২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি হতে পারে। অন্তত ১৩০ কোটি মানুষ এ রোগে আক্রান্ত অবস্থায় থাকতে পারেন বলে চিকিৎসাবিজ্ঞান বিষয়ক সাময়িকী দ্য ল্যানসেটে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে বিশ্বে আনুমানিক ৫২ কোটি ৯০ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসে ভুগছেন। রোগটি মানুষের মৃত্যুর শীর্ষ ১০ কারণের একটি। এ ছাড়া ডায়াবেটিস বহু মানুষের শারীরিক সক্ষমতাও কেড়ে নেয়। এতে বলা হয়, আক্রান্তের ৯৫ শতাংশই টাইপ-২ ডায়াবেটিসে ভুগছেন। এ সংখ্যা আগামী তিন দশকে বেড়ে ১৩০ কোটি ছাড়াবে। ডায়াবেটিসে যাদের মৃত্যু হচ্ছে, তাদের অর্ধেকেরই ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বা তারা স্থূলতায় আক্রান্ত। অন্য কারণগুলোর মধ্যে আছে– খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম না করা, ধূমপান ও মদ্যপান।
ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞদের মতে, শারীরিক স্থূলতা বা অতিরিক্ত শারীরিক ওজন যাদের—ওজন না কমালে জীবনের কোনো না কোনো পর্যায়ে তাদের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। ইন্সটিটিউট অব হেলথ মেট্রিক্স ইভ্যালুয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ৩ দশকের মধ্যে বিশ্বজুড়ে টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীদের হার ৯৫ শতাংশ উন্নীত হবে।
ইন্সটিটিউট ফর হেলথ ম্যাট্রিক্স অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশনের শীর্ষ গবেষক এবং এই গবেষণা প্রবন্ধের প্রধান লেখক লিয়েন অং ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানকে এ সম্পর্কে জানান, নগরায়ন ও শিল্পায়নের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে মানুষের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাসের দ্রুত পরিবর্তন এবং শাকসবজি, ফলমূল ও সাধারণভাবে উৎপাদিত আমিষজাত খাদ্যের পরিবর্তে ক্রমশ প্রক্রিয়াজাত খাবারের ওপর বাড়তে থাকা নির্ভরশীলতাই আসন্ন এই সংকটের জন্য প্রধানত দায়ী।
দ্য ল্যানসেটের অন্য এক গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের মতো ধনী দেশেও সংখ্যালঘু তথা কৃষ্ণাঙ্গ, হিস্পানিক, এশীয়দের মধ্যে ডায়াবেটিসের হার দেড় গুণ বেশি। এ জন্য মেডিকেল কলেজ অব উইসকনসিনের গবেষক ‘ক্রমবর্ধমান ডায়াবেটিস বৈষম্য’কে দায়ী করেন।
এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, বর্ণবাদী নীতির কারণে একটি বিশেষ শ্রেণির মানুষ পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর খাবার ও স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত।