২৮ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১১:৩০:৫৫ পূর্বাহ্ন


দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে নেতাকর্মীদের সতর্ক করলেন
অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৪-০৪-২০২৩
দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে নেতাকর্মীদের সতর্ক করলেন ফাইল ফটো


প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা তার দলের নেতাদের আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে দলকে আরো শক্তিশালী করার পাশাপাশি যেকোনো ধরনের দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে বলেছেন। তিনি বলেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে ষড়যন্ত্র চালানো হচ্ছে। অনেকেই এমন গতিতে একটি দেশের অগ্রগতি চায় না তাই, তারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কাজ করছে।
আওয়ামী লীগের সারা দেশের জেলা শাখার নেতাকর্মীরা গতকাল বুধবার গণভবনে তার সাথে দেখা করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। এ সময় সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, তার সরকার ২০০৯ সাল থেকে টানা তিন মেয়াদে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকারের কঠোর পরিশ্রমের কারণে দারিদ্র্যের হার ২০০৬ সালের ৪১ শতাংশ থেকে ২০২৩ সালে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে নেমে এসেছে এবং অতি-দরিদ্রের হার ২৫ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে এসেছে। তিনি বলেন, তার সরকার দ্রুততম সময়ে দারিদ্র্যের হার আরো দুই বা তিন শতাংশ কমিয়ে আনার প্রচেষ্টাকে আরো গতিশীল করবে।


শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে কোনো অতি-দরিদ্রতা থাকবে না। তিনি আরো বলেন, তার সরকার বিনা খরচে বাড়ি প্রদান, স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া এবং দেশবাসীর অবস্থার পরিবর্তনের জন্য শিক্ষার হার বৃদ্ধিসহ সবকিছুই করছে।


আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তার দল ক্ষমতায় এলে জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়।
জাতীয় নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ছে উল্লেখ করে তিনি আওয়ামী লীগকে আরো শক্তিশালী করে জনগণের কল্যাণে আরো সম্মিলিতভাবে কাজ করার জন্য দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আমরা চাই আওয়ামী লীগের সংগঠন আরো শক্তিশালী হোক।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির মতো দল মাটি ও মানুষের দল নয়।


পদ্মা সেতুর সুফল দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ পেলেও বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন দেখতে পাচ্ছেন না বলে প্রধানমন্ত্রী বিএনপি নেতা ও তাদের সমমনাদের কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি আরো বলেন, তারা কোনো উন্নয়ন দেখছে না। তারা প্রতিদিনই এমন কি রমজানের দিনেও উচ্চকণ্ঠে মিথ্যা কথা বলছে। কেন তারা এমন করছে- আমি তা বুঝতে পারছি না বলেন প্রধানমন্ত্রী।


আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, তার সরকার জনগণের জন্য কাজ করেছে আর এ কারণেই জনগণ তার দলকে ভোট দিয়েছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য কোনো ভোট কারচুপির প্রয়োজন নেই কারণ তারা সবসময় জনগণের সেবা করে তাদের আস্থা অর্জন করে ক্ষমতায় আসে। আওয়ামী লীগ কখনোই ভোট ছাড়া ক্ষমতায় আসে না। তিনি বলেন, যারা নির্বাচনের কথা বলছে, তারা বন্দুকের মুখে ক্ষমতায় এসেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাই, জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে।
ঢাকা-কলম্বো সহযোগিতা জোরদারের আহ্বান : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিনিয়োগ, কৃষি, মৎস্য, ওষুধ, সামুদ্রিক যোগাযোগ এবং উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বাড়ানোর প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে।


ঢাকায় শ্রীলঙ্কার বিদায়ী হাইকমিশনার অধ্যাপক সুদর্শন ডিএস সেনেভিরাইন গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সাথে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সাক্ষাৎকালে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ প্রতিবেশীদের সাথে বিশেষ করে শ্রীলঙ্কার সাথে সম্পর্ককে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়, যা ঐতিহাসিক বন্ধন এবং ব্যাপক অভিন্নতার ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে ঐতিহাসিক বন্ধন রয়েছে যেখানে প্রতিবেশীদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখার ওপর জোর দেয়া হয়েছে।
অধ্যাপক সুদর্শন ডিএস সেনভিরাইন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আর্থসামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন। হাইকমিশনার পদ্মা সেতুর মতো মাতারবাড়ি ও পায়রার বন্দর প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ কানেক্টিভিটির বড় আঞ্চলিক হাবে পরিণত হবে।


শ্রীলঙ্কার হাইকমিশনার বলেন, তার দেশ বাণিজ্য, পর্যটন, গভীর সমুদ্রবন্দর এবং ওষুধ খাতে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে আগ্রহী। তিনি পররাষ্ট্রনীতিতে বাংলাদেশের ভারসাম্য রক্ষার ফর্মুলার প্রশংসা করেন। হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশে অবস্থানকালে তিনি এ দেশের জনগণের সাথে মিশে গিয়েছিলেন। এ সময় অ্যাম্বাসেডর-এট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
সরকার সব ধর্মের মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে কাজ করে : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার দল আওয়ামী লীগ যখনই সরকারে থাকে, সব ধর্মীয় বিশ্বাসের মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে সব সময় কাজ করে।
বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ গতকাল গণভবনে তার সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাস গুপ্তের নেতৃত্বে বৈঠকে নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশে চাকরি, নিয়োগ, পদোন্নতির মতো সব ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর হয়েছে। তারা বিভিন্ন ধর্মের মানুষ স্বাধীনভাবে তাদের ধর্মীয় রীতি পালন করায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্মল কুমার চ্যাটার্জি উপস্থিত ছিলেন।