০৫ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ১০:৪৩:৩১ অপরাহ্ন


জঙ্গিবাদ, মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলুন : প্রধানমন্ত্রী
অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৯-০৪-২০২৩
জঙ্গিবাদ, মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলুন : প্রধানমন্ত্রী ফাইল ফটো


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মসজিদে খুতবা পড়ার সময় জঙ্গিবাদ, মাদক, দুর্নীতি এবং নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে কথা বলতে দেশের আলেম-উলামা ও খতিবদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ আলেম-উলামা, খতিব ও ইমামদের শ্রদ্ধা করে। তাই আপনাদের কথাবার্তা বা আলাপ-আলোচনা তাদের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ।’

প্রধানমন্ত্রী গতকাল সোমবার চতুর্থ ধাপে দেশজুড়ে ৫০টি মডেল মাদরাসা ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধনের সময় এ কথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

আলেম-উলামা, খতিব ও ইমামদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা যদি মসজিদে বয়ানের সময় নারীর প্রতি সহিংসতা, জঙ্গিবাদ, মিথ্যা গুজবের অপপ্রচার, গৃহকর্মীদের প্রতি অমানবিক আচরণ এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে বেশি বেশি আলোচনা করেন তাহলে জনগণ তা গ্রহণ করবে।’ তিনি বিশেষ করে জুমার নামাজের আগে খুতবা পাঠে এসব বিষয় আলোচনা করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

প্রধানমন্ত্রী আলেমদের ইসলামের মর্মবাণী সম্পর্কে খুতবা প্রচার করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, কখনো কখনো স্বার্থান্বেষী মহল কোমল হূদয়ের শিশুদের বিভ্রান্তির পথে নিয়ে যায়। তিনি বলেন, ইসলাম যে শান্তির ধর্ম, এই শিশুদের তা সঠিকভাবে শেখানো হলে তারা অবশ্যই সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িত হবে না। পাশাপাশি তিনি আলেম-উলামাসহ সব ধর্মপ্রাণ মানুষকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান, যাতে কেউ পবিত্র ইসলামকে কলুষিত করতে না পারে।

ইসলাম শান্তির ধর্ম উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদে লিপ্ত কিছু লোক এই শান্তির ধর্মের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে। তারা ভুল পথ নিয়েছে। আমাদের সবাইকে এই বিষয়ে বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে।’

জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদকে সমাজের হুমকি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এগুলো মানুষের জীবন কেড়ে নেয়, বিভ্রান্ত করে। মানুষকে এসব বিপদ থেকে দূরে রাখতে পদক্ষেপ নিতে হবে।

কেউ যাতে মাদকে আসক্ত না হয় সে জন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, পরিবারে মাদকাসক্ত শিশু থাকলে তা ধ্বংসের পথে চলে যায়। তাই কেউ যেন মাদকে আসক্ত না হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইসলাম শান্তির ধর্ম। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। ইসলামও আমাদের শিক্ষা দেয়, অন্য ধর্মের প্রতি আমাদের সহনশীল হতে হবে। প্রত্যেকে নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে এবং এটা বাংলাদেশের সংবিধানেও বলা আছে।’

দেশের স্বাধীনতা অর্জনে ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সবাই রক্ত দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে প্রত্যেকে তাদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করবে। আমরা আল্লাহর ওপর বিশ্বাস রেখে আমাদের দেশ চালাই। সবার সমান অধিকার আছে এবং আমরা তা বিশ্বাস করি।’

মডেল মসজিদ প্রতিষ্ঠার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ যাতে ইসলামের সঠিক পথ অনুসরণ করতে পারে এবং ইসলামের মর্মবাণী সঠিকভাবে জানতে ও বুঝতে পারে সে জন্য তাঁর সরকার মসজিদগুলো নির্মাণ করেছে।

এই মসজিদগুলো সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রচারের পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদ ও নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টিতেও ভূমিকা রাখবে।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান এবং মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী এনামুল হাসান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া।

গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া উপজেলা এবং সিলেট জেলার বিশ্বনাথ উপজেলার স্থানীয় সংসদ সদস্য, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সরকারি কর্মকর্তা, আলেম-উলামাসহ সাধারণ মানুষ এ কর্মসূচিতে যুক্ত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।