ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন দুই বন্ধু। সেখানেই রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয় এক বন্ধুর। পরে শরীরে মেলে ভয়ঙ্কর বিষ সায়ানাইড। কে মারল? তদন্তে নেমে চক্ষু চড়কগাছ পুলিশের। একের পর এক ১১ জনকে বিষ দিয়ে খুনের অভিযোগ এক মহিলার বিরুদ্ধে। সকলেই ছিলেন তাঁর বন্ধু। মহিলা বর্তমানে অন্তঃসত্ত্বা বলে জানা গিয়েছে।
৩২ বছরের সারারত রাঙসিউথাপর্নকে গ্রেফতার করেছে থাইল্যান্ডের পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নিজের প্রাক্তন প্রেমিক-সহ মোট ১২ জন বন্ধুকে সায়ানাইড দিয়ে মেরেছেন। পুলিশ জানাচ্ছে, সারারতের শিকারদের প্রত্যেকেরই বয়স ৩৩ থেকে ৪৪ বছরের মধ্যে। ২০২০-এর ডিসেম্বর মাস থেকে ২০২৩-এর এপ্রিলের মধ্যে তিনি এই কাণ্ড সেরেছেন।
গত ১৪ এপ্রিল এক বান্ধবীর সঙ্গে রাচাবুরি প্রদেশে গিয়েছিলেন সারারত। সেখানে তাঁদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার কথা ছিল। সেখানেই নদীর ধারে সংজ্ঞা হারান সারারতের বন্ধু। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তে শরীরে পাওয়া যায় সায়ানাইড। কিন্তু শরীরে সায়ানাইড এল কোথা থেকে? তদন্তের গভীরে পৌঁছে হতবাক হয়ে যান তদন্তকারীরা। তাঁরা খেয়াল করেন, ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে শুরু করে সারারতের একের পর এক বন্ধুর মৃত্যু হয়েছে রহস্যজনক ভাবে। তাহলে কি প্রত্যেককেই সায়ানাইড প্রয়োগ করেই খুন করা হয়েছে? তা বোঝার জন্য প্রয়োজন ময়নাতদন্তের। পুলিশ সেই পরীক্ষার পর নিশ্চিত হয়, খুনী একজনই। স্বভাবতই সারারতের উপর পুলিশের সন্দেহ আরও গাঢ় হয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত্যুর পর কারও কাছেই ফোন, টাকাপয়সা, ব্যাগ, কিছু ছিল না। তা থেকে পুলিশ মনে করছে, চুরির উদ্দেশ্যেই পর পর খুন করে গিয়েছেন ৩২ বছরের সারারত। কিন্তু নিজের কাছের বন্ধুদের এ ভাবে বিষপ্রয়োগে খুন করার কারণ টাকা চুরি, এত সহজ সমাধানসূত্রে পুরোপুরি ভরসা রাখতে পারছে না থাইল্যান্ডের পুলিশ।
এ দিকে সারারত অন্তঃসত্ত্বা। তিনি সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেছেন। তাঁর আইনজীবী অভিযোগ করেছেন, মক্কেলকে এমন সমস্ত কথা বলতে বলা হচ্ছে, তাতে তিনি মানসিক অশান্তিতে পড়ে যাচ্ছেন। এতে গর্ভস্থ ভ্রুণের ক্ষতির সম্ভাবনা আছে বলেও দাবি আইনজীবীর। যদিও পুলিশ সারারতকে গ্রেফতার করেছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ধারাবাহিক হত্যারহস্যের জট খোলা সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে।