পাকিস্তানি সাংবাদিক এবং চলচ্চিত্র সমালোচক উমেইর সান্ধু টুইটারে গিয়ে কুমন্তব্য করেছিলেন ভারতীয় অভিনেত্রী সেলিনা জেটলির নামে। সেই টুইটে লেখা হয়েছিল, সেলিনা একমাত্র অভিনেত্রী যিনি বলিউডের এক তারকা বাবা ও তাঁর ছেলের সঙ্গে ‘শুয়েছেন’। এই বাবা ছেলে আর কেউ নন, ফারদিন খান ও ফিরোজ খান। সেই সময়ই এর প্রতিবাদ করেছিলেন সেলিনা।
বর্তমানে ফের এই নিয়ে একটি পোস্ট করলেন তিনি। যাতে জানালেন অভিনেত্রী ওই পুরো বিষয়টি বিষয়টি বিদেশ মন্ত্রকের কাছে তুলে ধরেছিলেন। সেখান থেকে এবার পাকিস্তান হাই কমিশনের কাছে প্রতিক্রিয়াও চাওয়া হয়েছে।
চলতি বছরের শুরুতে উমাইর সান্ধু টুইটারে লেছেন, ‘সেলিনা জেটলি বলিউডের একমাত্র অভিনেত্রী যিনি বাবা (ফিরোজ খান) এবং ছেলে (ফারদিন খান) উভয়েরই শয্যাসঙ্গী।’ প্রসঙ্গত, ফরদিনের বিপরীতেই বলিউডে পা রাখেন সেলিনা। ২০০৩ সালে ফিরোজ খান প্রযোজিত জানশীন ছবিতে তিনি অভিনয় করেন ফরদিনের বিপরীতে।
সেইসময় এই টুইট নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সেলিনা লিখেছিলেন, তিনি আইনি ব্যবস্থা নেবেন। এবার সেই মামলার আপডেট দিয়ে বলিউডের এই অভিনেত্রী লিখলেন, ‘কয়েক মাস আগে নামে পাকিস্তানের এক স্বঘোষিত চলচ্চিত্র সমালোচক আমার নামে অভদ্র, অসত্য দাবি করেছিলেন টুইটে। যেখানে ফিরোজ খান ও ফরদিন খানের সঙ্গে আমার সম্পর্ক নিয়ে উলটোপালটা কথা বলা হয়েছিল। সঙ্গে তিনি তিনি অস্ট্রিয়াতেও আমার এবং আমার পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। আমাকে নিয়ে পাকিস্তানে বসে তাঁর করা হয়রানিকর মন্তব্য ও অসত্য দাবিতে আমার প্রতিক্রিয়া ভাইরাল হয়। তার আচরণে হতবাক হয় পাকিস্তানের নাগরিক-সহ আমার লক্ষ লক্ষ অনুরাগীরা।’
সেলিনা এরপর জানান, উমেইর সান্ধু নামে সেই ব্যক্তি সোশ্যাল মিডিয়াতে তাঁর নাম ক্রমাগত পরিবর্তন করেছিলেন। আর পাকিস্তানে লুকিয়ে থাকার কারণে আইনি কোনও পদক্ষেপও নিতে পারছিলেন না সেলিনা। তারপর বিষয়টি নিয়ে তিনি ভারতের জাতীয় মহিলা কমিশনের কাছে যান। তারপর তাদের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিদেশ মন্ত্রকের যুগ্ম সচিবকে সম্বোধন করে একটি চিঠি লেখা হয়েছে। এমনকী, মন্ত্রক চিঠির ইতিবাচক প্রতিক্রিয়াও দিয়েছে। জানিয়েছে, অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখেছে তাঁরা গোটা ঘটনা। এবং যার পরিপ্রেক্ষিতে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নয়াদিল্লিতে পাকিস্তান হাইকমিশনের কাছেও বিষয়টি উত্থাপন করা হয়েছে।
সেলিনা সব শেষে লেখেন তাঁর এই লড়াই শুধুই নিজের সম্মান বাঁচাতে নয়, বরং প্রয়াত ফিরোজ খানের প্রতি সম্মান থেকেও। যাকে তিনি পরামর্শদাতা ও অভিভাবক বলেই মনে করতেন।
সেলিনা নিজের স্বপক্ষে লেখেন, ‘আমার জন্য এই লড়াই কেবল নিজের চরিত্রের উপর দাগ পড়ার জন্য নয়। বরং, আমার সততা, আমার মাতৃত্ব, আমার পরিবার এবং সর্বোপরি আমার ঈশ্বরসম পিতা এবং আমার প্রিয় পরামর্শদাতা জনাব ফিরোজ খানের জন্যও এই লড়াই। যিনি এই পৃথিবীতে আর নেই, তাঁর নামেও আক্রমণ করা হয়েছিল এই ধরণের মন্তব্য করে। আমার কাছে ফিরোজ ছিলেন আমার পরামর্শদাতা, আমার বন্ধু, আমার পথপ্রদর্শক। আমাকে যে ভালোবাসা ও সম্মান দিয়েছেন কেরিয়ারে তার জন্য আমি চিরকৃতজ্ঞ ওঁর কাছে। সর্বোপরি আমি একজন ভারতীয় সেনার মেয়ে। এর শেষ দেখে ছাড়ব আমি জীবনের শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত লড়াই করে।’