২৫ নভেম্বর ২০২৪, সোমবার, ০১:৩০:৫৬ পূর্বাহ্ন


শান্তিগঞ্জে পুলিশের নির্যাতনে ব্যক্তির মৃত্যুর অভিযোগ : অভিযুক্ত এসআই বদলি
অনলাইন ডেস্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৪-০২-২০২২
শান্তিগঞ্জে পুলিশের নির্যাতনে ব্যক্তির মৃত্যুর অভিযোগ : অভিযুক্ত এসআই বদলি শান্তিগঞ্জে পুলিশের নির্যাতনে ব্যক্তির মৃত্যুর অভিযোগ : অভিযুক্ত এসআই বদলি


সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে পুলিশের নির্যাতনে উজির মিয়া (৪২) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যুর অভিযোগ ওঠেছে। এ ঘটনায় শান্তিগঞ্জ থানা পুলিশের অভিযুক্ত এসআই দেবাশীষ সূত্রধরকে বদলি করা হয়েছে।

বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে তাকে শান্তিগঞ্জ থানা থেকে দিরাই থানায় বদলি করা হয়।

এসআই দেবাশীষের বদলির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সাঈদ। যদিও কোন অভিযোগের ভিত্তিতে নয়, সাধারণভাবেই তাকে বদলি করে দিরাই থানায় স্থানান্তর করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। বলেন, ‘যেহেতু ঘটনাটি তদন্তধীন রয়েছে, তাই এখানে শাস্তিমূলক বদলি হয়নি।’

সার্বিক বিষয়ে আবু সাঈদ আরও বলেন, ‘ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। যেহেতু আমাদের দু-একজন সদস্যকে নিয়ে কথা উঠেছে। তাই বিষয়টি আমরা আরও বেশি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। আমাদের কোনো ভুলত্রুটি আছে কি না, আমরা সেটিও দেখব।’ 

শান্তিগঞ্জের শত্রুমর্দন (বাঘেরকোনা) গ্রামের বাসিন্দা উজির মিয়া গত সোমবার (২১শে ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মারা যান। পুলিশের নির্যাতনে তার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত পুলিশ সদস্যদের আইনের আওতায় আনার দাবি উজির মিয়ার স্বজন ও এলাকাবাসীর। 

তারা ওইদিন দুপুরে উপজেলার পাগলা বাজার এলাকায় মরদেহ নিয়ে সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। দীর্ঘ তিন ঘণ্টা অবরোধের পর প্রশাসন ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে উত্তেজিত লোকজনকে ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। 

গত মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে তার মরদেহ দাফন করা হয়।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, উজির মিয়া ছোট ব্যবসায়ী ছিলেন। গত ৯ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) গভীর রাতে বাড়ি থেকে উজির মিয়াকে ধরে নিয়ে যায় শান্তিগঞ্জ থানার পুলিশ। থানায় নিয়ে তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়। পরদিন তাকে একটি চুরির মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ। ওইদিনই আদালত থেকে উজির মিয়া জামিনে ছাড়া পান। 

বাড়িতে আসার পর উজির মিয়ার সারা শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন দেখতে পান পরিবারের সদস্যরা। এরপর উজির মিয়া অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে পাঁচদিন চিকিৎসার পর কিছুটা সুস্থ হলে তাকে আবার বাড়িতে আনা হয়। 

গত সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে তিনি আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে স্থানীয় কৈতক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরিবারের অভিযোগ শান্তিগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দেবাশীষ সুত্রধর, পার্ডন কুমার সিংহ ও আক্তারুজ্জামান উজির মিয়াকে হেফাজতে নিয়ে ব্যাপক নির্যাতন করেছেন। 

এদিকে উজির মিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় জেলা প্রশাসন ও পুলিশের করা পৃথক দুটি কমিটি তদন্তের কাজ করছে। ২৩ ফেব্রুয়ারি সকালে জেলা প্রশাসনের করা তদন্ত কমিটির প্রধান সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার উল হালিম কমিটির অন্য সদস্যদের নিয়ে ওই এলাকায় যান। তারা এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। একইভাবে পুলিশের করা তদন্ত কমিটিও কাজ করছে।

রাজশাহীর সময় / এম আর