২৯ নভেম্বর ২০২৪, শুক্রবার, ০৬:০৩:৪৩ পূর্বাহ্ন


ইমরানের বাড়িতে লুকিয়ে ৪০ জঙ্গি, পুলিশের হাতে না দিলে সেনা অভিযানের হুঁশিয়ারি
রিয়াজ উদ্দিন:
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৭-০৫-২০২৩
ইমরানের বাড়িতে লুকিয়ে ৪০ জঙ্গি, পুলিশের হাতে না দিলে সেনা অভিযানের হুঁশিয়ারি ইমরানের বাড়িতে লুকিয়ে ৪০ জঙ্গি, পুলিশের হাতে না দিলে সেনা অভিযানের হুঁশিয়ারি


প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ৩১ মে পর্যন্ত গ্রেফতার করা যাবে না। ইসলামাবাদ আদালত বুধবার এই নির্দেশ জারি করেছে। তবে তার আগেই ইমরানকে ঘিরে পাকিস্তানে নতুন করে দাঙ্গা-হাঙ্গামা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিপন্ন হতে পারে ইমরানের জীবনও।

মঙ্গলবার পাকিস্তান সেনা দেশে মিলিটারি আইন বলবৎ করেছে। সেনা প্রধান আসিফ মুনির খান জানিয়েছেন, ইমরান সমর্থকদের হামলার ঘটনাগুলি সেনা আইনে বিচার হবে। এর অর্থ ধৃতদের জামিন মিলবে না এবং বিচার হবে ক্যান্টনমেন্টের ভিতরে সেনা আদালতে।

পাক সেনার এই ঘোষণায় এমনিতেই দেশটিতে নতুন করে গোলমালের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আবার একদল যখন নতুন করে সংঘাতের প্রস্তুতি নিচ্ছে তখন ইমরান সমর্থকদের অনেকেই দলে দলে ঘর-বাড়ি ছাড়ছে সেনার হাতে গ্রেফতারি এড়াতে।

এরই মধ্যে বুধবার সেনার রিপোর্টের ভিত্তিতে পাঞ্জাব সরকার একটু আগে ঘোষণা করেছে, ইমরান খানের লাহোরের জামান পার্কের বাড়িতে ৪০জন জঙ্গি আশ্রয় নিয়েছে। ইমরান নিজে তাদের দেখভাল করছেন। এই ভাড়াটে জঙ্গিরাই পুলিশ ও সেনা দফতরে হামলার মূল কারিগর। ইমরানকে চব্বিশ ঘণ্টা সময় দিয়ে বলা হয়েছে, তিনি নিজে জঙ্গিদের ধরিয়ে না দিলে অভিযান চালানো হবে তাঁর বাড়িতে।

আদালত ইমরানকে গ্রেফতারে ৩১ মে পর্যন্ত স্থগিতাদেশ দিলেও তাঁর বাড়িতে অভিযানে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি। ওয়াকিবহাল মহলের খবর, আর্মি আইন বলবৎ হওয়ায় ইমরানের বাড়িতে সেনা কমান্ডোরা অভিযান চালাতে পারে তিনি নিজে বহিরাগতদের বের করে না দিলে।

সূত্রের খবর, পাকিস্তানে কার্যত সেনা শাসন কায়েম হয়েছে। গত ৯ মে’র পর একাধিক রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার ভার সেনা নিজের হাতে নিয়েছে। পাঞ্জাবের মতো বড় প্রদেশে সেনাকে এখনও ব্যারাক থেকে বের করা হয়নি। যদিও সেখানেও সেনা ব্যারাকে ইমরান সমর্থকেরা হামলা চালিয়েছিল।

এই দফায় ইমরানের লড়াই চলছে মূলত সেনার সঙ্গে। বর্তমান সেনা প্রধান আসিফ মুনির ৯ মে’র গোলমালের দিন সরকারি সফরে ওমানে ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ছিলেন লন্ডনে। ইমরান সমর্থকদের হামলার খবর পেয়ে দু’জনেই পরদিন দেশে ফিরে আসেন। জানা যাচ্ছে, ইমরানের সমর্থকেরা যেভাবে সেনা ছাউনির উপর হামলা চালিয়েছে পাকিস্তানের ইতিহাসে তা কখনও ঘটেনি। কোনও দলের সমর্থকেরাই এমন সাহস দেখায়নি। ১০টি বড় সেনা ব্যারাকে ঢুকে ভাঙচুর চালায় তারা। লাহোরে এক সেনাকর্তার বাংলোয় ভাঙচুর করা হয়।

হামলার ঘটনা পাক সেনাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিয়েছে বলে মনে করছেন সেনাকর্তারা। সেনা প্রধান আসিফ মুনির তাই সরকারের অনুমতির তোয়াক্কা না করেই সেনা আইন বলবতের নির্দেশ জারি করেছেন। সেনার এই সিদ্ধান্ত পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন সরকারের জন্যও অস্বস্তির বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু সেনা মনে করছে, পাক সরকারের ব্যর্থতায় ইমরান দেশের সুপ্রিম কোর্টের কাছ থেকে নিজের সপক্ষে রায় আদায় করতে সক্ষম হয়েছেন। তাঁর গ্রেফতারির পক্ষে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ সরকারের তরফে পেশ করা হয়নি।

এদিকে, ইমরানের বাড়িতে সত্যিই ৪০ জঙ্গি লুকিয়ে থাকলে তাদের বের করে না দিলে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছে সে দেশের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহল। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে সেনা কমান্ডোরা অভিযান চালালে পরিণতি কোন দিকে গড়াতে পারে তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছে সব শিবির। সেনা আইন বলবৎ হওয়ায় সিভিল প্রশাসন একপ্রকার অসহায়।