সেলিনা জেটলি তাঁর প্রয়াত ছেলে শমসেরের একটি ছবি শেয়ার করে নিলেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। গর্ভাবস্থার মাত্র ৩২ সপ্তাহে জন্ম হয়ে যায় তাঁর সন্তানের। কিন্তু বাঁচানো যায়নি সেই ছেলেকে। হৃদরোগের কারণে সেই ছেলেকে হারিয়েছিলেন অভিনেত্রী।
বুধবার ইনস্টাগ্রামে সেলিনা যে পোস্টটি শেয়ার করেছেন তাতে দেখা যাচ্ছে বুকের কাছে তিনি ধরে আছেন সদ্যজাত ছেলেকে। পাশে বসে সেলিনাকে জড়িয়ে ধরে আছে স্বামী পিটার হাগ। পরের ছবিটি এনআইসিইউর। একদম শেষ ছবিটি সেলিনার গোটা পরিবার একসঙ্গে হাসিমুখে ছবির জন্য পোজ দিয়েছে।
ছবিগুলি শেয়ার করে সেলিনা লেখেন, ‘আমাদের জীবনের এই পর্বের সঙ্গে মানিয়ে নিতে আমার পাঁচ বছর লেগে গিয়েছে। কিন্তু আমি অবশেষে সেই সময়ের কথা বলার মতো সাহস জোগাড় করে ফেলেছি আমি আর পিটার। যেহেতু আমাদের সন্তানের প্রিটার্ম জন্ম এবং শিশু হারানোর আঘাত মোকাবিলা করা সহজ ছিল না। তবে আমরা চাই আমাদের মতো মা-বাবারা জানুক তাদের সঙ্গেও এমনটা হতে পারে। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় আমরা দুজনেই নিশ্চিত করতে পারি যে প্রিমি বেবি বিশ্বাস এবং প্রার্থনার শক্তি এবং মানুষের লড়াই করার ক্ষমতা শিখিয়ে দিয়ে যায়। মনে রাখবেন বেশিরভাগ প্রিমি বেবিই কিন্তু বেঁচে যায় এবং সম্পূর্ণ স্বাভাবিক, সুস্থ জীবনযাপন করে।’
‘গর্ভাবস্থার ৩৭ সপ্তাহ সম্পূর্ণ হওয়ার আগে জীবিত জন্ম নেওয়া শিশুকে প্রিটার্ম বলে সংজ্ঞায়িত করা হয়। আমাদের দ্বিতীয় যমজ গর্ভাবস্থা তেতোমিষ্টি ছিল কারণ বেবি শামশেরের হৃদয় দূর্বল ছিল। (আমার বাবার হঠাৎ চলে যাওয়ার কারণে আমি ৩২ সপ্তাহে প্রসবের মধ্যে চলে গিয়েছিলাম।) পিটার এবং আমার জন্য এটি খুব কঠিন সময় ছিল। কিন্তু এই ছবিতে আমরা লক্ষাধিক কান্নার পর হাসলাম। কিন্তু আমরা এর জন্য একটি মিষ্টি স্মৃতি ধরে রাখতে হাসলাম, যে কিনা জন্মের পর ৩ মাস এনআইসিইউতে ছিল।
এনআইসিইউ-এর অভিজ্ঞতা সম্পর্কে সেলিনা লেখেন, ‘একটি অদ্ভুত এবং কঠিন পরিবেশ। আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে, ভাল দিন এবং খারাপ দিন উভয়ই থাকবে। তা মেনে নিয়েই আপনাকে চ্যালেঞ্জিং দিনগুলোর জন্য মনকে প্রস্তুত রাখতে হবে। সবার জন্য এটা অপশন নাও হতে পারে তবে আমি আর পিটার শামসেরকে হারানোর পর কয়েক মাসের জন্য দুবাইয়ের সেই হাসপাতালে চলে আসি যেখানে আর্থার ছিল। হতাশা, তীব্র দুঃখ, চিন্তা, অপরাধবোধ, ক্রোধ, ভালবাসার অনুভূতি-সহ নানা আবেগ সেই সময় আমাদের মনে ঘোরাফেরা করত। খুব কঠিন ছিল দিনগুলো।’
ফিরোজ খান এবং ফারদিন খানের ‘জানশীন’ দিয়ে আত্মপ্রকাশ করার পরে , সেলিনা ‘আপনা স্বপ্ন মানি মানি’, ‘গোলমাল রিটার্নস’ এবং ‘নো এন্ট্রি’র মতো ছবিতে কাজ করেছেন।