২৮ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৭:৫১:৫৮ অপরাহ্ন


আমাজনের জঙ্গলে ভেঙে পড়া প্লেন, ৪০ দিন পর জীবিত উদ্ধার ৪ শিশু
তুরজিন তানজিম :
  • আপডেট করা হয়েছে : ১০-০৬-২০২৩
আমাজনের জঙ্গলে ভেঙে পড়া প্লেন, ৪০ দিন পর জীবিত উদ্ধার ৪ শিশু আমাজনের জঙ্গলে ভেঙে পড়া প্লেন, ৪০ দিন পর জীবিত উদ্ধার ৪ শিশু


প্লেন ভেঙে পড়ার পর এক মাসেরও বেশি সময় কেটে গেছে । দুর্ঘটনার পর অনেককেই উদ্ধার করা গেলেও ৪টি শিশুর সন্ধান মেলেনি কোনওভাবেই। প্রায় ধরেই নেওয়া হয়েছিল, এতদিন পর আর বেঁচে নেই তারা। কিন্তু ওই যে বলে, রাখে হরি, মারে কে! প্লেন দুর্ঘটনার এক মাসেরও বেশি সময় পর কলম্বিয়ার অ্যামাজনের জঙ্গল থেকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা গেল চারটি শিশুকে।

শিশুগুলি মূলত হুইটোটো আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত। সবচেয়ে বড় যে তার বয়স ১৩ বছর। একেবারে ছোটটির বয়স মাত্র এক বছর। বাকি দুজনের বয়স ৯ বছর এবং ৪ বছর। সূত্রের খবর, শিশুগুলি তাদের মায়ের সঙ্গে আরারাকুয়ারা থেকে বিমানে উঠেছিল। গন্তব্য ছিল ৩৫০ কিলোমিটার দূরে স্যান জোসে দেল গুয়াভিয়ারে। কিন্তু ইঞ্জিনে যান্ত্রিক গোলযোগের জন্য আচমকাই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে জঙ্গলের মধ্যেই ভেঙে পড়ে বিমানটি। দুর্ঘটনাস্থল থেকে প্লেনটির চালক, শিশুগুলির মা এবং স্থানীয় একজন আদিবাসী নেতার দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। বেশ কয়েকজনকে জীবিত অবস্থাতেও উদ্ধার করা হয়। কিন্তু সন্ধান মেলেনি ওই চারটি শিশুর।

বিমানের নিখোঁজ যাত্রীদের সন্ধানে সেনাবাহিনীর ১৬০ জন সদস্য এবং ৭০ জন আদিবাসী মিলে জঙ্গলের ভিতর অভিযান শুরু করেন। সূত্রের খবর, যে এলাকায় বিমান দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল সেখানে জাগুয়ার, বিষাক্ত সাপ এবং অন্যান্য হিংস্র জন্তুর বাস। এছাড়া মাদক পাচারের জন্যও কুখ্যাত ওই এলাকাটি।

দীর্ঘ তল্লাশিতে কিছু পায়ের ছাপ, একটি ডায়াপার, আধ খাওয়া ফল ইত্যাদির খোঁজ মিললেও ওই চারটি শিশুর সন্ধান কিছুতেই মিলছিল না। সেনাবাহিনীর তরফে হেলিকপ্টার থেকে খাবারের প্যাকেট এবং জলের বোতল জঙ্গলের ভেতর ফেলা হচ্ছিল। নিয়মিত তল্লাশিও চালু রাখা হয়েছিল।

সেই ঘটনার ৪০ দিন পর অবশেষে দুর্ঘটনাস্থল থেকে তিন মাইল দূরে চারটি শিশুর সন্ধান মেলে। অর্ধাহারে, অনাহারে জঙ্গলের ভিতর এক মাসেরও বেশি সময় কাটানোর পর অত্যন্ত দুর্বল এবং রুগ্ন হয়ে পড়েছিল শিশুগুলি। তবে মোটের উপর সুস্থই ছিল তারা।

অবিশ্বাস্য এই উদ্ধার অভিযানের খবর নিজে টুইট করে শুক্রবার সকলকে জানান কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রো। জানা গেছে, খুঁজে পাওয়ার পরেই শিশুগুলির দায়িত্ব নিয়ে তাদের সুস্থ করে তোলার চেষ্টা শুরু করে দিয়েছেন সেনাকর্মীরা। প্রাথমিক চিকিৎসা এবং শারীরিক পরীক্ষা করার পর ৪টি শিশুকেই বোগোটার মিলিটারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হবে। সেখানে চিকিৎসার পর সম্পূর্ণ সুস্থ হলে স্যান জোসে ডেল গুয়াভিয়ারেতে দাদুর কাছে দিয়ে আসা হবে শিশুগুলিকে।