বলিপাড়ায় একেবারেই ছিলেন বহিরাগত, কেরিয়ারের প্রথম ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান। তাও আবার বলিউডের এক তারকার পুত্রের বিপরীতে। অভিনয়ের জন্য প্রশংসাও কুড়িয়েছিলেন বহুল। নিজেকেআলোর রোশনাই থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে গিয়ে কি নিজেই ‘উধাও’ হয়ে গেলেন শাহের বাম্বা?
২০১৯ সালে ‘পল পল দিল কে পাস’ ছবির মাধ্যমেই অভিনয়ে হাতেখড়ি হয় শাহেরের। শুধু তাঁর একার নয়, এই ছবির হাত ধরে অভিনয়জগতে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন বলি অভিনেতা সানি দেওলের কনিষ্ঠ পুত্র কর্ণ দেওল।
‘পল পল দিল কে পাস’ ছবির পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন সানি নিজেই। কিন্তু ছবির নায়িকা খুঁজে পাচ্ছিলেন না তিনি। পুত্রের বিপরীতে নতুন মুখ খুঁজছিলেন সানি। অগত্যা নিজের পুরনো বান্ধবীর সঙ্গে যোগাযোগ করলেন সানি।
১৯৮৩ সালে ‘বেতাব’ ছবির মাধ্যমে বলিপাড়ায় অভিনয় শুরু করেছিলেন সানি। একই সময়ে সানির সঙ্গে কেরিয়ার শুরু করেন বলি অভিনেত্রী অমৃতা সিংহ। অমৃতার সঙ্গে কেরিয়ারে পথচলা শুরু করেছিলেন বলে তাঁর কাছেই প্রস্তাব নিয়ে যান সানি।
এক সাক্ষাৎকারে সানি জানান, তিনি চেয়েছিলেন তাঁর পুত্র এবং অমৃতার কন্যা সারা আলি খান একই ছবিতে অভিনয় করে তাঁদের কেরিয়ার শুরু করুক। সে প্রস্তাব অমৃতার কাছে রাখেন সানি। কিন্তু প্রথম সহ-অভিনেতার প্রস্তাব খারিজ করে দেন অমৃতা। এর কারণ অবশ্য জানাননি দুই তারকার কেউই।
বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা গিয়েছিল যে কেরিয়ারের শুরুতে সানি এবং অমৃতা সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। নিজের বিয়ের কথা অমৃতার কাছে নাকি গোপন করেছিলেন সানি। সেই সত্য প্রকাশ্যে আসায় সানির সঙ্গে সম্পর্কে ইতি টানেন অমৃতা।
বলিপাড়ার একাংশের দাবি, সানির সঙ্গে পুরনো সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার কারণেই আর অভিনেতার সঙ্গে পেশাগত দিক থেকেও জড়াতে চাননি অমৃতা। তাই বড় পর্দায় কর্ণের সঙ্গে সারার জুটি নিয়ে আপত্তি জানান অভিনেত্রী।
সারা প্রস্তাব খারিজ করলে আবার নতুন মুখের সন্ধান শুরু করেন সানি। তার পর অভিনেতার নজরে পড়েন শাহের। অডিশন দিয়ে সানির ছবিতে অভিনয়ের সুযোগও পেয়ে যান শাহের।
১৯৯৯ সালে হিমাচল প্রদেশের শিমলায় জন্ম শাহেরের। বাবা-মা এবং দিদিকে নিয়ে একসঙ্গে থাকতেন তিনি। পরে শিমলা ছেড়ে পরিবার-সহ মুম্বইয়ে চলে যান।
মুম্বই থেকে স্কুল-কলেজের পড়াশোনা শেষ করেন শাহের। পরিবারের কেউ ফিল্মজগতের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না বলে নিজেকে ‘বহিরাগত’ হিসাবে পরিচয় দিয়েছেন অভিনেত্রী।
‘পল পল দিল কে পাস’ ছবিতে অভিনয়ের পর আর বড় পর্দায় দেখা যায়নি শাহেরকে। তবে একাধিক ওয়েব সিরিজ়ে অভিনয় করেছেন তিনি।
বড় পর্দায় অভিনয়ের পর দু’বছর আর কোথাও দেখা যায়নি শাহেরকে। অভিনেত্রীর মতে, তিনি কাজের অভাবে যে কোনও ছবি বা ওয়েব সিরিজ়ে অভিনয় করতে রাজি নন। তিনি বলেন, ‘‘আমি ভাল চিত্রনাট্যের জন্য অপেক্ষা করি। কাজ কম হোক, তাতে আপত্তি নেই। থ্রিলার থেকে শুরু করে কমেডি, রোম্যান্টিক কত ছবির প্রস্তাব এসেছিল। সব প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছি।’’
২০২১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘দিল বেকারার’ নামে একটি ওয়েব সিরিজ়ে অভিনয় করতে দেখা যায় শাহেরকে। একই বছর ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পেয়েছিল ‘দ্য এম্পায়ার’ নামের ওয়েব সিরিজ়টি। এই সিরিজ়েও অভিনয় করেছিলেন শাহের।
অনুজা চৌহানের লেখা ‘দোস প্রাইসি ঠাকুর গার্লস’ বইয়ের ইপর ভিত্তি করে একই নামের একটি ওয়েব সিরিজ় নির্মাণের কথাবার্তা চলছিল। কানাঘুষো শোনা গিয়েছিল, ২০২২ সালে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে সিরিজ়টি মুক্তি পেতে চলেছে। কিন্তু পরে তা নিয়ে কোনও ঘোষণা করা হয়নি।
বর্তমানে অভিনয় না করলেও সমাজমাধ্যমে যথেষ্ট সক্রিয় শাহের। ইনস্টাগ্রামে তাঁর অনুরাগী সংখ্যাও নজর কাড়ার মতো। ইতিমধ্যে অনুরাগীর সংখ্যা আড়াই লক্ষের গণ্ডি পেরিয়ে গিয়েছে।
প্রচারে থাকতে চান না বলেই কি বলিপাড়া থেকে দূরত্ব তৈরি করে ফেলেছেন শাহের? নাকি বার বার কাজের সুযোগ হাতছাড়া করতে করতে এখন আর কাজই পাচ্ছেন না অভিনেত্রী? আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছুই জানাননি শাহের। সারার পরিবর্তে সানির ছবিতে কাজের সুযোগ পাওয়া অভিনেত্রী এখন শরীরচর্চা এবং জীবন পরিচর্যা নিয়েই ব্যস্ত।