তুরস্ক-সিরিয়ায় গত দুই যুগের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাতে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার দুদিন পরেও শেষ হয়নি উদ্ধারকাজ। এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা বহু মানুষ। তাদের ধুলোমাখা রক্তাক্ত চেহারা আর বেঁচে ফেরার কাতর আকুতি বুকে কাঁপন তুলতে বাধ্য। এমন বেশ কয়েকটি ছবি ও ভিডিও ঝড় তুলেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার ফেসবুক পেজে বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) শেয়ার করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আটকে থাকা এক শিশুর শুধু মাথাটা বেরিয়ে রয়েছে। চোখ-মুখ ধুলোয় সাদা। এভাবে টানা ৪৫ ঘণ্টা আটকে ছিল সে।
উদ্ধারের আগে শিশুটিকে একটি বোতলের ছিপিতে করে একটু একটু করে পানি পান করাতে দেখা যায় এক উদ্ধারকর্মীকে। এসময় মুহাম্মদ নামে শিশুটিকে তিনি বলতে থাকেন, ‘মুহাম্মদ, পানি পান করো। এই তো ভালো, ভালো। তোমার কি ক্ষুধা পেয়েছে?
পরে শিশুটি উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। শুধু এটিই নয়, ভূমিকম্পের পর ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া লোকদের বেশ কয়েকটি ভিডিওতে শোনা গেছে জীবিত উদ্ধারের আকুতি।
একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে দুটি ছোট শিশু। বয়সে তুলনামূলক বড় মেয়েটি তার ভাইকে (অথবা বোন) রক্ষার চেষ্টা করছে। এক উদ্ধারকর্মী তাকে জিজ্ঞেস করেন, তুমি কি খেলতে পারো? উত্তরে মেয়েটি কাঁদতে কাঁদতে বলে, ‘না, না, আমাদের বের করো।’
গালফ নিউজের খবর অনুসারে, সিরীয় মেয়েটির বয়স মাত্র সাত বছর। ১৭ ঘণ্টা ধ্বংসস্তূপে আটকে থাকার পর তাদের উদ্ধার করা হয়েছে।
আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, লাল শার্ট পরা এক তরুণ ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ করছেন। সেখানে তিনি নিজের দুর্দশা এবং পাশে প্রতিবেশীরাও আটকে থাকার কথা বলছেন।
ভাইরাল আরেকটি ছবিতে দেখা যায়, মধ্যবয়স্ক এক লোক ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসা একটি হাত ধরে রেখেছেন। টিআরটি ওয়ার্ল্ডের তথ্যমতে, তুরস্কের ওই ব্যক্তি ভূমিকম্পে নিহত কিশোরী মেয়ের হাত আঁকড়ে ধরে রেখেছেন।
ভূমিকম্পের এমন ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যে কিছু অলৌকিক ঘটনাও দেখা গেছে। যেমন- ধ্বংসস্তূপের নিচে জন্ম হয়েছে একটি ফুটফুটে শিশুর। চাপা পড়ে তার মা মারা গেলেও অক্ষত রয়েছে শিশুটি। তাকে উদ্ধারের ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।