রাশিয়াকে রুখতে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে বিতর্কিত ও নিষিদ্ধ ক্লাস্টার বোমা দেয়ার যে পরিকল্পনা করেছে, তার বিরোধিতা করলো জার্মানি। শত্রুর লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার পাশাপাশি বেসামরিক লোকজনের প্রাণনাশের কথা বিবেচনা করে জার্মানি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে শলজ প্রশাসন।
ক্লাস্টার বোমার মূল উৎপাদনকারী দেশ জার্মানি। এবার সেই অস্ত্র দিয়েই রুশ সেনাদের ঘায়েল করার যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনায় পানি ঢেলে দিয়েছে জার্মান সরকার। শলজ প্রশাসন জানায়, ইউক্রেনকে পশ্চিমারা নানা রকম বিধ্বংসী অস্ত্র সরবরাহ করলেও ক্লাস্টার বোমা দেয়াটা হবে ন্যাটোর সদস্য দেশগুলোর কৌশলগত ভুল।
বেসামরিক নাগরিকদের জানমালের কথা চিন্তা করে যুদ্ধরত দেশগুলোতে ক্লাস্টার বোমা নিক্ষেপ বা বিস্ফোরণ না ঘটানোর চুক্তিতে জার্মানি থাকলেও তালিকায় নেই যুক্তরাষ্ট্রের নাম। তাই ইউক্রেনকে এ বোমা দিতে বাধা নেই বলে মনে করেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
জার্মান চ্যান্সেলর ওলফ শলজ অবশ্য বিষয়টি থেকে দূরত্ব তৈরির কৌশল নিয়েছেন। স্থানীয় সময় বুধবার (১২ জুলাই) বার্লিনে অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে বৈঠকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি। যদিও অস্ট্রেলিয়া ক্লাস্টার বোমার পক্ষে কথা বলেছে।
জার্মানি যে অবস্থান নিতে চলেছে তা হলো, অ্যামেরিকা একটি সার্বভৌম দেশ। ইউক্রেনকে ব্যক্তিগতভাবে তারা এ বোমা দিতে চাচ্ছে। জার্মানি এ বোমা দেয়াটা সমর্থন করে না ঠিকই; কিন্তু তারা নিষেধ করার জায়গাতেও নেই।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ইউক্রেনকে কী ধরনের অস্ত্র দেয়া হবে, তা নিয়েও রীতিমতো সমস্যায় পড়েছিল জার্মানি। প্রাথমিকভাবে জার্মানির অভিমত ছিল, কেবলমাত্র রক্ষণাত্মক অস্ত্রই দেয়া হোক ইউক্রেনকে। পরে অবশ্য তারা আক্রমণাত্মক অস্ত্রও দিয়েছে। এবার ক্লাস্টার বোমা নিয়ে সেই একই সমস্যায় পড়েছে জার্মানি।
যুক্তরাষ্ট্রসহ জার্মানি ও ন্যাটোভুক্ত অন্যান্য দেশ থেকে অস্ত্রের সরবরাহ কমে আসায় এক সঙ্গে অনেক শত্রুকে ঘায়েল করতে সক্ষম এ ক্লাস্টার বোমার বিষয়ে বেশ আগ্রহ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির।
সম্প্রতি ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের মতো জার্মানিও নতুন করে ৭০০ মিলিয়ন ইউরো মূল্যের অস্ত্র সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তবে তা কবে নাগাদ ইউক্রেনে পৌঁছাবে তা অনিশ্চিত। যদিও সেই প্যাকেজে ক্লাস্টার বোমার বিষয়টি উল্লেখ নেই।