২৯ নভেম্বর ২০২৪, শুক্রবার, ০৮:৫৭:৪৫ পূর্বাহ্ন


বিশ্বব্যাংকে এসে বিশ্বমিথ্যুকের রেকর্ড গড়লেন শেখ হাসিনা: ফ্লোরিডা ষ্টেট বিএনপি
ইমা এলিস, নিউ ইয়র্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ১০-০৫-২০২৩
বিশ্বব্যাংকে এসে বিশ্বমিথ্যুকের রেকর্ড গড়লেন শেখ হাসিনা: ফ্লোরিডা ষ্টেট বিএনপি বিশ্বব্যাংকে এসে বিশ্বমিথ্যুকের রেকর্ড গড়লেন শেখ হাসিনা: ফ্লোরিডা ষ্টেট বিএনপি


বিশ্বব্যাংকের দাওয়াতে এসে বিশ্বমিথ্যুকের রেকর্ড গড়লেন শেখ হাসিনা। দেশের সরকারি সংবাদমাধ্যমকে ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপিকে কেন্দ্র করে আলোচনার বসার নামে যে ভুয়া গুজব ছড়িয়েছেন দেশের মানুষ তা চিরদিন মনে রাখবে। বিএনপির নামে এ ধরনের গুজব ছড়ি্যে কোন লাভ হবে না বলে উল্লেখ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা ষ্টেট বিএনপির নেতারা। এ খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস।

গত মঙ্গলবার (২ মে) ভার্জিনিয়ার রিটজ কার্লটন হোটেলে বাংলাদেশি প্রবাসীদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে নাগরিক সংবর্ধনা আয়োজন করা হয়। ওই সময় বাইরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছিলেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বিক্ষোভকারী বিএনপির নেতাদের আলোচনার আহবান জানিয়েছেন বলে উল্লেখ করলেও প্রকৃতপক্ষে বিএনপির নেতা-কর্মীদের কেউ এ ধরনের কোন আলোচনার প্রস্তাব পাননি। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ ফ্লোরিডা ষ্টেট বিএনপির নেতা-কর্মীদের মাঝেও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া বিরাজ করছে।

‘প্রধানমন্ত্রীর আলোচনার আহবানে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে বিএনপি-জামায়াত সমর্থকরা’ গত বুধবার (৩ মে) দেশের বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত উক্ত খবরকে ডাহা মিথ্যাচার বলে উল্লেখ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা ষ্টেট বিএনপির নেতা-কর্মীরা। তারা জানান, ভার্জিনিয়ার রিটজ কার্লটন হোটেলের সামনে বিক্ষোভ চলাকালীন সময়ে সরকারি কোন কর্মকর্তা বা দলের কেউই তাদের কাছে এ ধরনের কোন প্রস্তাব নিয়ে আসেননি। অথচ সরকারি সংস্থার পরিবেশিত সংবাদে এভাবে মিথ্যাচার চালানো হচ্ছে।

বিশ্ব ব্যাংকের সামনে ও রিটজ কার্লটন হোটেলের সামনে দু’দিনের বিক্ষোভ কর্মসূচি প্রসঙ্গে ফ্লোরিডা ষ্টেট বিএনপির সভাপতি ইমারানুল হক চাকলাদার এ প্রতিনিধিকে জানান, মঙ্গলবার (২ মে) দুপুর ২টার দিকে রিটজ কার্লটন হোটেলের সামনে ভার্জিনিয়া বিএনপির সদস্য সচিবসহ তারা তিনজন ব্যানার লাগাতে গেলে ছাত্রলীগ নামধারী অভি খান ও জাহিদ হাসানসহ বেশ কয়েকজন কর্মী অতর্কিতভাবে বিএনপি কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে ব্যানার কেড়ে নেবার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে তাকে মারধর শুরু করলে ভার্জিনিয়া বিএনপির সদস্য সচিব মোহাম্মদ তোফায়েল গুরুতর আহত হন। তাকে তাৎক্ষনিকভাবে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাবার সময় পুলিশ নিউ ইয়র্ক থেকে আগত কথিত ছাত্রলীগ অভি খানকে গ্রেপ্তার করেন এবং জাহিদ হাসানসহ অন্যরা পালিয়ে যান। দুপুরের সেই ঘটনার পর উভয় গ্রুপ বিশেষ করে বিক্ষোভকারীদের কাছাকাছি মিডিয়াকর্মীদেরও যেতে দেননি পুলিশ। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা/৭টা পর্যন্ত বিএনপির কর্মীরা সেখানে বিক্ষোভ করেন। ওই সময় পর্যন্ত সরকারি কোন কর্মকর্তা বা দলের কেউই তাদের কাছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনার কোন প্রস্তাব নিয়ে আসেননি।

ইমারানুল হক চাকলাদার বলেন, মিথ্যাচারিতারও একটা সীমা থাকে। বিদেশের মাটিতে বসে দেশের মানুষকে শেখ হাসিনা কী বার্তা দিলেন? বিএনপির সঙ্গে তাঁর যদি আলোচনায় বসার সদিচ্ছা থাকতো তাহলে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারদেরকেই তো তিনি সেই আকাংখিত প্রস্তাবটি দিতে পারতেন। যুক্তরাষ্ট্রে কাকে দিয়ে কার কাছে তিনি আলোচনার বসার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি তা পরিস্কার করে বলেননি। এমনকি তার স্পিচরাইটার এম নজরুল ইসলাম সংবাদ ব্রিফিংয়ে তা স্পষ্ট করেন নাই। অথচ তারা একটি গুজব ছড়িয়ে দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করেছেন।

তিনি বলেন, এতদিন জানতাম সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বমিথ্যুক। কিন্তু শেখ হাসিনা এবারে যুক্তরাষ্ট্রে এসে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সেই রেকর্ড ভেঙ্গেছেন। এখন থেকে শেখ হাসিনাকে 'বিশ্বমিথ্যুক' বললে কোন ভুল হবে না বলে উল্লেখ করেন ইমারানুল হক চাকলাদার।

ফ্লোরিডা ষ্টেট বিএনপির সভাপতি চাকলাদার আরও বলেন, রাজনীতিতে ভুয়া প্রতিশ্রুতিকে অনেকেই ধাপ্পাবাজি বলে থাকেন। শেখ হাসিনার সর্বশেষ দুটি প্রতিশ্রুতি সেরকম ধাপ্পাবাজি কিনা সেটা তাকেই স্পষ্ট করতে হবে। কারণ, তিনি ষাটোর্ধ্বদের গনপেনশন আর এক কোটি মানুষকে ভর্তুকি দিয়ে দলকে আগামী নির্বাচনে যেনতেন প্রকারে পাস করিয়ে নিতে চান। প্রশাসন পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনীর শীর্ষ কর্তারা তার অনুগত বলে অন্যান্য পরিস্থিতি নিয়ে তার কোনো উদ্বেগ নেই। কিন্তু তিনি কি কখনো ভেবেছেন, মোটা অংকের বিদেশী ঋণে পদ্মা সেতু তৈরি করছেন। কিন্তু সড়ক নৌপথ হয়ে আছে মৃত্যুকূপ। সড়কে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ জন মারা যাচ্ছে অঘোরে। সেতু হওয়ার আগেই ব্রীজে ফাটল ধরেছে। রেললাইনের অবস্থা আরো খারাপ। ৬০ থেকে ৭০ ভাগ রেল ইঞ্জিন বিকল হয়ে আছে। রেললাইনের ব্রীজগুলো ব্রিটিশ আমলের পরে আর সংস্কার হয়নি। নৌপথে শৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। শেখ হাসিনা মানুষকে খাবার দেওয়ার কথা বলছেন, নিরাপত্তার কথা বলছেন। অথচ সড়কে নৌপথে আর রেলপথে নিরাপত্তা কে দেবে? সেখানে আগে নিরাপত্তা দিন। কারণ তিনি ছাড়া পুরো জাতি প্রতিদিন জীবন হাতে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে চলাচল করছেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এরকম মিথ্যা কথা বলার জন্য তাকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। তিনি প্রকাশিত উক্ত সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন।

ফ্লোরিডা ষ্টেট বিএনপির মোহাম্মদ ইলিয়াস খান বলেন, শেখ হাসিনা ১৩ বছরে দেশকে একটা পুলিশি রাষ্ট্রে (অন্য কথায় বলতে গেলে মাফিয়ার রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন)। কিন্তু কথা বলছেন সব ফেরেশতার মতো। এটা তো আপনি জানেন, কিন্তু কেন এই সত্যকে পাশ কাটিয়ে চলছেন? আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বলে কিছু অবশিষ্ট নেই। দ্রব্যমূল্য মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্তের ধরাছোঁয়ার বাইরে। কিন্তু কেন? এ কথা বলে তো আপনি ক্ষমতায় আসেন নি? আপনি মানুষের প্রশ্ন করার অধিকার কেড়ে নিয়েছেন। সমালোচনার অধিকার কেড়ে নিয়েছেন। দ্বিতীয়তঃ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে লোকেরা তাদের পেনশনের টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারবে কিনা সেটা উদ্বেগের বিষয়! এমনকি এই পেনশন রাস্তাঘাটে অনেক নিরীহ মানুষের প্রাণহানির কারণও হতে পারে।

তিনি উল্লেখ করে বলেন, শেখ হাসিনার এ ধরণের কথা শুনে আশ্চর্যের হবার কিছুই নেই। কারণ এগুলোতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। বাংলাদেশে বর্তমানে ফ্যাসিবাদী ও স্বৈরাচারী শাসেকের মুখে এ ধরণের মিথ্যাচারিতা বন্ধ করে আগামী নির্বাচন যাতে তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হয়, সেই ব্যবস্থা করুন এবং দেশের সাধারন মানুষকে শান্তি দিন। তিনিও প্রকাশিত উক্ত সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান।