২৪ নভেম্বর ২০২৪, রবিবার, ১০:৩৬:৩৮ অপরাহ্ন


কোরবানির পর আমল ও করণীয়
ধর্ম ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০২-০৭-২০২৩
কোরবানির পর আমল ও করণীয় ফাইল ফটো


জিলহজ মাসের প্রথম ১০-১২ দিনের মধ্যে হজ, ঈদুল আজহা, কোরবানির মতো মহান ইবাদত অনুষ্ঠিত হয়। এসব ইবাদতে মানুষ মহান আল্লাহর একত্ববাদের ঘোষণায় উজ্জীবিত থাকে। সময় অতিবাহিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের এ চেতনা কমতে থাকে। এ জন্য কোরবানি পরবর্তী সময়ে এ চেতনা ধরে রাখতে তাকবির, তালবিয়া, দোয়া ও জিকির-আজকের নিয়োজিত থাকা জরুরি।

হজ পালনকারীরা, কোরবানি দাতা ও সাধারণ মুসলিম তালবিয়া ও তাকবিরে তাশরিক পড়েন। ঈদুল আজহা ও কোরবানি শেষ হলেও এ ধারা অব্যাহত থাকা জরুরি। আর তাতে মানুষের মনে মহান রবের একত্ববাদের গুণগান চলতে থাকবে।

তাকবিরে তাশরিক পড়া

মুমিন মুসলমান ১৩ জিলহজ (এবার তা ২ জুলাই আসর) পর্যন্ত তাওহিদের এ ঘোষণা দিতে থাকে-

اَللهُ اَكْبَر اَللهُ اَكْبَر لَا اِلَهَ اِلَّا اللهُ وَ اَللهُ اَكْبَر اَللهُ اَكْبَر وَ للهِ الْحَمْد

উচ্চারণ : ’আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার; লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার; ওয়া লিল্লাহিল হামদ।’

অর্থ : ’আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান; আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান; সব প্রশংসা মহান আল্লাহ জন্য।’

জিকির-আজকার করা

৯ জিলহজ থেকে ১৩ জিলহজ আসর পর্যন্ত প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর একবার এ তাকবির পড়া মুমিন মুসলমানের ওপর ওয়াজিব বা আবশ্যক। তবে হাদিসে পাকে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিলহজ মাসে বেশি বেশি জিকির-আজকার করার তাগিদ দিয়েছেন। হাদিসে এসেছে-

‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, জিলহজ মাসের প্রথম দশকে তোমরা বেশি বেশি তাকবির (আল্লাহু আকবার), তাহলিল (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) ও তাহমিদ (আলহামদুলিল্লাহ) বলবে।’ (মুসনাদে আহমাদ)

তালবিয়া পড়া

হজে অংশগ্রহণকারীরা তালবিয়া পড়ে মহান রবের দরবারে উপস্থিত হওয়ার কথা জানাবেন। আপন মনে হজের তালবিয়া পড়বেন-

لَبَّيْكَ اَللّهُمَّ لَبَّيْكَ

لَبَّيْكَ لاَ شَرِيْكَ لَكَ لَبَّيْكَ

اِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ

لاَ شَرِيْكَ لَكَ

তালবিয়ার উচ্চারণ

> লাব্বাইকা আল্লা-হুম্মা লাব্বাইক,

> লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক,

> ইন্নাল হামদা ওয়ান্‌নিমাতা লাকা ওয়ালমুল্‌ক,

> লা শারিকা লাক।

তালবিয়ার অর্থ

> আমি হাজির, হে আল্লাহ! আমি উপস্থিত!

> আপনার ডাকে সাড়া দিতে আমি হাজির। আপনার কোনো অংশীদার নেই।

> নিঃসন্দেহে সব প্রশংসা ও সম্পদরাজি তথা নেয়ামত আপনার এবং একচ্ছত্র আধিপত্যও আপনার।

> আপনার কোনো অংশীদার নেই।

বেশি বেশি দোয়া পড়া

رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ

উচ্চারণ : রাব্বানা আতিনা ফিদ্‌দুনিয়া হাসানাতাও ওয়া ফিল আখেরাতি হাসানাতাও ওয়া ক্বিনা আজাবান নার।’

অর্থ : ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে দুনিয়াতে কল্যাণ দান কর এবং পরকালেও কল্যাণ দান কর। আর আমাদেরকে দোজখের যন্ত্রণাদায়ক আগুণ থেকে রক্ষা কর।’ (সুরা বাকারা: আয়াত ২০১)

জিলহজ মাস শুরু হওয়ার পর থেকে ইয়াওমে আরাফা (হজ), ঈদ ও কোরবানি শেষ হলেও চলতে থাকে তাকবিরে তাশরিক, জিকির-আজকার, তালবিয়া ও দোয়া। যা মুসলিম উম্মাহর ঈমান ও আমলে উজ্জীবিত হওয়ারই অংশ। যে যতবেশি এ আমলগুলো করবে, তার ঈমানি চেতনা ও মূল্যবোধে ততবেশি অগ্রসহর হবে।

মুমিন মুসলমানের উচিত, জিলহজ মাসের বাকি দিনগুলোও তাকবির, জিকির-আজকার, তালবিয়া ও দোয়া পড়ার মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে একত্ববাদের চেতনাকে আরও বেশি উজ্জীবিত রাখা। শিরক ও কুফরের সব চিহ্ন থেকে পরিচ্ছন্ন থাকা। ব্যক্তি পরিবার সমাজ তথা সর্বস্তরে শিরকমুক্ত চেতনায় তাকবির ও তালবিয়ার আমল বাস্তবায়নের মাধ্যমে নিজেদের উজ্জীবিত রাখা ঈমানের একান্ত দাবি।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জিলহজ মাসের এ দিনগুলোতে তাকবির-তালবিয়া পাঠের চেতনায় মজবুত ঈমানের অধিকারী হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।