অতিমহামারী থামার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে কি? ভাইরাস নির্মূল হচ্ছে না কিছুতেই। মহামারীর নিত্যনতুন ঢেউ আসা বন্ধ হলেও, সংক্রমণ থামছে না। আগামী দিনেও এমন পরিস্থিতি থাকবে, বরং আরও বড় কোনও মহামারী আছড়ে পড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)।
হু প্রধান টেড্রস অ্যাডহানাম গেব্রেইসাস বলছেন, পরবর্তী অতি মহামারীর জন্য এখন থেকেই তৈরি হতে হবে বিশ্বকে। করোনার আগে সার্স, মার্স, মারবার্গ ভাইরাসের সংক্রমণ মারাত্মক হয়ে দেখা দিয়েছিল। সেইসব ভাইরাস ফের তাদের চরিত্র বদলে ফিরে আসতে পারে। জেনেটিক মিউটেশন বা জিনগত বদল হতে পারে ভাইরাসে। আবারও অতি মহামারী ছড়িয়ে পড়তে পারে বিশ্বজুড়ে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, পশুপাখিদের শরীর থেকেও ভাইরাস ছড়াচ্ছে। মানুষের খাদ্যাভ্যাসই এর জন্য দায়ী। হতে পারে কোনও নতুন ভাইরাস সেই রোগ ছড়াবে, অথবা চেনা ভাইরাসই তার রূপ বদলে সংক্রামক হয়ে উঠবে। কিন্তু সে কোন ভাইরাস বা কেমন হতে পারে সেই অজানা রোগ, এ ব্যাপারে এখনও অবধি কিছুই বলতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। অপরিচিত সেই ভাইরাস কতটা সংক্রামক তাও অজানা।
কোভিড অতিমহামারীতে বিশ্ব এক নতুন ও ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে, এ কথা আগেই বলেছিলেন হু-প্রধান টেড্রস। তাঁর বক্তব্য, “আমরা সবাই চাই এই সঙ্কট কেটে যাক। আবার সাধারণ জীবনযাপনে ফিরে আসুক মানব সমাজ। কিন্তু, চরম সত্যিটা হল এই মহামারী এখনও শেষ হওয়ার পর্যায়ে পৌঁছয়নি। কিছু দেশে সংক্রমণের কার্ভ কমতির দিকে হলেও, বাকি দেশগুলিতে ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়েই চলেছে।”
২০১৮ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) ৯ রকম ভাইরাসজনিত রোগের কথা উল্লেখ করেছিল। হু-র চিহ্নিত করা সংক্রামক রোগের তালিকায় বলা হয়েছিল, পশুদের থেকে যে সমস্ত ভাইরাসনিত রোগের সংক্রমণ হয়েছে যেমন ইনফ্লুয়েঞ্জা, রেবিস, ব্রুসেলোসিস, লাইম ডিজিজ ইত্যাদি, তেমনই কোনও ভাইরাস ফের তার জিনের গঠন বদলে ফিরে আসতে পারে। নগরসভ্যতার অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি, গাছপালা কেটে, বনজঙ্গল সাফ করার ফলে বন্য প্রাণিরা অনেক বেশি মানুষের কাছাকাছি এসে পড়ছে। তাছাড়া নানা রকম প্রাণির মাংস খাওয়ার অভ্যাসও মানুষকে বিপর্যের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। বন্য প্রাণির শরীর থেকে সংক্রামক ভাইরাস মানুষের শরীরে ঢুকছে। এইসব ভাইরাস মানুষের শরীরকে আশ্রয় করে জিনের গঠন বদলে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।