রাষ্ট্রপতি নির্বাচন শেষ চিনে। গত দু’বারের মতো তৃতীয় বারও চিনের রাষ্ট্রপতি হিসেবে মসনদে বসলেন শি জিনপিং। ঊনসত্তর বছর বয়সি এই নেতার হাতে আজ চিনের পার্লামেন্টের তরফে ক্ষমতা অর্পণ করা হল আরও ৫ বছরের জন্য।
জিনপিং গত অক্টোবরেই সিসিপি অর্থাৎ চাইনিজ কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান হিসেবে মনোনীত হন। তারপর থেকেই চিনের একাধিক বিষয় যেমন জিরো কোভিড পলিসি নিয়ে প্রতিবাদে সামিল হতে দেখা গিয়েছে দেশের বিভিন্ন জায়গায়। যদিও তৃতীয়বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী অনুষ্ঠানে বিতর্কিত বিষয়গুলি সযত্নে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।
বেজিংয়ের ‘গ্রেট হল অফ পিপল’-এ রাজকীয় সম্বর্ধনায় বরণ করে নেওয়া হয় নব নির্বাচিত রাষ্ট্রপতিকে। ২,৯৫২ ভোট পেয়ে জয়ী হন শি। লাল রঙের চামড়ায় বাঁধানো চিনের সংবিধানের ওপর হাত রেখে তৃতীয়বারের জন্য শপথ গ্রহণ করেন তিনি। টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারে করা হয় এই শপথ অনুষ্ঠান।
শি জিনপিংয়ের তৃতীয় বারের ক্ষমতা লাভকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখছে সব মহলই। বিশেষত, কমিউনস্ট পার্টির একজন সাধারণ সদস্য থেকে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী রাষ্ট্রের তিন বার রাষ্ট্রপতি হওয়ার ঘটনা যথেষ্ট তাৎপর্পূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, তিনিই চিনের কমিউনিস্ট পার্টির ইতিহাসে দীর্ঘকালীন রাষ্ট্রপতি। মনে করে হচ্ছে সত্তরের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা এই রাষ্ট্রনেতা অনায়াসেই তাঁর সত্তরোর্ধ সময়েও দেশ শাসনের দায়িত্বভার বহন করে যেতে পারবেন যদি না তারমধ্যে কোনও কঠিন নেতৃত্বের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি তাঁকে না হতে হয়।
এদিন শি-র জীবনী লেখক আদ্রিয়ান গাইজেস বলেন, জিনপিং পৃথিবীর সবথেকে ক্ষমতাবান ব্যক্তি যিনি চিনকে ভবিষ্যতে সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চান।
প্রসঙ্গত, শি জিনপিং প্রেসিডেন্ট পদে দশ বছরের বেশি আসীন থাকা যাবে না, চিনের এই আইন সংশোধন করেন ক্ষমতার রাশ ধরে রাখার জন্য। ২০১৮ সালে এই নিয়ম রদ করেন তিনি। পাশাপাশি, শি-র সময়ই আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে। এছাড়াও চিনের জন্মহারও উল্লেখযোগ্য ভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে এই শি-র রাষ্ট্রপতিত্বের সময়ে।
তৃতীয়বার রাষ্ট্রপ্রধান হয়ে যথেষ্ট আশাবাদী শি জিনপিং। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় চিন অনেক বেশি স্বনির্ভর হয়ে উঠবে এমনটাই দাবি তাঁর।