১২ মে ২০২৪, রবিবার, ১২:১৩:৫৭ পূর্বাহ্ন


নাটোরে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ট্যাব চুরি করে প্রকৃত প্রাপককে ফেরত দিলেন শিক্ষক
অনলাইন ডেস্ক :
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৯-০৪-২০২৩
নাটোরে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ট্যাব চুরি করে প্রকৃত প্রাপককে ফেরত দিলেন শিক্ষক নাটোরে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ট্যাব চুরি করে প্রকৃত প্রাপককে ফেরত দিলেন শিক্ষক


নাটোর জেলার গুরুদাসপুরের নাজিরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ট্যাব বিতরণে অনিয়মের প্রতিবাদ করায় প্রতিবাদকারীর ওপর ক্ষুব্ধ হন সহকারী শিক্ষক মো. আকরামুল ইসলাম। এ সময় তার দেওয়া বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। পরে তিনি ট্যাব ফেরত দিলেন প্রকৃত প্রাপককে। 

ওই শিক্ষক বক্তব্যে বলেছেন, ‘আমাদের চুরি করার ক্ষমতা আছে, চুরি করেছি, আমাদের ছেলেমেয়েদের ট্যাব দিয়েছি, তাতে আপনার কি?’ 

এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও মুহুর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। শুক্রবার সকাল ১০টার সময় এ ঘটনা ঘটে স্থানীয় এক ব্যক্তির সঙ্গে নাজিরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ নিন্দা জানিয়েছেন। 

আকরামুল ইসলাম গোপিনাথপুর গ্রামের মৃত সোহরাব হোসেনের ছেলে। তিনি ওই বিদ্যালয়ে ২০০৪ সাল থেকে সহকারী শিক্ষকের (বাণিজ্য বিভাগ) দায়িত্বে আছেন। প্রতিবাদকারী ব্যক্তি মকুল হোসেনের বাড়ি একই এলাকার নাজিরপুর নতুনপাড়ায়।

অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে হুমকির শিকার হওয়া ব্যক্তি মো. মকুল হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার উপজেলাব্যাপী প্রধানমন্ত্রীর উপহারস্বরূপ মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে ট্যাব বিতরণ করা হয়। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন নাজিরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীরা কেউ ট্যাব পায়নি। ট্যাব পেয়েছে প্রধান শিক্ষকের ভাতিজি ও ভাগ্নি, সহকারী শিক্ষক মো. সুলতান হোসেনের মেয়ে, সহকারী শিক্ষক মো. আকরাম হোসেনের ছেলে, সহকারী শিক্ষক সাইদুল ইসলামের মেয়ে, বিদায়ী একজন শিক্ষার্থীসহ আরও একজন সহকারী শিক্ষকের ছেলে। 

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের ছেলেমেয়ে হওয়ার সুবাদে তারা ট্যাব পেয়েছে। মূলত প্রকৃত মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে ট্যাব কেন দেওয়া হলো না এ বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী শিক্ষক আকরামুল ইসলাম তার ওপর উত্তেজিত হন। একপর্যায় তিনি বলেন, আমাদের ক্ষমতা আছে, তাই আমরা চুরি করেছি, আমাদের ছেলেমেয়েদের দিয়েছি। তাতে আপনার সমস্যা কি। এ ছাড়া সে তার ওপর বারবার আক্রমণ করার চেষ্টা করে। মনে হচ্ছিল আর কোনো কথা বললেই তাকে ধরে মারবে। তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এই শিক্ষকের বিচার দাবি করেন।

শিক্ষক আকরামুল ইসলাম জানান, উত্তেজিত হয়ে ভুলবশত বলে ফেলেছি। তা ছাড়া ওই ব্যক্তি মকুল হোসেনের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব থাকার কারণে কথার প্রসঙ্গে কথাটি বের হয়ে গেছে। এটি আমার ভুল হয়েছে।

প্রধান শিক্ষক মো. ফরিদ মণ্ডল বলেন, একটু ভুলভ্রান্তির কারণে এ সমস্যা হয়েছে। ট্যাব যাদের দেওয়া হয়েছিল, তাদের কাছ থেকে ফেরত নিয়ে প্রকৃত মেধাবী শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। সহকারী শিক্ষকের উত্তেজিত বিষয়ে তার জানা নেই।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সেলিম আকতার বলেন, ইতোমধ্যে ওই বিদ্যালয়ের অভিযোগটি আমলে নেওয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সহকারী শিক্ষক যে কথা বলেছেন, সেটি তিনি বলতে পারেন না। অভিভাবক অভিযোগ দিলে খতিয়ে দেখা হবে।