২৮ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১১:৩০:০৩ পূর্বাহ্ন


দেশকে কেউ আর পেছনে নিতে পারবে না
অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১২-০৬-২০২৩
দেশকে কেউ আর পেছনে নিতে পারবে না ফাইল ফটো


৫০ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ২০০৯ সাল থেকে একটি গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের শিশুদের মেধা বিকাশের সুযোগ দিলে বাংলাদেশকে আবার কেউ আর পেছনের দিকে নিয়ে যেতে পারবে না। গতকাল তার কার্যালয়ে অসচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে উপবৃত্তি, টিউশন ফি ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। খবর বাসসের। শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যদি ছেলে-মেয়েদের মেধা বিকাশের সুযোগ করে দিই, তাহলে কেউ এ দেশকে পেছনে ঠেলে দিতে পারবে না। সরকার গবেষণা ও উদ্ভাবন বাড়াতে উপবৃত্তি দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের শিশুরা খুবই মেধাবী এবং তাদের মেধা বিকাশে উপবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে যা আমাদের আর্থসামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল প্রতিভা অন্বেষণ মেধা বিকাশে একটি মহৎ উদ্যোগ, যেখান থেকে অনেক মেধাবী শিশু বের হয়ে আসছে। তিনি বলেন, আজ আমাদের শিশুরা তাদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পেয়েছে এবং এখন তাদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা প্রকাশ পাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, কেউ দেশকে পেছনে ঠেলে দিতে পারবে না, অন্ধকারে ফেলে দিতে পারবে না। শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে যে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব। এই বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতি এগিয়ে যাবে, আত্মমর্যাদা ও আত্মসম্মান নিয়ে বিশ্ব অঙ্গনে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। আমরা কারও কাছে মাথানত করব না। এটি আমাদের অঙ্গীকার। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব সময় এ কথা মনে রাখতে হবে যে এ জাতি বীরের জাতি। তারা কারও কাছে মাথানত করে না। তিনি বলেন, আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। আমরা পথ দেখিয়েছি। আমাদের মেধাবী শিশুরা এই পথেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। শেখ হাসিনা বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে এই দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলা হবে। এই দেশে থাকবে স্মার্ট জনগণ, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট অর্থনীতি এবং স্মার্ট সমাজ। আজকের যুগ বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও গবেষণার যুগ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে বলেন। কৃষি গবেষণায় বাংলাদেশ যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করেছে উল্লেখ করে তিনি এখন চিকিৎসা বিজ্ঞান গবেষণায় আরও গুরুত্ব দেওয়ার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, আমরা সব সেক্টরে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা চিকিৎসা বিজ্ঞান গবেষণায় গুরুত্ব দিচ্ছি। শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার গবেষণার ক্ষেত্র সম্প্রসারিত করেছে। সরকার সমুদ্রবিজ্ঞান গবেষণা এবং ব্লু ইকোনমিকে গুরুত্ব দিয়েছে। কারণ এটি ভবিষ্যতে দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর বক্তৃতার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি সত্যিই আশাবাদী এই দেশকে আর কেউ পিছিয়ে নিয়ে যেতে পারবে না। শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সেশনজট ও অস্ত্র সহিংসতা থেকে মুক্ত রাখতে সফলভাবে সক্ষম হয়েছে। ৬-৮ বছর ধরে সেশনজট ছিল এবং অতীতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়মিত অস্ত্রের ঝনঝনানি হতো। তিনি বলেন, আমরা অন্তত দাবি করতে পারি যে ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে ক্যাম্পাসকে সেই পরিবেশ থেকে মুক্ত করতে পেরেছি। তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষার হার ৭৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে এবং আমরা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছি। সারা বিশ্বে এখন জনগণের দুর্ভোগ বাড়ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, যদিও বাংলাদেশের মানুষও উচ্চ মূল্যস্ফীতির কবলে পড়েছে, তবুও এখানে খাদ্যশস্য পাওয়া যায়। (খাদ্যশস্যের) অভাব নেই। মাধ্যমিক থেকে স্নাতক (পাস) এবং এর সমমানের প্রতিষ্ঠানের অসচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপবৃত্তি ও টিউশন ফি বিতরণ উদ্বোধনের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ-২০২৩ (বঙ্গবন্ধু ক্রিয়েটিভ ট্যালেন্ট সার্চ-২০২৩)-এর সবচেয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীদের পুরস্কার প্রদান এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বৃত্তি পুরস্কার-২০২২ প্রদানের জন্য এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। হাজারীবাগ গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী রেশমি কানিজ, রাজশাহীর গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী তাসদিক আহমেদ তন্ময়, রাজবাড়ী সরকারি কলেজের ছাত্রী কুইন, ন্যাশনাল কার্ডিওভাসকুলার ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতালের ডা. রাকিবুল আমিন বিজয় এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাহবুবা আহমেদ পুরস্কার প্রাপ্তদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়ক ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক স্মৃতি কর্মকার।

কমনওয়েলথ দেশগুলোর মধ্যে ব্যবসা জোরদারে প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বারোপ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কমনওয়েলথ দেশগুলোর আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য ব্যবসা জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। কমনওয়েলথ এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কাউন্সিলের (সিডব্লিউইআইসি) ডেপুটি চেয়ারম্যান লর্ড হুগো জর্জ উইলিয়াম সুইয়্যারের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল গতকাল সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি বলেন, কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য নিজেদের মধ্যে ব্যবসা জোরদার করা উচিত। বৈঠকে শেখ হাসিনা কমনওয়েলথের ভূমিকার কথা স্মরণ করে বলেন, কমনওয়েলথ তাকে দেশে ফেরার অনুমতি দিতে ২০০৭ সালের তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে চাপ দিয়েছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকার তার বাংলাদেশে ফেরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন- সিডব্লিউইআইসি ডিরেক্টর অব অপারেশন ড্যানিয়েল সিন লেনো, কৌশলগত উপদেষ্টা জিল্লুর হোসেন এমবিই এবং কৌশলগত অংশীদার শাহিনুজ্জামান। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।