গত মে মাসে শোনা গেছে শিনজিয়াং প্রদেশে মাটির নীচে গভীরতম গর্ত খুঁড়বে চিন (China Is Drilling)। সে গর্তের গভীরতা এমন হবে যা মাউন্ট এভারেস্টের উচ্চতাকেও হার মানাবে।ইতিমধ্যেই বর্তমানে সিচুয়ান প্রদেশে গর্ত খোঁড়ার কাজ শুরু হয়ে গেছে। সে গর্ত নাকি ১০ হাজার ৫০০ মিটার (৬.৫ মাইল) গভীর হবে (10k Metre Hole)।
চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, পৃথিবীর বুকে ৩২ হাজার ৮০৮ ফুট পরিধির গর্ত খুঁড়বে চিন। তার গভীরতা হবে ১০ হাজার মিটারের বেশি। পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টের উচ্চতা ৮ হাজার ৮৪৮ মিটার (২৯০৩০ ফুট)। চিনের গর্ত খোঁড়ার কাজ সম্পন্ন হলে তা হবে এভারেস্টের উচ্চতার চেয়েও গভীর।
পৃথিবীর বুক চিরে গর্ত খুঁড়ে সেখানে খনিজ তেল, প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎসের খোঁজ করবেন চিনা বিজ্ঞানীরা। এমনিতেও পৃথিবীতে প্রাকৃতিক শক্তির জোগান ফুরোচ্ছে। অপ্রচলিত শক্তির উৎপাদনে জোর দেওয়া হচ্ছে। চিন তাই কয়েক ধাপ এগিয়ে মাটির নীচে সুবিশাল গর্ত খুঁড়ে একেবারে সরাসরি প্রাকৃতিক শক্তির উৎসের খোঁজ করবে।
চিন যে গর্ত খুঁড়তে শুরু করেছে, তা অন্তত ১০টি মহাদেশীয় স্তর ভেদ করবে। মহাদেশীয় স্তর আসলে ভূত্বকের নানাবিধ পাথরের স্তর। চিনের এই গর্ত একে একে মহাদেশীয় স্তর ভেদ করতে করতে পৌঁছে যাবে ভূত্বকের একেবারে শেষ স্তরে। সেখানে প্রায় ১ কোটি ৪৫ লক্ষ বছরের পুরনো পাথর রয়েছে।
জুলে ভার্নের লেখা ‘জার্নি টু দ্য সেন্টার অব দ্য আর্থ’ উপন্যাসটির কথা মনে আছে তো! সেটা ছিল কল্পবিজ্ঞানের গল্প। চিন একেবারে বাস্তবেই পৃথিবীর অভ্যন্তরে গিয়ে গবেষণা করতে চাইছে। চিনা বিজ্ঞানীদের দাবি, প্রাকৃতিক সম্পদের খোঁজ যেমন হবে, তেমনই ভূমিকম্প-অগ্ন্যুৎপাতের মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধানের কাজও সহজ হবে। ভূ-অভ্যন্তরে গিয়ে ম্যান্টলের চরিত্র বোঝারও নাকি চেষ্টা করবেন চিনা বিজ্ঞানীরা। আপাতত খননকার্য চলছে। এভারেস্টের উচ্চতার চেয়েও বেশি গভীরে কতদিনে চিনা বিজ্ঞানীরা গিয়ে পৌঁছন সেটাই দেখার।