২২ ডিসেম্বর ২০২৪, রবিবার, ১১:০৮:৫৬ পূর্বাহ্ন


একাদশে ভর্তির আবেদন শুরু, ক্লাস সেপ্টেম্বরে
অনলাইন ডেস্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ১০-০৮-২০২৩
একাদশে ভর্তির আবেদন শুরু, ক্লাস সেপ্টেম্বরে অনলাইনে ভর্তির আবেদন পূরণে ব্যস্ত শিক্ষার্থীরা। ফাইল ছবি


মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে চলতি ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন শুরু হয়েছে।

পূর্বনির্ধারিত দিন বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) সকাল থেকেই অনলাইনে ভর্তির আবেদন শুরু হয়।
 
এবারও একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিতে তিন ধাপে আবেদন করতে হবে। প্রথমধাপে ২০ আগস্ট পর্যন্ত আবেদনের সুযোগ পাবেন শিক্ষার্থীরা। প্রথম ধাপের ফল প্রকাশ করা হবে আগামী ৫ সেপ্টেম্বর। দ্বিতীয় ধাপে ১২-১৪ সেপ্টেম্বর এবং তৃতীয় ধাপে ২০-২১ সেপ্টেম্বর আবেদন করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে কলেজে ভর্তি শুরু হবে। আর ক্লাস শুরু হবে আগামী ৮ অক্টোবর।
 
অনলাইন নির্ধারিত ওয়েবসাইটে www.xiclassadmission.gov.bd প্রবেশ করে ভর্তির আবেদন করা যাবে।অনলাইন ছাড়াও সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ম্যানুয়ালি ভর্তির আবেদন নেয়া হবে না। এ সময়ের মধ্যে দুদিন অনলাইন আবেদন বন্ধ থাকবে। এর মধ্যে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস এবং ৬ সেপ্টেম্বর জন্মাষ্টমীর ছুটির জন্য অনলাইন সার্ভিস ও কল সেন্টার বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া প্রতিদিন রাত ১১টা থেকে ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত অনলাইন আবেদন বন্ধ থাকবে।
 
আবেদনের সুযোগ পাবেন যেসব শিক্ষার্থী
 
২০২১, ২০২২ ও ২০২৩ সালে দেশের যে কোনো শিক্ষা বোর্ড এবং উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসএসসি বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবে।
 
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্যান্য বছরে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরাও বোর্ডে ম্যানুয়ালি আবেদন করতে পারবে। বিদেশি কোনো বোর্ড বা প্রতিষ্ঠান থেকে সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা ঢাকা বোর্ডের মাধ্যমে তার সনদের মান নির্ধারণের পর ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবে।
 
একাদশে ভর্তির ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের মোট ৯৩ শতাংশ আসন সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে, যা মেধার ভিত্তিতে নির্বাচিত হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও তার অধীনের দফতর বা সংস্থায় কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ২ শতাংশ কোটা এবং মোট আসনের ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। এসব আসনে শিক্ষার্থী না থাকলে সেখানে মেধা কোটার মাধ্যমে ভর্তি করানো হবে।

যেভাবে হবে গ্রুপ নির্বাচন
 
বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা যে কোন গ্রুপে (বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায়) ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবে। মানবিক ও ব্যবসায় বিভাগের শিক্ষার্থীরা মানবিক ও ব্যবসায়- এই দুই গ্রুপের একটিতে আবেদন করতে পারবে। মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম কার্যকর হবে।
 
যে কোন গ্রুপ (বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায়) থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ও সঙ্গীত গ্রুপের যে কোন একটিতে আবেদন করতে পারবে।

মেধাক্রম নির্ধারণ
 
সমান জিপিএ প্রাপ্তদের ক্ষেত্রে মোট প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে মেধাক্রম নির্ধারণ করা হবে। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড, কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে গ্রেড পয়েন্ট ও প্রাপ্ত নম্বর সমতুল্য করে হিসাব করতে হবে। তাছাড়া বিভিন্ন বছরের গ্রেড পয়েন্ট ও প্রাপ্ত নম্বর সমতুল্য করে হিসাব করতে হবে।

বিজ্ঞান গ্রুপে ভর্তির ক্ষেত্রে সমান মোট নম্বর প্রাপ্তদের মেধাক্রম নির্ধারণের ক্ষেত্রে সাধারণ গণিত ও উচ্চতর গণিত বা জীববিজ্ঞানে প্রাপ্ত নম্বর বিবেচনায় আনতে হবে। যদি তারপরেও প্রার্থী বাছাইয়ে জটিলতা নিরসন না হয়, তবে পর্যায়ক্রমে ইংরেজি, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়নে প্রাপ্ত নম্বর বিবেচনায় আনতে হবে।

মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা গ্রুপের ক্ষেত্রে সমান মোট নম্বর বিষয়টি নিষ্পত্তির লক্ষ্যে পর্যায়ক্রমে ইংরেজি, গণিত ও বাংলা বিষয়ে প্রাপ্ত নম্বর বিবেচনায় আনতে হবে।
 
এক গ্রুপের প্রার্থী অন্য গ্রুপে ভর্তির ক্ষেত্রে জিপিএ একই হলে মোট প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে মেধাক্রম নির্ধারণ করা হবে। এক্ষেত্রে প্রার্থী বাছাইয়ে জটিলতা নিরসন না হলে পর্যায়ক্রমে ইংরেজি, গণিত ও বাংলা বিষয়ে প্রাপ্ত নম্বর বিবেচনায় আনতে হবে।

স্কুল ও কলেজ এবং সমমানের প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে নিজস্ব প্রতিষ্ঠান থেকে পাস করা শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত যোগ্যতা সাপেক্ষে স্ব স্ব বিভাগে (বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা) অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভর্তির সুযোগ পাবেন। প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব শিক্ষার্থীদের স্ব স্ব বিভাগে ভর্তি নিশ্চিত করেই কেবল অবশিষ্ট শূন্য আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে হবে।

কোন এলাকার ভর্তি ফি কত?
 
ঢাকা মেট্রোপলিটনের এমপিওভুক্ত কলেজে বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনে সর্বোচ্চ ভর্তি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ হাজার টাকা। ঢাকা ছাড়া অন্যান্য মেট্রোপলিটন এলাকায় বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনের কলেজে ভর্তির ফি হবে ৩ হাজার টাকা। জেলা পর্যায়ের কলেজে দুই ভার্সনের ভর্তির ফি ২ হাজার ও উপজেলা বা মফস্বল পর্যায়ের কলেজে দুই ভার্সনে ভর্তির ফি দেড় হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

ননএমপিও বা আংশিক এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে উন্নয়ন ফি, সেশন চার্জ ও ভর্তি ফি ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার কলেজের বাংলা ভার্সনের জন্য সাড়ে ৭ হাজার টাকা ও ইংরেজি ভার্সনের জন্য সাড়ে ৮ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
 
ঢাকা ছাড়া অন্যান্য মেট্রোপলিটন এলাকার ননএমপিও কলেজে বাংলা ভার্সনে ভর্তির জন্য ৫ হাজার টাকা ও ইংরেজি ভার্সনে ভর্তির জন্য ৬ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলা পর্যায়ের কলেজের বাংলা ভার্সনে ৩ হাজার টাকা ও ইংরেজি ভার্সনে ৪ হাজার টাকা ভর্তি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। আর উপজেলা বা মফস্বল পর্যায়ের কলেজে বাংলা ভার্সনে আড়াই হাজার টাকা ও ইংরেজি ভার্সনে ৩ হাজার টাকা ভর্তি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।

সরকারি কলেজগুলো সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ভর্তি ফি নিবে। দরিদ্র, মেধারী ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য কলেজগুলোকে ফি যতদূর সম্ভব মওকুফে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। শিক্ষা বোর্ড শিক্ষার্থীদের থেকে ভর্তির প্রাথমিক নিশ্চায়ন করার সময় ৩৩৫ টাকা ভর্তি ফি গ্রহণ করবে।
 
গত ৩০ এপ্রিল সারা দেশে একযোগে শুরু হওয়া এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় নিয়মিত ও অনিয়মিতসহ মোট ২০ লাখ ৭২ হাজার ১৬৩ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। গত ২৮ জুলাই প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, সব শিক্ষা বোর্ড মিলিয়ে পাস করেছে ১৬ লাখ ৪১ হাজার ১৪০ জন। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫৭৮ জন। সারা দেশের কলেজগুলোতে ২৫ লাখের বেশি আসন রয়েছে। সেই হিসাবে সাড়ে ৮ লাখেরও বেশি আসন খালি থাকবে।
 
এবার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৮০.৩৯ শতাংশ। এ ছাড়া ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৭৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ, যশোর বোর্ডে ৮৬ দশমিক ১৭ শতাংশ, সিলেটে ৭৬ দশমিক ০৬ শতাংশ, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ৮৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ, বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৯০ দশমিক ১৮, ময়মনসিংহ বোর্ডে পাসের হার ৮৫ দশমিক ৪৯, রাজশাহী বোর্ডে পাসের হার ৮৭ দশমিক ৮৯, কুমিল্লায় পাসের হার ৭৮.৪২, মাদ্রাসা বোর্ডে পাসের হার ৭৪ দশমিক ৭০ শতাংশ।
 
এ বছর ৩০ এপ্রিল এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়। ২৫ মে পরীক্ষা শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে কুমিল্লা, যশোর, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বোর্ডের ১৪ মে’র পরীক্ষা এবং সব বোর্ডের ১৫ মে’র পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছিল। পরে ১৪ মে’র পরীক্ষা ২৭ মে এবং ১৫ মে’র পরীক্ষা ২৮ মে অনুষ্ঠিত হয়।