পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে একে একে ছেড়ে যাচ্ছেন তার দলের নেতারা। পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের নেতারা একে একে দিয়ে যাচ্ছেন পদত্যাগের ঘোষণা। সবশেষ বুধবার (২৪ মে) পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন দলটির ঊর্ধ্বতন ভাইস প্রেসিডেন্ট ফাওয়াদ চৌধুরী।
জিও নিউজ জানায়, বুধবার এক টুইটে রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আগেই আমি ৯ মে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের গ্রেফতারের পর দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সেনানিবাসে হামলার নিন্দা জানিয়েছিলাম। আমি রাজনীতি থেকে আপাতত সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাই দলের যাবতীয় দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিচ্ছি। আমি ইমরান খান থেকে দূরে সরে যাচ্ছি।’
ইমরান খানের গ্রেফতারের পর ৯ মে দেশব্যাপী সহিংসতার ঘটনায় যে কয়েকজন পিটিআই নেতাকে বাছাই করে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল, তাদের মধ্যে ফাওয়াদ চৌধুরী একজন।
গত ৯ মে ইমরান খান কাদির খান ট্রাস্ট মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর দলের কর্মী ও সমর্থকরা দেশজুড়ে প্রায় সব সরকারি ভবন এবং সামরিক স্থাপনায় যে হামলা চালিয়েছিল, সেই পরিপ্রেক্ষিতে ফাওয়াদ এ ঘোষণা দেন।
ফাওয়াদ চৌধুরী ইমরান খানের আমলে তথ্য ও আইনমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন এবং বিরোধী দলে যাওয়ার পর ইমরান খানের ডানহাত ছিলেন। দলের প্রধান মুখপাত্রের দায়িত্বও তিনি পালন করেন।
ফাওয়াদ চৌধুরীর পিটিআই ত্যাগ ইমরান খানের জন্য বড় ধাক্কা বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। কেননা, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিশ্বস্ত সহচর হিসেবেই তিনি পরিচিত ছিলেন। ইসলামাবাদসহ একাধিক আদালতে ইমরান খানের হয়ে মামলা করার পাশাপাশি দলের মুখপাত্র হিসেবেও পিটিআই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে শাহবাজ শরিফ প্রশাসনের নির্মম অত্যাচারের বিরুদ্ধে সরব ছিলেন তিনি।
ইমরান-ঘনিষ্ঠরা মনে করছেন, পাক সেনা এবং শাসক দলের হুমকির কারণেই ফাওয়াদের এ সিদ্ধান্ত। গত ৯ মে কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ইসলামাবাদ হাইকোর্ট চত্বর থেকে পাক রেঞ্জার্স বাহিনী ইমরানকে গ্রেফতার করার পর দেশজুড়ে অশান্তি হয়েছিল। হামলা হয়েছিল সরকারি দফতর, মন্ত্রী ও সেনা অফিসারদের বাড়ি এবং বিভিন্ন সেনানিবাসে। সেই সব অশান্তির একাধিক মামলায় অভিযুক্ত ফাওয়াদকে সম্প্রতি আদালত থেকে জামিন নিতে হয়েছিল।
এর আগে মঙ্গলবার (২৩ মে) দলের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি শিরিন মাজারি পদত্যাগের ঘোষণা দেন। ১২ মে থেকে শিরিনকে চারবার গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রতিবারই তিনি জামিনে বের হয়ে আসেন।
সংবাদ সম্মেলনে শিরিন বলেন, ‘আজ থেকে আমি আমার পরিবার, মা ও সন্তানদের কারণে পিটিআই কিংবা যেকোনো রাজনৈতিক দল থেকে দূরে থাকব।’
গত সপ্তাহে ইমরানের দলের আরেক নেতা আব্দুর রাজ্জাক খান নিয়াজি পিটিআই থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
এ ছাড়া পিটিআই ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন দলটি থেকে নির্বাচিত জাতীয় পরিষদের সদস্য আফতাব হোসাইন সিদ্দিকী, পিটিআই পশ্চিম পাঞ্জাবের সভাপতি ফায়জুল্লাহ কামোকা, পিটিআই থেকে নির্বাচিত পাঞ্জাব প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য আবদুল রাজ্জাক খান নিয়াজীসহ কয়েক নেতা।