২৫ নভেম্বর ২০২৪, সোমবার, ১০:৪০:৪৭ পূর্বাহ্ন


ঝালমুড়ি নিয়েই কলকাতা থেকে মুম্বাইয়ে ফিরলেন ভূমি পেডনেকর
তামান্না হাবিব নিশু
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৩-০৭-২০২৩
ঝালমুড়ি নিয়েই কলকাতা থেকে মুম্বাইয়ে ফিরলেন ভূমি পেডনেকর ছবি: সংগৃহীত


বলিউডে অভিনেত্রী হিসাবে তাঁর হাতেখড়ি আর পাঁচ জন নায়িকার মতো নয়। বলিউডের গতে বাঁধা রোম্যান্টিক ঘরানা থেকে সম্পূর্ণ আলাদা এক ধরনের ছবির মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ তাঁর। ছবির নাম ‘দম লাগা কে হাইশা’। প্রথম ছবির মাধ্যমেই দর্শকদের নজর কেড়েছিলেন ভূমি পেডনেকর। তত দিনে আয়ুষ্মান খুরানা বেশ জনপ্রিয় অভিনেতা। তাঁর বিপরীতে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করেছিলেন ভূমি। সেই শুরু। তার পরে ‘টয়লেট: এক প্রেম কথা’, ‘শুভ মঙ্গল সাবধান’, ‘শুভ মঙ্গল জ়াদা সাবধান’-এর মতো ছবিতে অভিনয় করেছেন ভূমি। প্রতিটি ছবিতেই কোনও না কোনও গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক বার্তা আছে। পাশাপাশি অভিনয় করেছেন ‘সোনচিড়িয়া’, ‘ভিড়’, ‘আফওয়া’র মতো রাজনৈতিক ভাবে সচেতন ছবিতেও। সম্প্রতি পর পর মুক্তি পেয়েছে অভিনেত্রীর দু’টি ছবি ‘ভিড়’ ও ‘আফওয়া’। তার পরেই কলকাতায় এলেন ভূমি। একটি বিজ্ঞাপনী ছবির কাজে। ব্যস্ত সময়সূচির মধ্যেও সময় বার করলেন বলিউড অভিনেত্রী।

শহরে এসেছেন শনিবার রাতে। রবিবার সকাল থেকেই টলিপাড়ার টেকনিশিয়ান্স স্টুডিয়োর শুটিং ফ্লোরে পাওয়া গেল ভূমিকে। শট দেওয়ার পর্ব শেষ হতেই দুপুরের খাবার ছেড়ে টেপ রেকর্ডারের সামনে ধরা দিলেন অভিনেত্রী। ওটিটি প্ল্যাটফর্মে সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে ‘আফওয়া’। প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাওয়ার পরে তেমন ভাবে সাড়া জাগাতে না পারলেও ওটিটি প্ল্যাটফর্মে জায়গা পেয়েই দর্শকের নজর কেড়েছে সুধীর মিশ্র পরিচালিত এই ছবি। এই ছবিতে অভিনয় করার অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন ভূমি। জানালেন, চলচ্চিত্র নিয়ে পড়াশোনা করতে গিয়ে সুধীর মিশ্রের ছবি দেখেছেন বহু বার। তার পর বাস্তবে তাঁর সঙ্গে কাজের সুযোগ পেয়ে কৃতজ্ঞ ভূমি। ‘ভিড়’-এর পরিচালক ছিলেন অনুভব সিন্‌হা। অন্য দিকে, ‘আফওয়া’-র অন্যতম প্রযোজকও তিনি। সে দিক থেকে অনুভবের সঙ্গে ভূমির দ্বিতীয় ছবি ‘আফওয়া’। বললেন, ‘‘অনুভবের সঙ্গে কাজ করা মানে দুরন্ত সব মাথার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পাওয়া। সবাই কত গভীরে গিয়ে ভাবনাচিন্তা করেন। সেই ধরনের মেধার সান্নিধ্যে কাজ করতে পারা আমার কাছে খুব বড় প্রাপ্তি।’’ বরাবরই অন্য ধরনের ছবি, অন্য ধরনের চরিত্রে কাজ করে এসেছেন ভূমি। ছকভাঙা এমন চরিত্র পেতে কখনও অসুবিধা হয়নি? ভূমির মতে, কেরিয়ারের প্রথম ছবিই তাঁর জন্য সেই রাস্তাটা তৈরি করে দিয়েছিল। অভিনেত্রী বললেন, ‘‘আমার প্রথম ছবি দেখেই সবার ধারণা তৈরি হয়েছিল যে, আমি একটু অন্য ধরনের কাজই করতে চাই। সৌভাগ্যক্রমে তার পর থেকে আমার কাছে সেই রকমের কাজের প্রস্তাবই এসেছে।’’

এই প্রথম কলকাতায় এলেন ভূমি। তা-ও ছবির প্রচারে নয়, শুটিংয়ের কাজে। কেমন অভিজ্ঞতা তাঁর? প্রশ্ন শেষ হতে না হতেই ভূমি বলে উঠলেন, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরে কলকাতায় আসার ইচ্ছা ছিল। এই শহর, এই রাজ্য থেকে বহু গুণী মানুষ উঠে এসেছেন। সিনেমা হোক বা সাহিত্য, সেরার সেরা শিল্পীরা সবাই এই বাংলার। আমি নিজে এক জন শিল্পী হিসাবে কলকাতা আসার জন্য মুখিয়ে ছিলাম।’’ মাত্র এক দিনের ঝটিকা সফর। তাই কলকাতা শহর ঘুরে দেখার বিশেষ সময় পাননি ভূমি। তাঁর বক্তব্যেও সেই আক্ষেপ ধরা পড়ল। বললেন, ‘‘আমি তো এখানে এসেই চুড়ি কিনতে বড়বাজারে যেতে চেয়েছিলাম! আমার পরিবারের তরফেও আমাকে একটা লম্বা ফর্দ ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে— ঝালমুড়ি, মিষ্টি... আরও কত কী!’’

চলতি মাসেই ৩৪-এ পা দিচ্ছেন ভূমি। বলিউডে অভিনেত্রী হিসাবে নিজের সফরকে কী ভাবে দেখেন তিনি? ভূমির কথায়, ‘‘আমি অভিনেত্রী হিসাবে যতটা না শিখেছি, তার থেকেও বেশি ঋদ্ধ হয়েছি এক জন মানুষ হিসাবে। আমি এখনও পর্যন্ত যে যে চরিত্রে অভিনয় করেছি, সব চরিত্রই আমাকে কোনও না কোনও ভাবে প্রভাবিত করেছে, ভাবিয়েছে। কিছু না কিছু শিখিয়েছে।’’ শুটে ফিরে যাওয়ার আগে ভূমি জানালেন, শুধুমাত্র পেশাগত পাওনা নয়, সিনেমার মাধ্যমে আগামী দিনে ব্যক্তিজীবনে আরও সমৃদ্ধ হতে চান তিনি।