সংগ্রামের পাশাপাশি যৌনকর্মীদের জীবনে রোমাঞ্চও কিন্তু কম নয়। দেহব্যবসার মাঝেই জীবনকে উপভোগ করার সুযোগ রয়েছে তাঁদের সামনে। যাঁরা তা করতে পারেন, তাঁরাই সংগ্রামে জিতে যান।
যৌনকর্মীদের মধ্যে অনেকে ‘পার্টি এসকর্ট’ হিসাবে কাজ করেন। জীবনের রোমাঞ্চ খোঁজার সুযোগ তাঁদের হাতে বেশি। যাঁরা তাঁদের কাছে সুখ খুঁজতে আসেন, তাঁদের সঙ্গ দিতে গিয়ে যৌনকর্মীরাও মেতে ওঠেন আনন্দে।
ইংল্যান্ডের এক জনপ্রিয় ‘পার্টি এসকর্ট’ মিয়া। সংবাদ সংস্থা ডেলি স্টারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, কার সঙ্গে তিনি সময় কাটাবেন, তা তিনি নিজেই ঠিক করেন। পছন্দমতো সঙ্গী বেছে নিয়ে পার্টির উন্মাদনায় গা ভাসিয়ে দেন।
মিয়া জানান, নিজের এই পেশাকে তিনি খুবই উপভোগ করেন। এই পেশা কেবলমাত্র যৌনতা বা সঙ্গমসর্বস্ব নয়। তাতে রয়েছে বন্ধুত্ব আর আনন্দের ছোঁয়া।
‘পার্টি এসকর্ট’রা মূলত সঙ্গীর সঙ্গে পার্টি বা যে কোনও উদ্যাপনের অনুষ্ঠানে যান। সেখানে গেলে নানা রকম মানুষের সংস্পর্শে আসেন তাঁরা। সমাজের উঁচু তলা থেকে একেবারে তৃণমূল স্তরের সকলের সঙ্গেই তাঁরা সমান ভাবে মেশেন।
মিয়া জানান, অভিজ্ঞতার কারণে ‘পার্টি এসকর্ট’ হিসাবে যোগ্যতা এবং সম্মান অর্জন করতে পেরেছেন তিনি। সেই কারণেই কার সঙ্গে কখন কোথায় যাবেন, তিনি নিজে বেছে নিতে পারেন। সকলের কাছে সেই সুযোগ অবশ্য থাকে না, স্বীকার করে নিয়েছেন মিয়া।
মিয়ার সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য তাঁকে ফোন করে আগে থেকে সাক্ষাতের পরিকল্পনা করে রাখতে হয়। হোয়াটস্অ্যাপে ফোন করলে তিনি উত্তর দেন না। আগে থেকে চিনে, আলাপ করে তবেই পার্টি বা অন্য কোনও অনুষ্ঠানের আসরে যেতে রাজি হন মিয়া।
মিয়া বলেছেন, পার্টিতে যেতেই তাঁর সব থেকে ভাল লাগে। কারণ, সেখানে প্রতি মুহূর্তে থাকে অনিশ্চয়তার হাতছানি। আলো আঁধারি আসরে কখন যে কী হবে, কোন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে, আগে থেকে বোঝার উপায় নেই।
আলো-আঁধারির এই রোমাঞ্চ উপভোগ করেন মিয়া এবং তাঁর মতো ‘পার্টি এসকর্ট’রা। কখনও সঙ্গীর সঙ্গে গানের তালে তালে তাঁদেরও কোমর দোলাতে হয়, কখনও আবার পার্টিতেই তাঁরা মেতে ওঠেন উদ্দাম যৌনতায়।
‘পার্টি এসকর্ট’দের কাছে যাঁরা সঙ্গ খুঁজতে আসেন, তাঁদের বয়স ২২ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। অর্থাৎ, যুবক থেকে বৃদ্ধ— যে কোনও বয়সের মানুষই যে কোনও সময় তাঁদের দ্বারস্থ হন।
শুধু তা-ই নয়, কখনও কখনও যুগলের কাছ থেকেও ডাক পান ‘পার্টি এসকর্ট’রা। দুই সমকামী পুরুষ কিংবা নারীর সঙ্গে সময় কাটিয়ে অন্য উন্মাদনায় মেতে ওঠেন।
মিয়া জানিয়েছেন, তিনি ‘পার্টি এসকর্ট’ হিসাবে পেশাগত ভাবে যা যা করেন, ব্যক্তিগত জীবনেও তা করতে ভালবাসেন। সেই কারণেই নিজের পেশাকে তিনি এত উপভোগ করেন।
যৌনপেশায় অবশ্য ঝুঁকিও রয়েছে, স্বীকার করে নেন ‘পার্টি এসকর্ট’রা। সঙ্গ দিতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রে বড় কোনও ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে তাঁদের। এমনকি, অপরাধীদের আখড়ায় গিয়ে থাকে মৃত্যুর আশঙ্কাও।
তবে শুধু নিজের আনন্দ নয়, উল্টো দিকের মানুষটাকে আনন্দ দেওয়াই ‘পার্টি এসকর্ট’দের মূল লক্ষ্য। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও সে দিকে নজর রাখতে ভোলেন না মিয়া এবং তাঁর সহকর্মীরা।