তুরস্ক ও সিরিয়ায় সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানার ছয় দিন পর রোববার ধ্বংসস্তূপ থেকে আরও জীবিত মানুষ বের করে এনেছে উদ্ধারকারীরা। দুর্যোগ কবলিত অঞ্চলজুড়ে শৃঙ্খলা বজায় রাখার চেষ্টা করছে তুরস্কের প্রশাসন এবং কিছু ভবন ধসে পড়ার ঘটনায় আইনি পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে তারা।
সোমবারের (৬ ফেব্রুয়ারি) ভূমিকম্প এবং এর পরবর্তী দফায় দফায় হওয়া আফটারশকে দুই দেশেই মৃতের সংখ্যা ৩৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে, নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ১৯৩৯ সালের পর এটি তুরস্কের সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প।
ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের কাছাকাছি তুরস্কের কাহরামানমারাস শহরের বাস্তুচ্যুত বাসিন্দারা বলেন, তারা লুট হওয়া থেকে রক্ষা পেতে নিজেদের ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হওয়া বাড়ির যতটা সম্ভব কাছাকাছি তাঁবু স্থাপন করেছেন।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান যখন জাতীয় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, এমন একটি সময়ে তিনি ভূমিকম্পে জরুরি সাড়া দেওয়া নিয়ে প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছেন। এটি তার দুই দশক ধরে ক্ষমতায় থাকাকালের সবচেয়ে কঠিন সময় বলে মনে করা হচ্ছে। সপ্তাহের মধ্যে তিনি পুনর্নির্মাণ কাজ শুরু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে মানুষ এক দশকের গৃহযুদ্ধে বেশ কয়েকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সরকার নিয়ন্ত্রিত এলাকার তুলনায় এই অঞ্চলে সামান্য সাহায্য পৌঁছেছে।
জাতিসংঘের জরুরি ত্রাণ সংস্থার প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্ত থেকে টুইট করে জানান, সেখানে জাতিসংঘের ত্রাণ সরবরাহের জন্য শুধু একটি সীমান্ত ক্রসিং খোলা রয়েছে। তিনি বলেন, আমরা এখনও পর্যন্ত সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের কাছে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছি। তারা ঠিকই নিজেদের অবহেলিত বোধ করছে। তিনি বিষয়টি দ্রুত সমাধানের আহ্বান জানান।
প্রথম ভূমিকম্পটি আঘাত হানার ছয় দিনেরও বেশি সময় পরে জরুরী উদ্ধারকর্মীরা এখনও কিছু মানুষকে বাড়িঘরের ধ্বংসাবশেষ আঁকড়ে থাকতে দেখেছেন, যেখানে ইতোমধ্যে কয়েক হাজার মানুষের সমাধি হয়েছে।
তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলের আনতাক্যা শহরে চীনা উদ্ধারকারী ও তুর্কি দমকলকর্মীদের একটি দল ৫৪ বছর বয়সী সিরিয়ান মালিক মিলান্ডিকে ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে ১৫৬ ঘণ্টা পর উদ্ধার করেছে। মৃতের সংখ্যা নিরন্তর বাড়ার মাঝে এমন দৃশ্য বিরল।