১৮ মে ২০২৪, শনিবার, ১২:৫৫:০৭ অপরাহ্ন


নবিজি (সা.) যেভাবে স্বপ্নের ব্যাখ্যা দিতেন
ধর্ম ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৩-০৭-২০২৩
নবিজি (সা.) যেভাবে স্বপ্নের ব্যাখ্যা দিতেন ফাইল ফটো


ফজর নামাজের পর ভোরের স্নিগ্ধ সময়ে কখনও কখনও নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবিদের জিজ্ঞাসা করতেন- ‘গতরাতে কেউ কোনো স্বপ্ন দেখেছে কি না।’ তিনি তার ব্যাখ্যা বলে দেবেন। সাহাবায়ে কেরাম তাঁকে রাতে দেখা স্বপ্নের কথা জানাতেন। তিনি ব্যাখ্যা করে দিতেন। বলে দিতেন এর মাঝে কল্যাণকর কী আছে। এ রকমই একটি স্বপ্নের ব্যাখ্যা জানালেন তিনি-

স্বপ্ন

হজরত আবদুল্লাহ বিন সালাম রাদিয়াল্লাহু আনহু একদিন নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এ রকমই এক স্বপ্নের কথা জানান-

‘স্বপ্নে দেখলাম প্রকাণ্ড অদ্ভুত সুন্দর এক বাগানে আমি। মাঝখানে লোহার পিলার। মাটি থেকে সেটা আকাশ ছুঁয়েছে। পিলারের মাথায় একটা হাতল। শুনলাম, কেউ আমাকে পিলার বেয়ে উঠতে বলছে। আমি বললাম, ‘আমি পারব না।’ এক দাস এসে আমার জামার পেছনটা ওঠালো। আমি পিলার বেয়ে ওপরে ওঠে গেলাম। হাতলটা ধরলাম হাতের মধ্যে।’

স্বপ্নের ব্যাখ্যা

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জানালেন, ‘বাগানটা হলো ইসলাম। আর যে পিলারটা দেখেছ সেটা ইসলামের মূল স্তম্ভ। হাতলটা সবচেয়ে বড় সহায়। এর মানে হলো- আমৃত্যু তুমি ইসলামের ওপর থাকবে।’ সুবহানাল্লাহ!

কে এই আবদুল্লাহ বিন সালাম রা.?

হজরত আবদুল্লাহ বিন সালাম রাদিয়াল্লাহু আনহু ছিলেন মদিনার ইহুদি পণ্ডিত। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিজরত করে মদিনায় আসার কিছুদিন পর ইসলামের ছায়ায় নিজেকে প্রবেশ করান। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মৃত্যুর পরও তিনি ৩৫ বছর বেঁচে ছিলেন।

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মৃত্যুর পর নিজের চোখে দেখেছেন কত দল ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে গেছে। তাদের বিরুদ্ধে মুসলমানদের হয়ে তিনি লড়াই করেছেন। ইতিহাসে এই লড়াই ‘ধর্মত্যাগীদের সাথে লড়াই’ নামে পরিচিত।

ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ সেই সময়টাতে হজরত আবদুল্লাহ বিন সালাম রাদিয়াল্লাহু আনহু নিজেকে ইসলামের ছায়াতলে আগলে রেখেছিলেন। মৃত্যুবরণ করেছেন মুসলিম হিসেবে।

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বপ্নের যে ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন, তাতে ইঙ্গিত ছিল- ধর্মত্যাগের ভাঙনস্রোত একসময় ছাপিয়ে উঠবে। কিন্তু হজরত আবদুল্লাহ বিন সালাম রাদিয়ল্লাহু আনহু সেই স্রোতে বিলীন হবে না। এই স্বপ্নের ব্যাখ্যা ছিল নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুয়তের এক অনন্য নিদর্শন।