২৮ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১০:৩৩:১০ অপরাহ্ন


ন্যাটোয় ইউক্রেনের সদস্যপদ নিয়ে বিভক্তি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ০২-০৬-২০২৩
ন্যাটোয় ইউক্রেনের সদস্যপদ নিয়ে বিভক্তি ছবি-সংগৃহীত


ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন ঠেকাতে পশ্চিমা বিশ্বের কাছে আরও অস্ত্র চেয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি। সেই সঙ্গে ন্যাটোর সদস্যপদ পেতে ফের আবেদন জানিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার মলদোভায় ইউরোপিয়ীয় পলিটিক্যাল কমিটির সভায় ইউক্রেনকে ন্যাটো ও ইউরোপিয়ীয় ইউনিয়নে (ইইউ) অন্তর্ভুক্তির জন্য দাবি জানান জেলেনস্কি।

পরে নরওয়ের অসলোতে অনুষ্ঠিত একটি সম্মেলনে ইউক্রেনকে ন্যাটোতে অন্তর্ভুক্ত করা প্রস্তাব উঠলে এর পক্ষে ও বিপক্ষে দুই দলে বিভক্ত হয়ে পড়েন বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোর নেতারা।

মলদোভার সভায় জেলেনস্কি বলেন, ‘শুধু ইউক্রেন নয়, রাশিয়ার সীমান্তবর্তী সব দেশই এ দুই জোটে (ন্যাটো ও ইইউ) অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।’

কারণ হিসেবে— যেসব দেশ কোনো নিরাপত্তা জোটের সঙ্গে নেই, রাশিয়া তাদের গিলে খেতে চায় বলে মন্তব্য করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।

এ সময় ক্ষমতাধর দেশগুলোর কাছ থেকে আরও সমর্থন ও সহযোগিতা চেয়ে তিনি বলেন, ‘এগুলো (সহযোগিতা) শুধু মানুষের জীবন রক্ষাই করছে না, আক্ষরিক অর্থে শান্তি প্রতিষ্ঠার কাজেও সহায়তা করছে।’

রাশিয়াকে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করতেই একসময়ের সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ মলদোভায় পশ্চিমা দেশগুলো এ সম্মেলন করেছে বলে আলজাজিরার খবরে বলা হয়।

সম্মেলনে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক উপস্থিত ছিলেন।

তবে জুলাইয়ের মাঝামাঝি লিথুনিয়ার ভিলনিয়াসে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনের মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে ইউক্রেনের যোগদানের বিষয়ে মিত্র দেশগুলোর মধ্যে বিভক্তি স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

এ সময় ন্যাটোপ্রধান জেন্স স্টলেনবার্গ বলেন, ‘ন্যাটোর পরিসর বাড়াতে মস্কোর যে কোনো মাথাব্যথা নেই, এ বিষয়ে আমরা সবাই একমত।’

২০০৮ সালে ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগদানের ব্যাপারে আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত জোটের নেতাদের এমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি, যা এ সামরিক জোটে কিয়েভের অন্তর্ভুক্তির গতিকে ত্বরান্বিত করে।

ন্যাটো সদস্যভুক্ত মিত্রদের সঙ্গে জোটে অন্তর্ভুক্তি নিয়ে একাধিকবার আলোচনা করেছে ইউক্রেন। কিন্তু এ মুহূর্তে দেশটিকে জোটে অন্তর্ভুক্ত করলে রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার শঙ্কা করছে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানির মতো মোড়ল দেশগুলো।

লিথুয়ানিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী গ্যাব্রিলিয়াস ল্যান্ডসবার্গিস বলেন, ‘১৪ বছর ধরে ন্যাটোর উত্তরের জন্য অপেক্ষা করছে কিয়েভ। এ সময়ে তারা দুবার আক্রমণের শিকার হয়েছেন।

‘ইউক্রেনকে আসলেই ন্যাটোর সদস্যপদ দেওয়া যাবে কিনা এবং তা করা গেলে ঠিক কীভাবে ও কত সময়ের মধ্যে দেওয়া যায়, এ বিষয়ে আমাদের একটি ফলপ্রসূ আলোচনা করার সময় এসেছে।’

এ সময় ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্যপদ দিতে তাড়াহুড়া করা হয়ে যাচ্ছে বলে শঙ্কা প্রকাশ করে জার্মানি ও লুক্সেমবার্গ।

জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্নালেনা বায়েরবক বলেন, ‘ন্যাটোর উন্মুক্ত দ্বারনীতি সবসময়ই রয়েছে। কিন্তু যুদ্ধরত কোনো দেশকে এখন জোটে অন্তর্ভুক্ত করা কোনোভাবেই ঠিক হবে না।’

তবে হাঙ্গেরি স্পষ্ট জানিয়ে দেয় যে, ইউক্রেনের অন্তর্ভুক্তি (ন্যাটোতে) নিয়ে আসন্ন সম্মেলনে কোনো আলোচনা হবে না।