শুক্রবার রাতে বালেশ্বরে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনাকে রেলের বর্তমান ও অবসরপ্রাপ্ত আধিকারকদের অনেকেই নজিরবিহীন বলছেন। যেভাবে এক জাগয়ায় তিনটি ট্রেন দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে তা দেখে অনেকেই বিস্মিত।
মৃত্যের সংখ্যায় বালেশ্বরের দুর্ঘটনা ১৯৯৯-এ গাইসাল এবং ২০০৯-এ জ্ঞানেশ্বরীর দুর্ঘটনাকেও ছাপিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বেঁচে যাওয়া যাত্রী এবং ঘটনাস্থলে পৌছনো পরিজনদের অনেকেরই ধারণা আহতদের অনেককেই অবস্থা গুরুতর। তাঁদের প্রাণরক্ষার আপ্রাণ চেষ্টা হচ্ছে।
ওড়িশায় করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা নতুন নয়। হাওড়া-চেন্নাই যাত্রায় দীর্ঘপথ ওড়িশার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করে ট্রেনটি। একাধিকবার যান্ত্রিক ক্রটিকেও যাত্রা বিলম্বিত হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ এই ট্রেনের। দক্ষিণগামী যাত্রীদের বেশিরভাগেই প্রথম পছন্দ করমণ্ডল এক্সপ্রেস।
তবে স্মরণকালের মধ্যে ওড়িশায় এই এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার কবলে পড়ার ঘটনা ঘটেছিল ২০০৯ সালে। যদিও তা এবারের মতো ভয়াবহ ছিল না। কিন্তু দুর্ঘটনার ধরন রেলকে চিন্তায় ফেলেছিল। সে বছর ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকালে ট্রেনটি ওড়িশার জয়পুর রোড হয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎই ইঞ্জনটি বগি থেকে বিচ্যুত হয়ে অন্য লাইনে ঢুকে পড়ে। গাড়ির গতি ছিল তখন ঘন্টায় ১৩০ কিলোমিটার।
ইঞ্জিন থেকে আলাদা হয়ে যাওয়া বগিগুলি তীব্র গতিতে এরপর একটি আর একটির উপর গিয়ে পড়ে। দুমড়ে মুচড়ে যায় বেশ কয়েকটি বগি। মারা যান ১৬জন যাত্রী। দুর্ঘটনার ভয়াবহতা অনুযায়ী মৃত্যের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারত বলে রেল-সহ সব মহলই গোড়ায় আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল।
তবে রেলকে চিন্তায় ফেলে দুর্ঘটনার চরিত্র। ধারনা করা হয়, লাইনে বড় ধরনের ফাটল বা দুটি লাইনের সংযোগস্থলে বড় মাপের ফাঁক ছিল। যেখানে ই়ঞ্জিনের চাকা পড়া মাত্র আচমকা ঝাঁকুনিতে বগির সঙ্গে যুক্ত কাপলিং খুলে গিয়েছিল। প্রশ্ন ওঠে স্টেশনের কাছে লাইনের এমন দুরবস্থা কী করে লাইন পরীক্ষক, রেল পুলিশ প্রমুখের দৃষ্টি এড়িয়ে গেল। তখন মাওবাদীরা পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ডের পাশাপাশি ওড়িশাতেও বেশ সক্রিয় ছিল।