০৫ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ১১:২৮:৩৪ পূর্বাহ্ন


বায়ু দূষণে দেশে অকাল মৃত্যুর হার ২০ শতাংশ: বিশ্ব ব্যাংক
অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৮-০৩-২০২৩
বায়ু দূষণে দেশে অকাল মৃত্যুর হার ২০ শতাংশ: বিশ্ব ব্যাংক ছবি: সংগৃহীত


বাংলাদেশে মোট অকালমৃত্যুর প্রায় ২০ শতাংশই বায়ু দূষণের কারণে হয় বলে জানানো হয়েছে বিশ্ব ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে।

মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) ঢাকায় প্রকাশিত 'স্ট্রাইভিং ফর ক্লিন এয়ার: এয়ার পলিউশন অ্যান্ড পাবলিক হেলথ ইন সাউথ এশিয়া' শীর্ষক গবেষণাপত্রে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিশ্বব্যাংক জানায়, বিশ্বে বায়ু দূষণের তালিকায় শীর্ষ ১০ শহরের মধ্যে ৯টিই দক্ষিণ এশিয়ার। এরমধ্যে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা অন্যতম।

দক্ষিণ এশিয়ায় বায়ু দূষণ এবং জনস্বাস্থ্য প্রতিবেদন অনুযায়ী- সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এবং দরিদ্র অঞ্চলে কিছু সূক্ষ্ম কণা, যেমন- কাচ এবং ছোট ধূলিকণার ঘনত্ব বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানের চেয়ে ২০ গুণ বেশি। এর ফলে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রতিবছর আনুমানিক ২ মিলিয়ন মানুষের অকালমৃত্যু ঘটায়। এই ধরনের চরম বায়ু দূষণের সংস্পর্শে শিশুদের মধ্যে স্টান্টিং এবং হ্রাসকৃত জ্ঞানীয় বিকাশ থেকে শুরু করে শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ এবং দীর্ঘস্থায়ী ও দুর্বল রোগের প্রভাব রয়েছে। এতে স্বাস্থ্যসেবার ব্যয় বৃদ্ধিসহ দেশের উৎপাদন ক্ষমতা কমিয়ে দেয় এবং কর্মঘণ্টা নষ্ট করে।

বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক জানান, বায়ু দূষণ জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি গুরুতর হুমকি সৃষ্টি করে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর এর বড় প্রভাব রয়েছে। সঠিক পদক্ষেপ এবং নীতির মাধ্যমে বায়ু দূষণ মোকাবিলা করা সম্ভব। বাংলাদেশ এরই মধ্যে বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালার অনুমোদনসহ বায়ুর মান ব্যবস্থাপনার উন্নতির জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে। শক্তিশালী জাতীয় পদক্ষেপের পাশাপাশি, বায়ু দূষণ রোধে আন্তঃসীমান্ত সমাধান গুরুত্বপূর্ণ হবে। বিশ্লেষণমূলক কাজ এবং নতুন বিনিয়োগের মাধ্যমে বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশকে বায়ু দূষণ কমাতে সাহায্য করছে বলে জানান তিনি।

তিনি আরও জানান, দক্ষিণ এশিয়ার ছয়টি প্রধান এয়ারশেড চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে বাতাসের গুণমানে আত্মনির্ভরতা বেশি। বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল এবং পাকিস্তান, ইন্দো গাঙ্গেয় সমভূমিতে বিস্তৃত একটি সাধারণ এয়ারশেড শেয়ার করে। প্রতিটি এয়ারশেডের কণা বিভিন্ন উৎস এবং অবস্থান থেকে আসে। উদাহরণস্বরূপ, ঢাকা, কাঠমান্ডু এবং কলম্বোর মতো অনেক শহরে, শুধুমাত্র এক-তৃতীয়াংশ বায়ু দূষণ শহরের মধ্যে উৎপন্ন হয়। বায়ু দূষণের আন্তঃসীমান্ত প্রকৃতিকে স্বীকৃতি দিয়ে, চারটি দক্ষিণ এশিয়ার দেশ- বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল এবং পাকিস্তান প্রথমবারের মতো ইন্দো-গাঙ্গেয় সমভূমি এবং হিমালয়ের পাদদেশে বায়ুর গুণমান উন্নত করার জন্য কাঠমান্ডু রোডম্যাপ তৈরি করতে একমত হয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়ার পরিচালক সিসিলি ফ্রুম্যান জানান, দক্ষিণ এশীয় দেশগুলো একই এয়ারশেড-সাধারণ ভৌগোলিক এলাকা যেগুলো একই বায়ুর গুণমান বিরাজ করে, তারা যদি সমন্বিত পন্থা অবলম্বন করে তবেই বায়ু দূষণের উদ্বেগজনক মাত্রা কমাতে পারে। একসঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে এই দেশগুলো আরও দ্রুত ভালো ফলাফল পেতে পারে। বাংলাদেশ এবং আরও কয়েকটি দক্ষিণ এশিয়ার দেশ বায়ুর মান উন্নত করতে নীতি গ্রহণ করেছে। তবে, জেলা ও দেশ পর্যায়ে পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সমন্বিত আন্তঃসীমান্ত পদক্ষেপ নেয়াও জরুরি বলে মনে করেন তিনি।