তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্পে এখনও পর্যন্ত ২৮ হাজার মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রপুঞ্জের ত্রাণ এবং পুনর্বাসন বিভাগের প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস অকুস্থলে দাঁড়িয়ে দাবি করলেন, তল্লাশি শেষে মৃতের সংখ্যা বেড়ে যেতে পারে দ্বিগুণ। ‘স্কাই নিউজ’কে মার্টিন জানিয়েছেন, এখনও ধ্বংসস্তূপের তলায় যত দেহ চাপা পড়ে আছে, তা উদ্ধার করা গেলে মৃত্যুর সংখ্যা ছুঁয়ে ফেলতে পারে আধ লক্ষ।
দক্ষিণ তুরস্কের কাহরামানমারাস শহরে এসে পৌঁছেছেন মার্টিন। যে কাহরামানমারাস প্রথম কম্পনের উৎসস্থল হিসাবে পরিচিতি পেয়েছে। প্রথম ভূমিকম্পের উৎসস্থলের খুব কাছে দাঁড়িয়ে মার্টিন বলেন, ‘‘এখনই সঠিক সংখ্যা বলে দেওয়া খুব কঠিন। আমাদের ধ্বংসস্তূপের তলায় পৌঁছতে হবে। আমি নিশ্চিত, তখন এই সংখ্যাটা দ্বিগুণ বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।’’ রাষ্ট্রপুঞ্জের আধিকারিক স্তরের হিসাব বলছে, তাঁদের আশঙ্কা দু’দেশ মিলিয়ে ভূমিকম্পের বলি হতে পারেন অন্তত ৫০ হাজার মানুষ।
ভয়াল ভূমিকম্পের দাপটে দুই দেশ মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ২৮ হাজার মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। তার মধ্যে তুরস্কে ২৪,৬১৭ জন এবং সিরিয়ায় ৩,৫৭৪জন। কমপক্ষে হাজার দশেক উদ্ধারকর্মী দিনরাত এক করে তল্লাশির কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ধ্বংসস্তূপের ভিতর থেকে প্রাণের সাড়া পেলেই ছুটছেন সদলবলে। যদিও বার বারই হতাশ হতে হচ্ছে তাঁদের।
রাষ্ট্রপুঞ্জ আগেই জানিয়েছিল, তুরস্ক, সিরিয়া মিলিয়ে কমপক্ষে ৮ লক্ষ ৭০ হাজার মানুষের পাতে গরম খাবার দেওয়ার আশু প্রয়োজনীয়তার কথা। সংবাদ সংস্থা এএফপি সূত্রে খবর, শুধুমাত্র সিরিয়াতেই ৫৩ লক্ষেরও বেশি মানুষ এই মুহূর্তে গৃহহীন অবস্থায় খোলা আকাশের তলায় রাত কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন। তুরস্কের কথা ধরলে সেই সংখ্যাটা আরও বৃদ্ধি পাবে।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র হিসাব বলছে, দুই দেশ মিলিয়ে আড়াই কোটিরও বেশি মানুষ ভূমিকম্পে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাঁদের ত্রাণ এবং পুনর্বাসনের জন্য এই মুহূর্তে প্রয়োজন অন্তত সাড়ে চার কোটি ডলারের। তুরস্কের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ৩২ হাজারেরও বেশি কর্মী ২৪ ঘণ্টা কাজ করছেন। আরও অন্তত দশ হাজার উদ্ধারকর্মী তাঁদের সহায়তা করছেন।