গাড়ি ছিনতাই করতে গিয়ে অনায়াসে খুন করছে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্র। সম্প্রতি একজন ইজিবাইক (টমটম) চালক খুনের ঘটনা অনুসন্ধান করতে গিয়ে কক্সবাজারে এমন একটি সংঘবদ্ধ গাড়ি ছিনতাইকারী চক্রের সন্ধান পেয়েছে র্যাব-১৫। চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে তারা।
মঙ্গলবার (১ মার্চ) দুপুরে কক্সবাজার র্যাব-১৫ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন অধিনায়ক লে. কর্নেল খায়রুল ইসলাম সরকার।
র্যাব-১৫ অধিনায়ক জানান, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ভোরে রামুর খুনিয়াপালংয়ের পূর্ব ধেচুয়াপালং সড়কের পাশে অজ্ঞাত এক কিশোরের রক্তাক্ত মরদেহ মিলে। তার শরীরে বিভিন্ন ছুরিকাঘাতের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। ধারণা করা হয়, দুর্বৃত্তরা ওই কিশোরকে আঘাত করে সড়কের পাশে ফেলে রেখে যায়। কিন্তু নিহত কিশোরের পরিচয়, কে বা কারা এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছে তা তাৎক্ষণিক জানা সম্ভব হয়নি। পরে র্যাব-১৫ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতে নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহারসহ গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করতে থাকে।
নিহতের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর তার বাবা মো. জাহাঙ্গীর আলম বাদি হয়ে রামু থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করে। এ ঘটনায় জড়িত এক রোহিঙ্গাসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করে র্যাব-১৫।
আটককৃতরা হলেন: চকরিয়া বড়পুকুরিয়া এলাকার আক্তার হোসেনের ছেলে নুরুল ইসলাম (২০), লোহাগাড়া চুনতি এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে মো. আরিফ হোসেন (৩৬), উখিয়া কুতুপালং ক্যাম্প-২ এর বাসিন্দা আমির হামজার ছেলে মো. হোসেন (৩১) ও মহেশখালী কালারমারছড়া এলাকার আলী আহম্মদের ছেলে আবু হেনা হানিফ (৩৩)।
লে. কর্নেল খায়রুল ইসলাম আরও জানান, আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তারা একটি সংঘবদ্ধ আন্তঃজেলা ইজিবাইক ছিনতাই চক্র। আসামি নুরুল ইসলাম ও ভিকটিম (নিহত তরুণ) মো. ওয়ায়েজ একে অপরের বন্ধু। দুজনেই পেশায় ইজিবাইক চালক। গেল ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে নূরুল ইসলাম ও আবু হেনা হানিফ ভিকটিম মো. ওয়ায়েজের ইজিবাইকে করে সমিতিপাড়া থেকে মরিচ্যা যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা করে। এরপর রাত পৌনে ১১টার দিকে নুরুল ইসলাম ও আবু হেনা হানিফ মরিচ্যার খুনিয়াপালং এলাকায় রামু-মরিচ্যা রোডের পাশে ইজিবাইক দাঁড় করিয়ে চালক ওয়ায়েজকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ইজিবাইকটি ছিনতাই করার চেষ্টা করে। কিন্তু ওয়ায়েজ তাতে বাধা দেওয়ায় দুইজনে মিলে তাকে মারধর করে এবং ছুরিকাঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে জমিতে ফেলে পালিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, নুরুল ইসলাম আন্তঃজেলা ইজিবাইক ছিনতাই চক্রের মূলহোতা মো. আরিফ হোসেনের সঙ্গে ছিনতাইকৃত ইজিবাইকটি বিক্রি করার জন্য মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরামর্শ করে। এরপর নুরুল ইসলাম ও আবু হেনা হানিফ ছিনতাইকৃত ইজিবাইকটি অপর দুই আসামি মো. আরিফ হোসেন ও মো. হোসেন (রোহিঙ্গা) এর নিকট জমা দিয়ে চলে যায়। হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত আবু হেনা হানিফ অনুশোচনা করে নিজের ভুল স্বীকার করে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে উল্লেখ করেন র্যাবের এই কর্মকর্তা।
রাজশাহীর সময় /এএইচ