১৮ মে ২০২৪, শনিবার, ০২:০৯:২৪ অপরাহ্ন


‘ইফরাদ’ হজের ১১ কাজ
ধর্ম ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৭-০৬-২০২৩
‘ইফরাদ’ হজের ১১ কাজ ছবি: সংগৃহীত


হজের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। আগামীকাল মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হবে হজ। সারাবিশ্ব থেকে মুসলিম উম্মাহ হজ পালনে মিনায় জড়ো হচ্ছে। হজ পালনকারীরা পুরোদমে হজের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বাইতুল্লাহর মুসাফির আল্লাহর মেহমানরা নিয়ত অনুযায়ী ইফরাদ, কিরান ও তামাত্তু হজ পালন করবেন। ইফরাদ হজ (ওমরা ছাড়া শুধু হজ) পালনে রয়েছে ১১টি কাজ। ইফরাদ হজের করণীয়গুলো ধারাবাহিক তুলে ধরা হলো-

ইফরাদ হজ

শুধুমাত্র হজ আদায়ই হলো ইফরাদ হজ। যারা ইফরাদ হজ করবে, তারা ওমরা করতে পারবে না। যারা এ হজ আদায় করেন তাদেরকে ‘মুফরিদ’ বলা হয়। সাধারণত বদিল হজকারীরাই ইফরাদ হজ করে থাকেন। আর ইফরাদ হজকারীর জন্য কুরবানিও দিতে হয় না। ইফরাদ, কিরান ও তামাত্তু; হাজিগণ যে হজই পালন করবেন, প্রত্যেক হজের ফরজ কাজগুলো একই।

১. ইহরাম বাঁধা (ফরজ): ইফরাদ হজ পালনে সরাসরি পবিত্র নগরী মক্কায় গেলে নিজ দেশ থেকেই ইহরাম বাঁধবে। ইফরাদ হজ আদায়কারীরা ইহরাম বাঁধার পর থেকে হজের সব কার্যক্রম সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত ইহরাম অবস্থায় থাকবেন।

২. তাওয়াফে কুদুম (সুন্নাত): ইফরাদ হজ আদায়কারীরা পবিত্র নগরী মক্কায় প্রবেশের পর আল্লাহর ঘর তাওয়াফ করাই হলো তাওয়াফে কুদুম। নামাজি ব্যক্তি যেভাবে মসজিদে গিয়ে ‘দুখুলিল মসজিদ’ নামাজ আদায় করেন, তেমনি ইফরাদ হজ আদায়কারীরা এ তাওয়াফ (তাওয়াফে কুদুম) করবেন। ইফরাদ হজ আদায়কারীরা যেহেতু ইহরাম অবস্থায় থাকবেন, তাই তাওয়াফে কুদুমে তারা ইজতিবা ও রমল করবেন।

৩. সাঈ (ওয়াজিব): হজের আগে (৮ জিলহজের) আগে সম্ভব হলে সাঈ করা। সম্ভব না হলে তাওয়াফে জিয়ারতের পর সাঈ আদায় করা।

হজের প্রস্তুতি: ৭ জিলহজ বাইতুল্লায় হজ সম্পর্কিত বয়ান শোনার পর ৮ জিলহজ দুপুরের আগেই মিনায় পৌঁছা। আর এ যাত্রাই হজের মূল প্রস্তুতি। কারণ, ৯ জিলহজ মিনা থেকে আরাফাতের ময়দানে গিয়ে অবস্থান করাই হলো হজ।

৪. মিনায় অবস্থান (সুন্নাত): ৮ জিলহজ মিনায় গিয়ে রাত যাপন করা (সুন্নাত)। আর মিনায় অবস্থানকালীন সময়ে জিলহজের ৮ তারিখ জোহর থেকে ৯ তারিখ ফজর পর্যন্ত ৫ ওয়াক্ত (জোহর, আসর, মাগরিব, ইশা ও ফজর) নামাজ পড়া (মুস্তাহাব)।

৫. আরাফাতের ময়দানে অবস্থান (ফরজ): হজের মূল রোকন হলো আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা। হাদিসে আরাফায় উপস্থিত হওয়াকেই হজ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

৬. মুজদালিফায় অবস্থান (ওয়াজিব): আরাফাতের ময়দান থেকে সূর্যাস্তের পর মুজদালিফায় গিয়ে ইশার সময় মাগরিব ও ইশা একসঙ্গে আদায় করা (সুন্নাত)। মুজদালিফায় খোলা আকাশের নিচে রাত যাপন করা সুন্নাত। আর ১০ জিলহজ ফজরের নামাজের পর সূর্য ওঠার আগে কিছু সময় অবস্থান করা ওয়াজিব।

মুজদালিফা থেকে কংকর সংগ্রহ : মুজদালিফায় অবস্থানকালীন সময়ে কংকর সংগ্রহ করা।

কংকর নিক্ষেপ (প্রথম দিন)

১০ জিলহজ মুজদালিফা থেকে মিনায় গিয়ে জামরাতে আকাবা বা বড় জামরাতে ৭টি কংকর নিক্ষেপ করা। এ কংকর নিক্ষেপ ওয়াজিব।

৭. মাথা মুণ্ডন করা (ওয়াজিব): ইফরাদ হজ পালনকারীর জন্য যেহেতু কুরবানি করতে হবে না ; তারা কংকর নিক্ষেপের পর বিশ্ব নবির আদর্শের অনুসরণে মাথা হলক বা ন্যাড়া করে নেবে। আর তা ওয়াজিজ।

৮. তাওয়াফে জিয়ারাত (ফরজ): হজের সর্বশেষ ফরজ কাজ হলো তাওয়াফে জিয়ারত। এ তাওয়াফে জিয়ারাত ১২ জিলহজ সুর্যাস্তের আগেই সম্পন্ন করতে হবে। ১২ তারিখ সুর্যাস্তের আগে এ তাওয়াফ করতে না পারলে, দম বা কুরবানি দিতে হবে।

৯. সাঈ (ওয়াজিব): তাওয়াফে কুদুমের সময় সাঈ করতে না করলে তাওয়াফে জিয়ারতের পর সাফা-মারওয়ায় সাঈ করা ওয়াজিব।

১০. কংকর নিক্ষেপ (ওয়াজিব): ১১ ও ১২ জিলহজ উভয় দিনই মিনায় অবস্থিত তিন জামরায় ৭টি করে ২১টি পাথর নিক্ষেপ করা (ওয়াজিব)। প্রথমে ছোট জামরায়, তারপর মধ্যম, অতপর বড় জামরায় কংকর নিক্ষেপ করা। সর্বক্ষেত্রে দুর্বল ও নারীদের জন্য রাতের বেলায় কংকর নিক্ষেপ করা উত্তম।

১১. বিদায়ী তাওয়াফ (ওয়াজিব): সব হজ যাত্রীদের জন্য বিদায়ী তাওয়াফ করা ওয়াজিব। তবে হজ শেষে বাইতুল্লায় যে কোনো নফল তাওয়াফই বিদায়ী তাওয়াফে পরিণত হয়ে যায়।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব ইফরাদ হজ আদায়কারীকে যথাযথভাবে হজ আদায়ের তাওফিক দান করুন। আমিন।