পৃথিবীর অন্যতম সেরা ও মহার্ঘ পর্যটন কেন্দ্র সাজানো-গোছানো, পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর দ্বীপরাষ্ট্র সিঙ্গাপুর। অথচ প্রদীপের নীচেই যেন অন্ধকার! ঝাঁ-চকচকে চেহারার আড়ালে কি চাপা কান্না ও যন্ত্রণার শব্দ? গত বছর, ২০২২-এ সিঙ্গাপুরে আত্মহত্যা করেছেন ৪৭৬ জন। যে সংখ্যা গত ২২ বছরে সর্বোচ্চ।
স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হিসেবে, গত বছর সিঙ্গাপুরে আত্মহত্যার ঘটনার সংখ্যা তার আগের বছরের তুলনায় লাফিয়ে ২৬ শতাংশ বেড়েছে। ২০২১-এ সংখ্যাটা ছিল ৩৭৮। বিশেষজ্ঞদের একাংশ ওই ঘটনাকে অভিহিত করছেন ‘অদেখা মানসিক যন্ত্রণা’র প্রতিফলন হিসেবে।
বিলাসবহুল ওই সিটি-স্টেটের এই উদ্বেগজনক তথ্য তাদের বার্ষিক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সামনে এনেছে আত্মহত্যার পথ থেকে মানুষকে সরিয়ে আনার চেষ্টায় কাজ করে যাওয়া সংস্থা, ‘সামারিটান্স অফ সিঙ্গাপুর’ (এসওএস)। তাদের বক্তব্য, ১০ বছর থেকে ২৯ বছর এবং ৭০ বছর থেকে ৭৯ বছর বয়সিদের মধ্যে আত্মহত্যার হার সব চেয়ে বেশি ভাবিয়ে তুলেছে।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই নিয়ে পরপর চার বছর আত্মহত্যাই প্রধান কারণ হয়ে থাকল ১০ থেকে ২৯ বছর বয়সিদের মৃত্যুর ক্ষেত্রে। তাদের মধ্যে ৩৩.৬ শতাংশের মৃত্যু হয়েছে আত্মহত্যার ফলে। ২০২১-এ ওই বয়সের ১১২ জন নিজেদের শেষ করেছিলেন।
২০২২-এ সংখ্যাটা ১১.৬ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১২৫। ৭০ থেকে ৭৯ বছরের মধ্যে যাঁদের বয়স, সে রকম ৩০ জন আত্মহত্যা করেছিলেন ২০২১-এ। গত বছর সেই সংখ্যাটা হয়েছে ৪৮, এ ক্ষেত্রে বৃদ্ধি ৬০ শতাংশ।
এসওএস-এর চিফ এগ্জ়িকিউটিভ গ্যাসপার ট্যানের বক্তব্য, ‘মানসিক স্বাস্থ্যের বিভিন্ন সমস্যা, সামাজিক চাপ ও আর্থিক অনিশ্চয়তার মতো বিষয় আত্মহত্যার জন্য দায়ী। আমরা এ সব মাথায় রেখেই কাজ করছি। যাদের মানসিক সাহায্য দরকার, তাদের সেটা আমরা দিচ্ছি আত্মহত্যার পথ থেকে সরিয়ে আনার জন্য।’ প্রবীণ মনরোগ বিশেষজ্ঞ জারেড এং বলছেন, ‘সিঙ্গাপুরে আত্মহত্যার ঘটনার এই অভূতপূর্ব সংখ্যাবৃদ্ধি অত্যন্ত হৃদয়বিদারক।’