শুক্রবার জঙ্গিদের গুলি যুদ্ধে প্রাণ গেল এক কিশোর ছাত্রের। এর আগে বৃহস্পতিবার জঙ্গিদের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন এক শিক্ষিকা।
শুক্রবারের ঘটনাটি ঘটেছে বিষ্ণুপুর জেলার ফৌবাকচাউ এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, শুক্সরবার সকালে ওই এলাকায় ভোরের আলো ফোটার পর পরই জঙ্গিরা এলোপাথাড়ি গুলি ছুঁড়তে শুরু করে। ওই ছাত্র নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে যাওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হয়। এই ঘটনার পর এলাকার মহিলারা দীর্ঘ সময় মইরঙ যাওয়ার রাস্তা আটকে বিক্ষোভ দেখান।
বৃহস্পতিবার শিক্ষিকাকে স্কুলের দুয়ারে খুনের ঘটনাটি ঘটে পশ্চিম ইম্ফলে। শিশুনিষ্ঠ নিকেতন নামে স্কুলটির ঠিক বাইরে কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করা হয় শিক্ষিকাকে।
ঘটনাচক্রে প্রায় দু মাস বন্ধ থাকার পর গত বুধবার মণিপুরে স্কুল খুলেছে। পরের দুদিনে শিক্ষিকা ও ছাত্রী খুনের ঘটনা ঘটল। আপাতত ক্লাস এইট পর্যন্ত পঠনপাঠন চালু করার নির্দেশ দেয় সরকার। উপদ্রুত এলাকার ৯৬টি স্কুল বাদে বাকিগুলিতে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত আপাতত ক্লাস শুরু করা হয়।
জাতিদাঙ্গার জেরে বিগত দু’মাস ধরে সাধারণ জনজীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছে। আইন-শৃঙ্খলার অবনতির পাশাপাশি যানবাহন সমস্যার কারণে স্কুল-সহ সব ধরনের শিক্ষাঙ্গন সরকার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এখনও না খোলা ৯৬টি স্কুল চালু হওয়া অনিশ্চিত।
এরই মধ্যে শিক্ষিকা এবং ছাত্র নিহত হওয়ার ঘটনায় আশঙ্কা ক্রমশ জোরদার হচ্ছে পাহাড়ি রাজ্যটি কি ক্রমশ গৃহযুদ্ধের দিকে এগোচ্ছে। নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের অনেকেরই এমন আশঙ্কার আরও একটি কারণ হল, ইম্ফল উপত্যকা এবং পার্বত্য মণিপুর জুড়ে শত শত বাংকার তৈরি হয়েছে। পুলিশ ও যৌথ বাহিনী সেগুলি ভেঙে দিলেও নতুন করে তৈরি করা হচ্ছে। সেখান থেকে জঙ্গিরা আশপাশের এলাকায় গিয়ে হামলা চালাচ্ছে।
এছাড়া যৌথ বাহিনীর অপারেশনের মুখে মহিলারা রাস্তা আটকে দাঁড়াচ্ছে। হামলাকারীরা অভিযান চালিয়ে এসে এলাকাতেই নিশ্চিন্তে থাকছে। ফলে হিংসায় লাগাম দেওয়া যাচ্ছে না।
বৃহস্পতিবার শিক্ষিকা খুনের ঘটনার পরই নতুন করে আতঙ্ক ছড়ায়। শিক্ষিকা খুনের ঘটনার পরই শিক্ষা মহল আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল, এই হত্যাকাণ্ড নতুন করে শিক্ষায় বিঘ্ন ঘটাবে। অনেকেই ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে ভরসা করবে না। শুক্রবারের ছাত্র খুনের ঘটনা সেই আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে দিল।
মণিপুরে এখন পর্যন্ত জাতি দাঙ্গায় ১২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। আহতের সংখ্যা অসংখ্য। ঘরছাড়া ৫০ হাজারের বেশি পরিবার।