আগাম নির্বাচন এবং কারাবন্দী সাবেক প্রেসিডেন্ট পেদ্রো কাস্টিলোর মুক্তির দাবিতে কয়েক সপ্তাহ ধরে চলমান বিক্ষোভে নিহত বেড়ে ৪২ জনে দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থতিতে শনিবার গভীর রাতে রাজধানী লিমা এবং অন্যান্য তিনটি অঞ্চলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে পেরুর সরকার।
সরকারী গেজেটে প্রকাশিত একটি ডিক্রি অনুসারে এই জরুরি অবস্থা, ৩০ দিনের জন্য বলবৎ থাকবে। যা দেশটির সেনাবাহিনীকে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হস্তক্ষেপ করার অনুমতি দেয়।
গত ৭ ডিসেম্বর পার্লামেন্টে অভিশংসনের মাধ্যমে সাবেক প্রেসিডেন্ট পেদ্রো কাস্টিলোকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। মূলত পেদ্রো কাস্টিলোর বিরুদ্ধে আগেই অভিশংসনের প্রস্তাব এনেছিলেন দেশটির আইনপ্রণেতারা। কিন্তু নিজেকে রক্ষা করতে পেদ্রো পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়ার চেষ্টা চালান। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে তিনি ডিক্রি জারি করে দেশ শাসনের কথা বলেন।
সেসময় টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে পেদ্রো কাস্টিলো জানান, তিনি অস্থায়ীভাবে পার্লামেন্ট ভেঙে দেবেন, ডিক্রির মাধ্যমে শাসনভার পরিচালনা এবং দেশে নতুন নির্বাচন আয়োজন করবেন। তার এ ঘোষণাকে সুষ্পষ্ট অভ্যুত্থান হিসেবে উল্লেখ করেন তার নিজ দল ও বিরোধী দলের সদস্যরা। এরপর পার্লামেন্টে জরুরি অধিবেশন ডেকে তাকে অভিশংসিত করা হয়।
এরপরই পেদ্রোকে আটক করা হয় এবং এর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরে দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন ভাইস-প্রেসিডেন্ট দিনা বোলোয়ার্তে। ৬০ বছর বয়সী দিনা পেরুর ইতিহাসে প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট। ২০২৬ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করার কথা রয়েছে তার। যদিও বিক্ষোভ শুরুর পর আগাম নির্বাচনের কথা বলেছেন তিনি।
পেরুর প্রতিরক্ষামন্ত্রী আলবার্তো ওতারোলা সাংবাদিকদের বলেছেন, 'আমরা ভাঙচুর ও সহিংসতার কারণে সারা দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে সম্মত হয়েছি। এর জন্য সরকারের কাছ থেকে জোরদার সাড়া প্রয়োজন।'
এদিকে পেরুর প্রসিকিউটররা বলেছেন, বিদ্রোহ ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগে অভিযুক্ত কাস্টিলোর ১৮ মাসের প্রাক-বিচার আটকের দাবি করেছেন তারা।