প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দলের সদস্যদের সতর্ক করে বলেছেন, স্বার্থান্বেষী মহল বাংলাদেশের দ্রুত অগ্রগতি সহ্য করতে পারে না বলে ভবিষ্যতে দেশের বিরুদ্ধে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে অনেক ষড়যন্ত্র করা হতে পারে। তিনি বলেন,আগামী দিনে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে অনেক ষড়যন্ত্র হবে। কারণ, যারা দেশের ব্যাপক উন্নয়ন করতে চায় না তারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কাজ করছে।
বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন জেলা শাখার নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে দেখা করতে গেলে এ মন্তব্য করেন দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি আওয়ামী লীগ নেতাদের আগামী সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে শক্তিশালী সংগঠন হিসেবে দলকে কাজ করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অগ্রগতি যাতে অব্যাহত থাকে সেটি আপনাদের মাথায় রেখে কাজ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার জনগণের কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ‘তাই, জনগণ আমাদের ভোট দেয়। এটা বাস্তবতা। সুতরাং, আমাদের ভোট কারচুপির দরকার নেই। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের সেবা করে তাদের আস্থা অর্জন করে ক্ষমতায় আসে, আওয়ামী লীগ সব সময় ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে।
বাংলাদেশের উন্নয়নে তার সরকারের সাফল্যকে কেন্দ্র করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি সাম্প্রতিক পদ্মা সেতু নির্মাণের মাধ্যমে দেশের দক্ষিণাঞ্চলকে রাজধানীর সঙ্গে যুক্ত করেছে এবং এর আগে ১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণের মাধ্যমে উত্তরাঞ্চলকে সংযুক্ত করেছে।
তিনি বলেন, সমগ্র বাংলাদেশে সংযোগের সুযোগ তৈরি হয়েছে। তাই, দেশ আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করছে এবং আরও প্রত্যক্ষ করবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার শতভাগ ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে, স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করছে, শিক্ষার হার বাড়িয়েছে এবং শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার কমিয়েছে।
তিনি বলেন, একটি দেশের উন্নয়নের জন্য যা যা প্রয়োজন তার সরকার সফলভাবে করতে সক্ষম হয়েছে।
সাম্প্রতিক মাথাপিছু আয় ও ব্যয় সমীক্ষার ফলাফলের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দারিদ্র্যের হার ২০০৬ সালের ৪১ শতাংশ থেকে এখন ১৮ দশমিক সাত শতাংশে নেমে এসেছে এবং চরম দারিদ্র্যের হার ২০০৬ সালের ২৫ শতাংশ থেকে পাঁচ দশমিক ছয় শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, ‘দেশে কোনো মানুষ চরম দরিদ্র থাকবে না।’
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার প্রমাণ করেছে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় মানেই জনগণের ভাগ্যের উন্নতি হয়।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, সামরিক স্বৈরশাসকের পকেট থেকে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির জন্ম। তিনি বলেন, বিএনপি, জাতীয় পার্টির মতো দল মাটি ও জনগণ থেকে উঠে আসেনি। যেহেতু দুই দল বন্দুক নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে, জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন দেখতে না পাওয়ায় বিএনপি নেতা ও তাদের সমমনাদের সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, তারা প্রতিদিন মাইকে প্রতিদিন মিথ্যা বলতেছে। আমি বুঝতে পারছি না কেন তারা রোজার দিনেও মিথ্যা কথা বলে!
তিনি স্মরণ করেন যে ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ৩০০ আসনের মধ্যে মাত্র ২৯টি আসনে জিতেছিল, যদিও সেই নির্বাচন নিয়ে কেউ কোনো প্রশ্ন তুলতে পারেনি। তিনি বলেন, বিএনপির অবস্থান এখনো অপরিবর্তিত রয়েছে।