সংযুক্ত আরব আমিরশাহির কথা (UAE Law)। সেদেশে পুরুষরা সর্বসমক্ষে চিৎকার করে কথা বলতেই পারেন। তবে মহিলাদের সেই অধিকার নেই। প্রকাশ্যে গলা তুলে কথা বললে দেশের আইনে জেল হওয়ার বিধান রয়েছে তাঁদের। শুধু নাগরিকরাই নন, সেই একুশে আইন থেকে মুক্তি নেই মহিলা পর্যটকদেরও। সম্প্রতি তেমনটাই ঘটেছে দুবাইতে। প্রকাশ্যে চিৎকার করে কথা বলার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঘুরতে আসা এক তরুণীকে জেলে পাঠানো হয়েছে। মাসের পর মাস সেখানে জেলবন্দি হয়ে রয়েছেন তিনি (US woman jailed)।
এই পেশায় একজন ট্রাক-চালক। সেই সঙ্গে তিনি একজন সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েনসারও। সমাজমাধ্যমে নিয়মিত ট্রাক চালিয়ে তাঁর বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ানোর ঘটনা শেয়ার করেন তিনি। ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, টিকটক সহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ‘দ্য স্যাসি ট্রাকার’ (The Sassy Trucker) নামে হ্যান্ডেল রয়েছে তাঁর। টিকটকে তাঁর ফলোয়ারের সংখ্যা প্রায় দু’লক্ষের কাছাকাছি।
টিয়েরার মা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, গত মে মাসে এক বন্ধুর সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে ঘুরতে গিয়েছিলেন টিয়েরা। সেখানে ভাড়ার গাড়ি নিয়ে ঘুরছিলেন দুই বান্ধবী। কিন্তু দুবাইতে একদিন দুর্ঘটনার কবলে পড়ে তাঁদের গাড়ি। যেহেতু টিয়েরার বান্ধবী গাড়িটি চালাচ্ছিলেন, তাই প্রাথমিকভাবে তাঁকে আটক করে পুলিশ। গাড়িটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়।
যদিও এক সপ্তাহ পর ছেড়ে দেওয়া হয় তাঁকে। কিন্তু আসল ঝামেলা শুরু হয় এরপর। টিয়েরা যখন গাড়ি ভাড়ার সংস্থায় বাজেয়াপ্ত হওয়া পরিচয়পত্র, ক্রেডিট কার্ড এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত জিনিস সংগ্রহ করতে যান, তখন সেগুলি ছাড়ানোর জন্য বিশাল অঙ্কের টাকা চাওয়া হয় তাঁর কাছ থেকে।
সেই নিয়েই টিয়েরা এবং সংস্থার কর্মীদের মধ্যে বাদানুবাদ শুরু হয়। এক সময় নাকি সংস্থার একজন কর্মচারী অত্যন্ত উগ্রভাবে কথা বলতে শুরু করেন তরুণীর সঙ্গে। পাল্টা চিৎকার করতে শুরু করেন টিয়েরাও। এরপরেই প্রকাশ্যে চিৎকার করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় ২৯ বছরের টিয়েরাকে।
তাঁর মায়ের অভিযোগ, দুমাস কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত জেলবন্দি রয়েছেন তাঁর মেয়ে। এমনকী, দুবাই প্রশাসন টিয়েরার পাসপোর্টও আটকে রেখেছে বলে দাবি করেছেন তিনি। ‘শুধুই একটা অন্যায়ের বিরুদ্ধে গলা তুলেছিল বলে আজ জেলে পচছে আমার মেয়েটা!’ কাঁদতে কাঁদতে জানিয়েছেন টিয়েরার মা।