ভোটের দিনই তুলকালাম বাংলাজুড়ে। গোটা রাজ্যে নিহত ১৮। বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট পড়ল ৬৬.২৮ শতাংশ। ভোটের সন্ত্রাসের দায় কার? কমিশনারের নিশানায় কেন্দ্রীয় বাহিনী ৷ দিনভর বুথে ঢুকে চলল অবাধে ছাপ্পা ভোট! পুড়িয়ে দেওয়া হল ব্যালট বাক্স কোথাও আবার পুকুরের জলে ভাসছে ব্যালট পেপার। সবমিলিয়ে গণতন্ত্র প্রহসনে পৌঁছল রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোট ২০২৩ -এ।
ভোটের দিন সাতসকালে পুলিশ সেজে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে তৃণমূল কর্মীকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ। ঘটনাটি ঘটেছে খড়গ্রাম থানার রতনপুর নলদীপ গ্রামে। মৃতের নাম সতোরুদ্দিন সেখ (৫২)। অভিযোগ বাম কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশ বাহিনী এসে মৃতদের উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। এলাকায় মোতায়েন বিশাল পুলিশ বাহিনী। আতঙ্কে গ্রামবাসীরা। মৃতের আত্মীয় কিসমত সেখ বলেন, কংগ্রেস আর সিপিআইএম লোকরা পুলিশ সেজে বাড়িতে ঢুকে সতোরুদ্দিনকে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করেছে। আমরা এর বিচার চাই। আমরা চাই পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করুক।
লিয়াকত সেখ(৬২) নামে আরও একজনের মৃত্যু হল মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে। নওদা থানার গঙ্গাধারী রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সামনে চায়ের দোকানে বসে ছিলেন, সেইসময় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বোমা মারে বলে অভিযোগ। গুরুতর আহত অবস্থায় মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে আসা হয়। অস্ত্রপচারের কিছুক্ষন পরেই মারা যান। কংগ্রেসের সক্রিয় কর্মী বলে পরিবারের দাবি। শোকের ছায়া পরিবারজুড়ে। মৃত্যুর খবর পেয়ে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে ছুটে আসেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। অধীর চৌধুরী বলেন, বুথ লুঠ করতেই একজন বয়স্ক মানুষকে এইভাবে খুন করা হল। আহত আর মৃত্যুর তালিকা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে আমি বলব ভোটের নামে এত সন্ত্রাস এত রক্ত ছড়ানোর কি প্রয়োজন ছিল।
ভোট শুরুর আগেই তৃণমূল প্রার্থীর শ্বশুরের মৃত্যু হল বোমা বিস্ফোরনে। ঘটনাটি রেজিনগর থানার নাজিরপুর এলাকায়। মৃতের নাম ইয়াসিন সেখ(৫২)। গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রার্থী কবিতা বিবির শ্বশুর। বোমা বিস্ফোরনে মৃত্যুহয়েছে বলে জানা যায়। লালগোলা থানার ময়া ছাইতনী এলাকায় ভোট দিতে যাওয়ার সময় এক সিপিআইএম কর্মীকে বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। মৃতের নাম রওশন আলি(৪৩)। তড়িঘড়ি উদ্ধার করে মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষনা করেন। পুলিশের সামনেই এই ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ। ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা এলাকায়। মোতায়েন রয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। মৃতের ভাইপো রাজিবুল ইসলাম বলেন, আমার কাকা সকালে ভোট দিতে যাচ্ছিল তখনই তৃণমুল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা কাকার উপর চড়াও হয় ও বাঁশ দিয়ে পিটাতে শুরু করে। ভোটের আগের দিন রাতেই তৃণমূল কর্মী খুন হয়৷ বেলডাঙ্গা থানার কাপাসডাঙ্গায় তৃণমূল কর্মী বাবর আলি(৪২)কে খুন করে দুষ্কৃতীরা। একটি চায়ের দোকানে বসে ছিল সেইসময় দুষ্কৃতীরা এসে ফুলচাঁন সেখ ও বাবর আলিকে মারধর ও কোপায় বলে অভিযোগ। গুরুতর আহত অবস্থায় দুজনকে মেডিক্যালে ভর্তি করা হলে বাবর আলি মারা যান। অন্যদিকে কুলতলিতেও এক ব্যক্তির মৃত্যু ঘটে। জানা যায় বুথ কেন্দ্রে মারপিটের জেরেই মৃত্যু হয় ব্যক্তির। এখনও মৃত ব্যক্তির পরিচয় পাওয়া যায়নি!