পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ‘খেলা শেষ (গেম ওভার)’ বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির মুসলিম লীগ (পিএমএলএন) এর সহ-সভাপতি ও নওয়াজ শরিফের মেয়ে মরিয়ম নওয়াজ। শুক্রবার পাঞ্জাব প্রদেশে এক সমাবেশে অংশ নিয়ে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ থেকে নেতা–নেত্রীদের পদত্যাগের হিড়িক লাগার পরিপ্রেক্ষিতে এ মন্তব্য করেন তিনি। এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
এসময় মরিয়ম অভিযোগ করে বলেন, ৯ মে’র ঘটনা ও দেশের বিভিন্ন স্থানে সেনা স্থাপনায় 'পরিকল্পিত হামলার' মাস্টারমাইন্ড ছিলেন তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান।
তিনি আরও বলেন, মিস্টার খান ও তার দলের সময় শেষ। পরবর্তী নির্বাচনে কেউ পিটিআই টিকিট পাওয়ার চেষ্টা করবে না। দেশজুড়ে সংহিসতা সৃষ্টিকারী কেউই রেহায় পাবে না।
আলোচিত আল কাদির ট্রাস্ট মামলয় গত ৯ মে ইমরান খানের গ্রেপ্তারের পর পাকিস্তানে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। রাজপথে নামা ইমরানের সমর্থকেরা বিভিন্ন সামরিক-বেসামরিক স্থাপনায় হামলা চালায় বলে অভিযোগ উঠে। পরে তার দলের নেতাকর্মীদের ধরপাকড় শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সম্প্রতি পিটিআইয়ের একাধিক নেতা দল থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। এর মধ্যে দলটির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী, শিরীন মাজারি, মালেকা বোখারি অন্যতম। বুধবার ফাওয়াদ চৌধুরী দল ছাড়ার ঘোষণা দেয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে দলের মহাসচিব আসাদ উমর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। তবে তিনি পিটিআই সদস্য থাকবেন বলে জানিয়েছেন।
দলের নেতাদের পদত্যাগের জন্য সেনাবাহিনীকে দোষছেন ইমরান। তার অভিযোগ, সেনাবাহিনীর ধরপাকড় ও চাপে পড়ে নেতারা পদত্যাগ করছেন।
এদিকে, পাকিস্তানের ইমরান খান এবং তার স্ত্রী বুশরা বিবিসহ দলের ৮০ জনের বেশি নেতার দেশত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় গত বৃহস্পতিবার ।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের বিশেষ সহকারী আতাউল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পিটিআই নেতাদের মধ্যে তালিকায় রয়েছেন আসাদ উমর, মালেকা বোখারি, কাসিম সুরি, আসাদ কায়সার, মুরাদ সাঈদ, হাম্মাদ আজহার, ইয়াসমিন রশিদ ও আসলাম ইকবাল।
তিনি আরও বলেন, ইমরান খান ও বুশরা বিবিসহ এসব নেতাকে নো ফ্লাই তালিকায় এক্সিট কন্ট্রোল লিস্টে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এর আগের দিন, বুধবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেছিলেন, ইমরানের দল পিটিআইকে নিষিদ্ধ করার কথা বিবেচনা করছে সরকার। গত বছর এপ্রিলে পার্লামেন্টে আস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতাচ্যুত হন ইমরান। এরপর থেকেই তিনি অভিযোগ করে আসছিলেন, তাকে অপসারণের নেপথ্যে রয়েছে সেনাবাহিনী। আগাম নির্বাচনের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশও করে তিনি।