সরকারি চাকুরিজীবীরা বিশেষ বেতন হিসেবে মূল বেতনের ৫ শতাংশ পাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে আহ্বান জানান।
রোববার সন্ধ্যায় প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থ বছরের বাজেটের ওপর সমাপনী আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়।
বাজেট বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপগুলো তুলে ধরে বলেন, ‘সরকারি কর্মচারী যারা আছেন তাদের বিশেষ বেতন হিসেবে মূল বেতনের ৫ শতাংশ এই আপতকালীন সময়ে প্রদানের বিষয়টি বিবেচনার করার জন্য অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ জানাচ্ছি। আশা করি, অর্থমন্ত্রী বিষয়টি গ্রহণ করবেন। আমরা ৫ শতাংশ মূল বেতন বিশেষ প্রণোদনা হিসেবে তাদের দেব।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সরকারি ব্যয়ের ওপর প্রভাব পড়েছে। বিশেষ করে জ্বালানি তেলের মূল্য অত্যধিক বেড়ে যাওয়ায় ভর্তুতিবাবদ বরাদ্দ ২০২২-২৩ অর্থ বছরে বাজেটে ১ দশমিক ৮৩ শতাংশ উর্নীত করতে হয়। সংশোধিত বাজেটে তা ২ দশমিক ২ শতাংশে উর্নীতি করতে হয়েছে।
তিনি বলেন,ভর্তুকি ব্যয় কমানোর জন্য ইতোমধ্যে জ্বালানির মূল্য সামঞ্জস্য করা হয়েছে। বিদ্যুতের দাম মূল্য সামঞ্জস্য করা হয়েছে। কাজেই এটা আমাদের করতেই হবে সময়ে সময়ে। জ্বালানিখাতে ফর্মুলাভিত্তিক ফর্মুলাভিত্তিক মূল্য সমন্বয় স্থায়ী পদ্ধতি নির্ধারণে পথনকশাও আমরা তৈরি করছি।
শেখ হাসিনা বলেন, বাজেট ঘাটতি ৫ শতাংশের মধ্যে সীমিত রাখা হয়েছে। এটা নিয়ে চিন্তার কোন কারণে নেই। আমাদের মোট ঋণ আন্তর্জাতিক টেকসই ঋণ ব্যবস্থাপনার মাপকাঠির বেশ নিচেই রয়েছে। অর্থনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিরাময়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংসারে নারীরা যে কাজ করেন এটা কিন্তু বিরাট কর্মক্ষেত্র। এটা কিন্তু হিসাবে নেয়া হয় না। এটা হিসাবে নেয়া হলে পুরুষের চেয়ে নারীরা অনেক অগ্রগামী হতো। সেটা বাদ রেখে হিসাব হয়েছে। অর্থমন্ত্রীকে বলবো আগামীতে যেন গৃহস্থালী কাজকেও হিসেবে নেন। কারণ সেখানেও কিন্তু নারীরা উৎপাদনমুখী কাজ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছুদিন আগে বিদ্যুতের একটা অভাব ছিলো। রাশিয়া-ইউত্রেন ও স্যাংশনের কারণে সারা বিশ্বব্যাপী প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়ে যায়। এমন কী কয়লা, এলএনজি বা তেল পাওয়াও যাচ্ছিল না। যাহোক সেটা থেকে আমরা মুক্ত হচ্ছি। সবাইকে এটাই বলবো বিদ্যুত উৎপাদনে যে খরচ সেটা তো সবাইকে দিতে হবে। এই ক্ষেত্রে আর কত ভর্তুকি আমরা দেবো। সেটাই আমাদের প্রশ্ন। কাজেই বিদ্যুত ব্যবহারে সবাই সাশ্রয়ী হবেন সেই আহ্বান জানাই।
তিনি বলেন, আমরা এখন স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন করবো। আমরা সেই কাজ শুরু করেছি। স্মার্ট বাংলাদেশের ৪টি স্তম্ভ চিহ্নিত করা হয়েছে তা হলো-স্মার্ট সিটিজেট, স্মার্ট সোসাইটি, স্মার্ট গর্ভমেন্ট ও স্মার্ট ইকোনমি। আমরা পরনির্ভরশীল থাকতে চাই না। আত্মনির্ভরশীল হতে চাই। আত্মমর্যাদাশীল হতে চাই। এজন্য রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে বলেও মনে করে শেখ হাসিনা।
বিদ্যমান কাস্টমস আইনকে আরও বেশি যুগোপযোগী করে নতুন আইন প্রণয়ন করা হয়েছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, কর বহির্ভুত রাজস্ব আদায়ের জন্য কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে।