রাজশাহীর বাঘা উপজেলার খোর্দ্দ বাউসা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (সাময়িক বহিষ্কৃত) মশিউর রহমানকে বেঁধে পেটানোর হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের ম্যানেজি কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে।
বিদ্যালয়ে একটি তদন্ত চলাকালীন সময়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের উপস্থিতিতে এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি রিবন আহমেদ বাপ্পি ও আড়ানী পৌর মেয়র মুক্তার আলীর বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় শিক্ষক সমাজসহ উপজেলাজুড়ে বইছে সমালোচনার ঝড়।
প্রধান শিক্ষক মশিউর রহমান বলেন, আমার বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ উত্থাপন করে অন্যায়ভাবে আমাকে ১৫ অক্টোবর -২০২০ তারিখে সাময়িক বরখাস্ত করেন তৎকালীন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আড়ানি পৌরসভার মেয়র মুক্তার আলী। পরে তিনি তাঁর জামাতা আড়ানি পৌর আ'লীগের সাধারণ সম্পাদক রিমন হোসেন বাপ্পিকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে সভাপতি নির্বাচিত করেন। কিছুদিন পর আমার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলো নিষ্পত্তি হওয়ায় সভাপতি বরাবর প্রধান শিক্ষক পদে আমাকে পুনর্বহাল ও বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে লিখিত ও মৌখিকভাবে অনুরোধ জানাই। কিন্তু তিনি আমার আবেদন আমলে না নিয়ে আমাকে স্থায়ী বরখাস্তের পরিকল্পনা করছেন এবং বিদ্যালয়ে নুতন করে চারটি পদে চাকুরী দেবার প্রক্রিয়া করছেন।
নিরুপায় হয়ে আমি আমার পুনর্বহাল এবং অবৈধ নিয়োগ প্রক্রিয়া সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে গত ৬ মার্চ জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করি। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত(২৯ মার্চ) উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিদ্যালয়ে তদন্তে আসেন। সেখানে ১৫/২০টা মটরসাইকেল যোগে উপস্থিত হন বতর্মান সভাপতি রিবন আহমেদ বাপ্পি ও তাঁর শ্বশুর আড়ানি পৌর মেয়র মুক্তার মুক্তার আলী।
সেখানে তদন্ত চলাকালীন সময়ে শ্বশুর জামাতা মিলে আমাকে চরমভাবে শাসনগর্জন করেন এবং বলেন, তিন দিনের মধ্যে অভিযোগ প্রত্যাহার না করলে এবং নতুন করে কোন অভিযোগ দিলে আড়ানি বাজারে বেঁধে পেটাব,কথাটি যেন মনে থাকে। আর তার শ্বশুর সাবেক সভাপতি মুক্তার হোসেন বলেন, শিক্ষা সচিব আমার ক্লোজ বন্ধু, আমার বা আমার জামাতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে কোন ফায়দা হবেনা। এ সময় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে প্রাণনাশের হুমকিও দেন তারা।
এ বিষয়ে রিমন আহম্মেদ বাপ্পিকে মুঠোফোনে ফোন করা হলে সে ফোন ধরেনি।
উপজেলা ম্যধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই রকমভাবে কথা হয়েছে কিনা আমি ঠিক মনে করতে পারছি না। তবে এ ধরনের কথা না হওয়ারই কথা। তবে, রোববার অফিসে আসেন বিষয়টি ভালোভাবে শুনব।
জেলা শিক্ষা অফিসার মোহা: নাসীর উদ্দিন এ বিষয়ে বলেন, বিষয়টি আমাকে মুঠোফোনে জানানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোন ধরনের অনিয়ম থাকলে ছাড়পত্র দেয়া হবেনা এবং আইনি কোন জটিলতা না থাকলে বহিষ্কৃত প্রধান শিক্ষককে স্বপদে ফেরানোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শারমিন আখতার বলেন, এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।