পূর্বাচলে প্রস্তাবিত শেখ হাসিনা স্টেডিয়ামের খবর কি? নির্মাণ কাজ আসলে কোন পর্যায়ে আছে? কবে নাগাদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে এ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম তৈরির কাজ শেষ হতে পারে? এ বিরাট ক্রিকেট স্থাপনা তৈরিতে কত অর্থই বা ব্যয় হবে? এসব কৌতুহলি প্রশ্নর শেষ নেই।
অনেক দিন পর এ স্টেডিয়াম নিয়ে বিসিবির অন্যতম সিনিয়র পরিচালক এবং গ্রাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যান মাহবুব আনাম মিডিয়ার কাছে একটা ধারণা দিলেন। তবে ওপরে শেখ হাসিনা স্টেডিয়াম নিয়ে সাধারণ ক্রিকেট অনুরাগির যে কৌতুহল ও উৎসাহ-আগ্রহ দেখিয়েছেন, মাহবুব আনামের কথায় তার সদোত্তর মেলেনি। তিনি কোনো বিষয়েই পরিষ্কার করে কিছু বলতে পারেননি বা বলেননি। কোন প্রশ্নেরই পরিষ্কার ও সোজা-সাপটা উত্তর মেলেনি তার কাছ থেকে।
কবে নাগাদ স্টেডিয়ামের নির্মাণ কাজ শেষ হবে? তার উত্তরে মাহবুব আনাম কোন নির্দিষ্ট সময়ের কথা উল্লেখ না করে বলেছেন, ‘মূল স্টেডিয়ামের স্থাপনা, অবকাঠামো নির্মাণের আগে খেলার মাঠ, পিচ ও প্র্যাকটিস ফিল্ড তৈরির পরিকল্পনা আছে।’
বিসিবির লক্ষ্য, আগামী বছর অর্থ্যাৎ ২০২৪ সালে ওই আউটডোর প্র্যাকটিস ফিল্ড তৈরির কাজ শেষ করে সেটা ব্যবহার উপযোগি করে গড়ে তোলা হবে।
মাহবুব আনাম অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের উদাহরণ টেনে বোঝানোর চেষ্টা করেন, মেলবোর্ন স্টেডিয়ামেও খেলা আয়োজনের পর স্টেডিয়ামের অবকাঠামো তথা গ্যালারি ও নানা স্ট্যান্ড নির্মাণ কাজ হয়েছে। তার কথা, ‘আপনি দেখেছেন বিশ্বের অনেক জায়গায় স্টেডিয়ামের রিডেভেলপমেন্ট হয়। আপনি যদি মেলবোর্নের কথাও চিন্তা করেন, সেখানে যখন খেলা চলেছে, তখন এক দিকের গ্যালারি ছিল না। সেগুলো পর্যায়ক্রমে হয়েছে। আমাদের ঠিক ওই ধরনের কোনো পরিকল্পনায় যেতে হবে। যেন আমরা মাঠটাকে ব্যবহারের উপযোগী করতে পারি।’
সেটা কবে নাগাদ হতে পারে? অর্থ্যাৎ পূর্বাচল স্টেডিয়ামের মাঠ কবে নাগদ খেলা উপযোগি হতে পারে? এর উত্তরে মাহবুব আনাম জানালেন, ‘আউটডোর ফিল্ড, প্র্যাকটিস ফিল্ড হবে। দুটোকেই আমরা প্রিপেয়ার করা শুরু করব। এরপর আমরা বর্ষার আগে যদি মাঠগুলোকে প্রস্তুত করতে পারি, মাঠের যে ড্রেনেজ আর যে ফিল্ডিংটা দরকার, সেটা আমরা করে ফেলতে চাই। এখনো যদি আমরা উইকেটটা তৈরি করতে পারি, ফিল্ডিংগুলো তৈরি করি, আগামী বছরের ক্রিকেট মৌসুমের আগে সেখানে খেলা সম্ভব হবে না। সে জায়গাটায় আমরা থাকতে চাই।’
মাহবুব আনাম যোগ করেন, ‘আমরা আগামী মাসের মধ্যে গ্রাউন্ড লেভেলিং, উইকেট প্রস্তুত করার কাজটা শুরু করব। মে মাসের মাঝামাঝি উইকেট কনসাল্টেন্ট আসবে। আমরা এখন নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে কথা বলছি।’
মাঠ নিয়ে বিসিবি গ্রাউন্ডস কমিটি প্রধানের শেষ কথা, ‘এ বছর খুবই ডিফিকাল্ট। আমরা মাঠ তৈরি করে উইকেট প্রস্তুত করে আগামী বছরের প্রথমে আমরা খেলা পরিচালনা করতে পারব।’
বিসিবির নিজের অর্থায়নে নির্মিত এ স্টেডিয়ামের মোট ব্যয় কত হতে পারে? সে প্রশ্নর উত্তরেও মাহবুব আনাম সরাসরি কোন জবাব দেননি।
‘আমাদের মনে একটা এমাউন্ট আছে। তবে আমাদের কনসাল্টেন্ট আছেন, তারা এখন তাদের ডিটেইল ডিজাইনে রয়েছেন এবং ডিজাইনের সঙ্গে তারা আমাদের একটা বিওকিউ এবং একটা কস্টিং দেবেন। সেটা যখন আমরা হাতে পাব, তখন আমাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা হবে।’
তবে তার কথায় মোটামুটি ভাবে মনে হচ্ছে শেখ হাসিনা স্টেডিয়ামের নির্মাণ ব্যয় প্রায় ৫০০ কোটি টাকার ওপরে থাকবে। কারণ, সেখানে শুধু পূর্ণাঙ্গ ক্রিকেট স্টেডিয়ামই নয়, আরও অনেক স্থাপনা নির্মাণ হবে। মাহবুব আনামের আজকের কথা বার্তায় অবশ্য সে সম্পর্কে একটা ধারনা মিলেছে।
তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী পূর্বাচলে খালি মাঠ নয়, এখানে আমাদের একাডেমি ভবন হচ্ছে, বিসিবির একটা নিজস্ব ভবন হচ্ছে। একটা হোটেলের জায়গা ড্রয়িং করা অবস্থায় থাকবে। পরে আমরা এটা কনস্ট্রাকশনে যাব এবং এছাড়া ক্রিকেটার্স ক্লাব, তার সঙ্গে একাডেমি ও একটা অ্যাডিশনাল মাঠ হচ্ছে।’
এর বাইরে আরও একটি বড় ধরনের প্রকল্প আছে বিসিবির। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ অনুমোদিত অন্তত ৫টি স্পোর্টস ফেডারেশনকে বিশেষ জায়গা দেয়া হবে পূর্বাচলে। মাহবুব আনামের ভাষায়, ‘আমরা ৫ ফেডারেশনকে স্থাপনা দিচ্ছি।‘
বিসিবি গ্রাউন্ডস কমিটি চেয়ারম্যান জানান, সেটা যে এমনি এমনি তা নয়। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অনুরোধেই বিসিবি পূর্বাচল স্টেডিয়াম এলাকায় ৫ টি ফেডারেশনকে জায়গা দিতে রাজি হয়েছে।
মাহবুব আনাম বলেন, ‘এনএসসি অনুরোধ করেছে আমাদের যে, তাদের এখানে সংকুলান করা যায় কি না। সে কারণে আমরা ৫টা ফেডারেশনকে এখানে সংকুলান করব। তারা একটা তালিকা দিয়েছেন, তার অনুপাতেই আমরা কাজ করব। আমরা রি অ্যালোকেট করেছি, আমাদের ড্রয়িংয়ে আমরা অন্তর্ভুক্ত করেছি। তাদের ঢোকা ও বাইরের যায়গাটাও আমরা আলাদাভাবে করে দিচ্ছি। যাতে আমাদের কারও কোনো কাজে বিঘ্ন না ঘটে।
ওই ৫ ফেডারেশনের মধ্যে কি বাফুফে থাকতে পারে? মাহবুন আনামের উত্তর, ‘আমার মনে হয় ফুটবল একটা বড় ফেডারেশন। এ ধরনের ফেডারেশনের এখানে সংকুলান হওয়ার সম্ভাবনা নেই