চাকরি জীবনে নানা কারণে সংবাদের শিরোনামে উঠে এসেছেন আসামের সাব ইন্সপেক্টর জোনমণি রাভা। অসামে ‘দাবাং’ নারী পুলিশ অফিসার হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। তার গাড়ির সঙ্গে ট্রাক্টরের মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিনি। সড়ক দুর্ঘটনাতেই কি তার মৃত্যু হয়েছে নাকি এর পিছনে অন্য কোনো কারণ আছে? এটা নিয়েই পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। তবে পরিবারের অভিযোগ, জোনমণিকে ষড়যন্ত্র করে খুন করা হয়েছে।
বিয়ের আগে নিজের হবু বরকে প্রতারণার অভিযোগে নিজেই গ্রেফতার করেছিলেন। এর পরেই গত বছর মে মাসে সংবাদের শিরোনামে উঠে আসেন জোনমণি রাভা। কেউ কেউ বলতেন ‘দাবাং পুলিশ অফিসার’, কেউবা আবার বলতেন ‘লেডি সিংঘম।’ জোনমণি নিজেও ফেঁসে গিয়েছিলেন প্রতারণার অভিযোগে। স্থানীয় দুই কন্ট্রাক্টরের অভিযোগ ছিল, জোনমণির হবু বরের সঙ্গে তারা একটি আর্থিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন, যার নেপথ্যে ছিলেন জোনামণিই। সেই চুক্তিতে প্রতারিত হয়েছেন তারা। পুলিশ তদন্তে নেমে গ্রেফতার করে জোনমণিকে। পরে তিনি জেল থেকে ছাড়া পান। যোগ দেন তার পুরনো পদেই।
সোমবার রাতে অসমের নওগাঁ জেলায় সারুভাগিয়া এলাকার জাতীয় সড়কের ওপর গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটে। মধ্যরাতে নিজেই গাড়ি চালিয়ে ফিরছিলেন জোনমণি। আচমকাই সামনে থেকে আসা এক ট্রাক্টরের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। দুমড়ে মুচড়ে যায় গাড়ির সামনের অংশ। এরপরেই তার মৃত্যু হয়।
এখন প্রশ্ন উঠেছে তার মৃত্যু নিয়ে। জোনমণি মোরিকোলোং আউটপোস্টের দায়িত্বে ছিলেন। বিভিন্ন দুষ্কৃতী চক্রের ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছিলেন তিনি। পরিবারের অভিযোগ গাড়ি দুর্ঘটনার পেছনে দুষ্কৃতী চক্রের হাত রয়েছে। এই নারী পুলিশ অফিসারের এক ফুপুর অভিযোগ, সোমবার জোনমণির কোয়ার্টারে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তারা অভিযান চালান এবং ১ লাখ টাকা বাজেয়াপ্ত করেন। যদিও সেই টাকা ছিল জোনমণির মায়ের উপার্জিত অর্থ।
আসামের ডিজিপি জ্ঞানেন্দ্র প্রতাপ সিং জানান, এরপর জোনমণির বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয় উত্তর লখিমপুর পুলিশ স্টেশনে। বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। জোনমণির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ নতুন নয়। কর্মজীবনে বারবার সংবাদের শিরোনামে উঠে এসেছেন তিনি। জড়িয়েছেন বিতর্কেও। আসামের এই মেয়ের জীবন ছিল ঘটনাবহুল। অবশেষে গত সোমবার রাতের দুর্ঘটনা কেড়ে নিল জোনমণির প্রাণ।