলেন ও আমাদের পান করালেন। তারপর বললেন, কাউকে আল্লাহ তা’আলা কোনো খাবার খাওয়ালে সে যেন বলে,
اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِيهِ وَأَطْعِمْنَا خَيْرًا مِنْهُ
হে আল্লাহ! তুমি বরকত দাও এতে আর এর চেয়েও ভাল কিছু আমাদের আহার করাও।
কিন্তু যাকে আল্লাহ তা’আলা দুধ পান করান সে যেন বলে,
اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِيهِ وَزِدْنَا مِنْهُ
হে আল্লাহ! আমাদের এতে বরকত দাও এবং তা আরো বেশি করে দাও।
খাদ্য ও পানীয় হিসেবে যথেষ্ট হতে পারে দুধ ছাড়া এমন আর কিছু নেই। (সুনান তিরমিজি: ৩৪৫৫)
যেভাবে পান করতেন নবিজি
নবিজি বেশিরভাগ সময় বসে পান করতেন। তবে অনেক সময় তিনি দাঁড়িয়েও পান করেছেন। সম্ভবত দাঁড়িয়ে পান করা যে বৈধ তা বোঝানোর জন্য। আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, আমি নবিজিকে (সা.) জমজমের পানি দিয়েছিলাম, তিনি দাঁড়িয়েই তা পান করেছেন। (শামায়েলে তিরমিজি)
আনাস ইবনে মালেক (রা.) বলেন, একবার নবি (সা.) তার মা উম্মে সুলায়মের (রা.) এর বাড়ি যান। সেখানে একটি মশক ঝোলানো ছিল। তিনি দাঁড়ানো অবস্থায়ই মশকটির মুখ থেকে পানি পান করেন। (শামায়েলে তিরমিজি)
নবিজি তাড়াহুড়া করে এক শ্বাসে অনেক বেশি পানি পান করতেন না। পানির পাত্রে নিঃশ্বাস ফেলতেন না। তিনি সাধারণত তিন ঢোকে পান করতেন। একবার পান করে বাইরে নিঃশ্বাস ফেলতেন, তারপর আবার পান করতেন, তারপর বাইরে নিঃশ্বাস ফেলে আবার পান করতেন। নবিজি পানির পাত্রে নিঃশ্বাস ফেলতে নিষেধ করে বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন পান কর, তখন পাত্রের মধ্যে নিঃশ্বাস ফেলো না। (সহিহ বুখারি: ১৫৮)
এ ছাড়া নবিজি যে কোনো খাবার বা পানীয় ডান হাতে খেতেন ও পান করতেন। কোনো কিছু খাওয়া বা পান করার আগে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রহিম’ পড়তেন।