০৫ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ০২:০৯:৪৫ অপরাহ্ন


এক বছরে বাংলাদেশী পোশাক আমদানি বেড়েছে ৫২%
অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০১-০৪-২০২৩
এক বছরে বাংলাদেশী পোশাক আমদানি বেড়েছে ৫২% File Photo


দেশের অর্থনীতির অন্যতম স্তম্ভ হিসেবে বিবেচনা করা হয় তৈরি পোশাক খাতকে। রফতানির ক্ষেত্রে খাতটি ধারাবাহিক অগ্রগতি ধরে রেখেছে। সর্বশেষ ২০২২ সালেও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) ২৭টি দেশ বাংলাদেশ থেকে ২ হাজার ১৮০ কোটি ইউরোর পোশাক আমদানি করেছে। এ হিসাবে শীর্ষ আমদানিকারক চীনের পরেই বাংলাদেশের অবস্থান। আগের বছরের তুলনায় বাংলাদেশী পোশাকপণ্য আমদানি বেড়েছে ৫২ দশমিক ৫৪ শতাংশ। ইইউর জন্য বাংলাদেশ পোশাক আমদানির দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎস হিসেবে উঠে এলেও আমদানি প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে রয়েছে তৃতীয় স্থানে। ভিয়েতনাম ৫৩ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ ও কম্বোডিয়া ৫২ দশমিক ৭১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে যথাক্রমে প্রথম ও দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। ইউরোপীয় সংস্থা ইউরোস্ট্যাটের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে এসব তথ্য উঠে এসেছে।


পরিসংখ্যান বলছে, ২০২২ সালে ইইউ বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে ৯ হাজার ৮৩৮ কোটি ইউরো মূল্যের পোশাক আমদানি করে, যা ২০২১ সালে ছিল ৭ হাজার ২২২ কোটি ইউরো। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে ইইউর পোশাক আমদানিতে প্রবৃদ্ধির হার ৩৬ দশমিক ২১ শতাংশ।

ইউরোস্ট্যাটের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত বছর প্রবৃদ্ধিতে তৃতীয় অবস্থানে থাকা বাংলাদেশ থেকে ইইউর দেশগুলো ২ হাজার ১৮০ কোটি ইউরোর পোশাক আমদানি করেছে। আগের বছর করা হয়েছিল ১ হাজার ৪২৯ কোটি ইউরোর পোশাক। অন্যদিকে গত বছর প্রবৃদ্ধিতে এগিয়ে থাকলেও ইইউ বাংলাদেশের তুলনায় ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়া থেকে কম পণ্য আমদানি করেছে। প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২১ সালে ভিয়েতনাম থেকে ২৮৬ কোটি ইউরোর তৈরি পোশাক আমদানি করা হয়েছিল। ২০২২ সালে তা বেড়ে হয় ৪৩৮ কোটি ইউরো। একইভাবে কম্বোডিয়া থেকে ইইউর দেশগুলো ২০২১ সালে পোশাক আমদানি করেছিল ২৩৯ কোটি ইউরোর, যা ২০২২ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ৩৬৪ কোটি ইউরো।

ইইউর ২৭টি দেশে সবচেয়ে বেশি পোশাক রফতানি করে চীন। ২০২২ সালে ৩২ দশমকি শূন্য ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করা চীন রফতানি করেছে ২ হাজার ৮৮৮ কোটি ইউরোর তৈরি পোশাক, যা আগের বছর ছিল ২ হাজার ১৮৭ কোটি ইউরো।


এ বিষয়ে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘এ পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে চীন আমাদের সবচেয়ে বড় প্রতিযোগী দেশ। যদিও ইইউতে তৈরি পোশাক রফতানির ক্ষেত্রে তুরস্ক তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে, কিন্তু দেশটিকেও আমরা প্রতিযোগী হিসেবেই দেখছি। তবে পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশের গ্রোথ তুলনামূলক অনেক ভালো। গত বছরের প্রথম ছয় মাস রফতানি পরিস্থিতি ভালো ছিল। কভিড-পরবর্তী ওই সময়টায় আমরা অগ্রগতি ধরে রেখেছিলাম। চীন, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ায় কভিডসহ নানা ইস্যুতে অস্থিরতা ছিল। ওই সময়টায় আমরা নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারায় অগ্রগতি ভালো হয়েছে। তবে কাঁচামালসহ সবকিছুর মূল্যবৃদ্ধি এবং শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধির ফলে এ গ্রোথের পরও মালিকরা খুব বেশি লাভবান হননি। তবে আমাদের তৈরি পোশাক খাত এগিয়ে যাচ্ছে এটি সত্য।’

প্রবৃদ্ধি প্রসঙ্গে মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে ক্রেতাদের বাংলাদেশের প্রতি আস্থা বেশি। নতুন নতুন পণ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ভালো করছে। উপকরণের মূল্যবৃদ্ধির কারণে পণ্যের দামও বেড়েছে, যা প্রবৃদ্ধিতেও যোগ হয়েছে। বর্তমানে ২০২৩-এ আমাদের তৈরি পোশাক খাত কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধির কারণে কিছু অসুবিধার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমি আশা করছি, আগামী বছর আমরা আরো ভালো করতে পারব।’

ইউরোস্ট্যাট বলছে, আলোচ্য সময়ে তুরস্ক থেকে ইইউর পোশাক আমদানি ২৩ দশমিক ৫২ শতাংশ বেড়েছে। দেশটি থেকে ২০২২ সালে ১ হাজার ১৩৮ কোটি ইউরোর তৈরি পোশাক আমদানি করা হয়। ভারত থেকে আমদানি বেড়েছে ৩৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ। গত বছর দেশটি থেকে ৪৬১ কোটি ইউরোর পোশাক আমদানি করেছে ইইউ। একই সময়ে পাকিস্তানে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ৪৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ, আমদানি করা হয়েছে ৩৭৬ কোটি ইউরোর তৈরি পোশাক।