প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আরও সাত হাজার শিক্ষক নিয়োগের কথা জানিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেছেন, এখন থেকে প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে শেষ হবে।
মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
প্রাথমিক শিক্ষার উদ্যোগ ও অর্জন নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব ফরিদ আহাম্মদ।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ প্রসঙ্গে জাকির হোসেন বলেন, আরও সাত হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে। এরইমধ্যে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে।
যেসব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম শ্রুতিকটু ও নেতিবাচক সেগুলোর নাম পরিবর্তন করে সুন্দর, রুচিশীল, শ্রুতিমধুর এবং স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তি, বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ স্থানীয় ইতিহাস, সংস্কৃতির সঙ্গে মিল রেখে রাখার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, গেল বছরের ২৩ জানুয়ারি এ সংক্রান্ত নীতিমালা জারি করা হয়েছে। আগামী ৬ মাসের মধ্যে পরিবর্তিত নাশের গেজেট করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
পরিমার্জিত শিক্ষাক্রম অনুযায়ী প্রাথমিক শিক্ষায় শুধু প্রথম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক প্রণীত হয়েছে উল্লেখ করে গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন, অন্যান্য শ্রেণির পাঠ্যবই পর্যায়ক্রমে বিদ্যালয়ে দেয়া হবে। এ কারণে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর ইতোমধ্যে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাক্রম ৪+ ও ৫+ কে বিবেচনা করে ২ বছর মেয়াদি প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা পাইলটিং হিসেবে ৩ হাজার ২১৪টি স্কুলে এ বছর কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
শিশুর বিকাশ ও খেলাভিত্তিক শিখনের ওপর ছয় দিনব্যাপি প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষকদের তৈরি করার লক্ষ্যে ৭০০ প্রশিক্ষক তৈরি করা হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী জাকির বলেন, এই প্রশিক্ষণটিও মাঠ পর্যায়ের সব শিক্ষক সরাসরি ও অনলাইন পদ্ধতিতে পাবেন। এনসিটিবি এরমধ্যে এ বিষয়ে প্রাক-প্রাথমিক বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ শিক্ষাক্রমের ওপর একটি বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ দেশব্যাপি পরিচালনা করবে।
চলতি বছরের মার্চের মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ের সব শিক্ষকের পাঠ্যক্রম বিতরণ সংক্রান্ত এবং বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে বলেও জানান তিনি।
প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের প্রোফাইল প্রণয়ন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এরইমধ্যে ৯ লাখ ৪৭ হাজার ৩২৭ শিক্ষার্থীর প্রোফাইল প্রণয়ন সম্পন্ন হয়েছে। ২০২৪ সালের এসব কাজ শেষ হবে। এতে করে একক পরিচিত (ইউআইডি)'র ভর্তি, পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ, হাজিরা তথ্য, মিড ডে মিল, উপবৃত্তি বিতরণ পরবর্তিতে নির্ভুল জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরিসহ সব কাজ সহায়ক হবে।
শিক্ষকদের বদলি প্রসঙ্গে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের আন্তঃজেলা, আন্তঃবিভাগ ও আন্তঃসিটি করপোরেশনের মধ্যে বদলির কাজ চলতি মাসে শুরু হচ্ছে। এ জন্য সফটওয়্যারের কিছু কাজ করতে হবে। আমরা তা শুরু করে দিচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে উপজেলার মধ্যে বদলি শুরু করেছি। প্রথম পর্যায়ে মাত্র ৭ দিনের মধ্যে ২৫ হাজার শিক্ষকের বদলি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপের কার্যক্রমের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে। সেই সঙ্গে পাইলটিং করে প্রায় ৪ লাখ শিক্ষককে দ্রুততম সময়ে বদলির জন্য গত বছরের ২২ ডিসেম্বর সংশোধিত অনলাইন বদলি নীতিমালা জারি করা হয়েছে।’