বিশ্বের অর্ধেক জনসংখ্যা মশাবাহিত ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) শুক্রবার এমন সতর্ক দিলো। ডাব্লিউএইচওর গ্রীষ্মমন্ডলীয় রোগের ইউনিট প্রধান রমন ভেলাউধন জেনেভায় জাতিসংঘের এক সংবাদ সম্মেলনে এ সতর্কবার্তা দেন।
তিনি বলেন, ২০০০-২০২২ সালের মধ্যে ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে আটগুণ বৃদ্ধি রেকর্ড করেছে ডাব্লিউএইচও। এ সময় আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ লাখ থেকে বেড়ে ৪২ লাখ হয়েছে। এ ছাড়া প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। কারণ সংস্থাটি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আরও বেশি সঠিক পরিসংখ্যান পেয়েছে। তিনি বলেন, ‘বিশ্ব জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক ডেঙ্গুর ঝুঁকিতে রয়েছে। ডেঙ্গু আনুমানিক ১২৯টি দেশকে প্রভাবিত করে। প্রতিদিন প্রায় ১০০ থেকে ৪০০ আক্রান্তের খবর নথিভুক্ত করা হয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
রমন ভেলাউধন আরও জানান, ডেঙ্গু একটি গুরুতর অসুস্থতা। যা সাধারণত মশার কামড়ের মাধ্যমে এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তিতে ছড়িয়ে পড়া একটি ভাইরাল সংক্রমণ। এটি ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে উপসর্গবিহীন। এর বিরুদ্ধে বর্তমানে বাজারে একমাত্র ভ্যাকসিন হলো সানোফি পাস্তুর ভ্যাকসিন।
প্রায় ২০টি দেশে এই ভ্যাকসিনটি ব্যবহারের জন্য নিবন্ধিত হয়েছে। এটি শুধুমাত্র সেসব লোকদের রক্ষা করে, যারা একবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। এর জন্য তাদের তিনটি ডোজ গ্রহণ করতে হবে।
এ বিশেষজ্ঞের মতে, ডেঙ্গু ভাইরাসের চারটি সংস্করণের (১, ২, ৩ ও ৪) বিরুদ্ধে এই ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা গড়ে প্রায় ৬৫ শতাংশ। তিনি জানান, ভ্যাকসিনটি ডেঙ্গু ১ ও ডেঙ্গু ৩-এর বিরুদ্ধে ৮০ শতাংশ এবং ডেঙ্গু ৪-এর বিরুদ্ধে প্রায় ৫০ শতাংশ কার্যকর। তবে ডেঙ্গু ২-এর বিরুদ্ধে এর কার্যকারিতা কম।
ডাব্লিউএইচওর এ কর্মকর্তা বলেন, ডেঙ্গুর বিভিন্ন সংস্করণের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিনের বিভিন্ন কার্যকারিতা একটি চ্যালেঞ্জ। ধারণা করা হয়, ডেঙ্গুতে প্রতি বছর ৪০ থেকে ৭০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। তবে অনেক দেশ আছে, যারা এখনো এসংক্রান্ত মৃত্যুর খবর সংস্থাটিকে জানায় না।
মৃত্যুর হার বেশিরভাগ দেশে প্রায় এক শতাংশেরও কম এবং আমরা এটি আরও কমানোর প্রত্যাশা করছি বলেও রমন ভেলাউধন জানান। সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি